জি নিউজ বিডি ডট নেট ঃ- বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা টানা ৭২ ঘণ্টার অবরোধ মঙ্গলবার সকাল ৬টায় শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা আরও ৫৯ ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। সম্প্রসারিত এ অবরোধ শেষ হবে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায়। সোমবার অজ্ঞাতস্থান থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো ভিডিও ফুটেজ বার্তায় অবরোধ বাড়ানোর এ ঘোষণা দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ। সর্বনাশা অবরোধ আবারও বাড়ানো হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা লাগাতার অবরোধে অন্তত ৩৪ জন মানুষ নিহত হওয়ার পরও শেষ না হয়ে সম্প্রসারিত করা হয়েছে এ কর্মসূচি। এদিকে লাগাতার অবরোধে দুঃসহ অবস্থায় নিপতিত সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। প্রতিদিনই যাত্রীবাহী যানবাহনে হামলা ও অগি্নসংযোগে বহু মানুষ হতাহত হচ্ছেন। রাজপথের সহিংসতায় খালি হচ্ছে বহু মায়ের বুক। সংসারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হতাহত হওয়ার ঘটনায় ইতিমধ্যে বহু পরিবার পথে বসেছে। রেলপথে নাশকতা চলছে। এ অবস্থায় অবরোধ আরও বাড়ানোর খবরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। গণমাধ্যমে পাঠানো ভিডিও বার্তায় বিএনপির মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গৃহপালিত বর্তমান নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর হুকুম তামিল করছেন। তাই এ কমিশনের ঘোষিত তফসিল স্থগিত না করার প্রতিবাদে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে অবরোধের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। রাজপথ, রেলপথ ও নৌপথ অবরোধের এ কর্মসূচি চলবে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত।তিনি অভিযোগ করে বলেন, গণআন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আওয়ামী লীগ নিজেরা পুড়িয়ে মানুষ মারছে। দেশের মানুষ এ সরকারের পতন চায়। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখনও আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দেবেন।’ ‘কষ্ট করে’ হলেও এ কর্মসূচি পালন করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বানও জানান তিনি। এদিকে নির্বাচনের তফসিল ২৫ নভেম্বর ঘোষণা করা হলে ১৮ দল ২৬ নভেম্বর থেকে প্রথমে ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের ডাক দেয়। পরে দুই দফা বাড়িয়ে ৭১ ঘণ্টা সম্প্রসারণ করা হয় ওই কর্মসূচি। এরপর চলতি দফা অবরোধ মঙ্গলবার সকাল ৬টায় শেষ করার কথা থাকলেও তা বাড়িয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত করা হলো। অবরোধের এ লাগাতার সম্প্রসারণে দেশ স্থবির হয়ে পড়েছে। সহিংসতায় নিরীহ মানুষের হতাহতের ঘটনা বৃদ্ধিতে সারাদেশে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। জাতিসংঘসহ বিদেশি উন্নয়ন সহযোগীরা ইতিমধ্যে বহুবার সহিংস এ পরিস্থিতির অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন। ব্যবসায়ী মহল দেশের ‘অর্থনীতি ধ্বংসের’ এ রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে মুক্তির উপায় বের করার জোর দাবি জানিয়ে আসছেন। এর অবসান দাবি করে ব্যবসায়ী নেতারা ইতিমধ্যে কয়েক দফা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। গতরাতেও দুই নেত্রীর সঙ্গে পৃথক বৈঠকে এ পরিস্থিতির অবসান চেয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। বিশিষ্টজনেরাও অবসান দাবি করছে এ সহিংস পরিস্থিতির। স্বাভাবিক জীবন-যাপনের দিন কবে ফিরে আসবে মানুষ যখন এ প্রশ্নের জবাব খুঁজছে তখনই আরও এক দফা বাড়ানো হলো অবরোধের। সমাজের সবস্তরের মানুষের মধ্যেই ‘বিভীষিকা’ সৃষ্টিকারী এ অবরোধের প্রতি ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এদেশের মানুষের । তাঃ-০৩ ডিসেম্বর, ২০১৩