অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকেঃরাখে আল্লাহ মারে কে? সৃষ্টিকর্তা যাকে বাঁচিয়ে রাখে কে তাকে মারতে পারে? কথাটি আশ্চর্য হলেও তা সত্যি হলো মাটির নিচে পুঁতে রাখা এক নবজাতক শিশুর ক্ষেত্রে।
জানা গেছে, বরিশালের আগৈলঝাড়ার রাংতা গ্রামে অজ্ঞাত এক মায়ের সদ্য ভুমিষ্ট হওয়া কন্যা শিশুকে কে বা কারা জব্বার মোল্লার বাড়ির পূর্বপাশে মোফাজ্জেল হোসেনের গম ক্ষেতের মধ্যে মাটির নিচে পুঁতে রাখে। ওই স্থান দিয়ে একই গ্রামের আনোয়ার হোসেন যাওয়ার সমায় নবজাতকের কান্নার শব্দ শুনে ক্ষেতের মধ্যে গিয়ে দেখতে পায় মাটির নিচে শিশুটির শরীর পুঁতে রাখা হলেও একটি হাত ও মুখের কিছু অংশ বাইরে রয়েছে। আনোয়ার হোসেন শিশুটিকে জীবিত দেখতে পেয়ে মাটি খুঁড়ে নবজাতক শিশুটিকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে গেলে তার স্ত্রী শিশুটিকে গরম পানি দিয়ে পরিস্কার করে তার বুকের দুধ পান করিয়ে শিশুটিকে সুস্থ করে। পরে আনোয়ার ওই শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। এ দৃশ্য দেখার জন্য শত শত উৎসুক জনতা হাসপাতালে ভিড় জমায়।
এব্যাপারে আগৈলঝাড়া থানার ওসি মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলার রাংতা গ্রামের আনোয়ার হোসেন পার্শ্ববর্তী গম ক্ষেতে গলা পর্যন্ত মাটি চাপা দেয়া অবস্থায় একটি সদ্যজাত শিশু দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে। সে তাৎক্ষণিক ওই মেয়ে নবজাতককে উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া হাসপাতালে নিয়ে আসে। চিকিৎসকরা বাচ্চাটিকে সুস্থ করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। পুলিশের মাধ্যমে ফুটফুটে ওই নবজাতক বাচ্চাটি সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতাধীন বরিশাল বিভাগীয় বেবী হোম গৈলায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এদিকে ফুটফুটে ওই বাচ্চাটিকে দেখার জন্য হাসপাতালে উৎসুক জনতার ভিড় লেগেই আছে। তাদের মধ্যে অনেকেই বাচ্চাটিকে পিতৃমাতৃ স্নেহে পালনের জন্য নিতে চাইলেও আইনী জটিলতার কারণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ইচ্ছা থাকা সত্বেও কারোর তত্বাবধানে দিতে পারেনি।
ঘটনা শুনে উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা খান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুল কালাম তালুকদার শিশুটিকে দেখতে যান। এব্যাপারে আগৈলঝাড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পযর্ন্ত শিশু কন্যাটির প্রকৃত পরিচয় পাওয়া যায়নি।