অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকেঃ ২৯ জানুয়ারি ১০ম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী দুএকটি মন্ত্রণালয় ব্যতীত সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের তালিকা চূড়ান্ত করেছেন। গৌরনদী-আগৈলঝাড়াসহ দক্ষিণাঞ্চলীয় বরিশাল বিভাগের অন্যতম জেলা বরিশাল রয়েছে মন্ত্রীহীন। বিভাগের অন্যতম জেলা বরিশাল থেকে কাউকে মন্ত্রী বা সমমর্যাদার কোন পদ দেয়া হয়নি। মন্ত্রীত্ব না পাওয়ার হতাশাগ্রস্থ গৌরনদী-আগৈলঝাড়াবাসী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দেশে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বরিশালের সিংহদ্বার খ্যাত গৌরনদী-আগৈলঝাড়া (বরিশাল-১) আসনে নির্বাচিত সদস্যরা বরাবরই মন্ত্রী পরিষদে ঠাঁই পেয়েছেন। এবারই প্রথম মন্ত্রী পরিষদে উপেক্ষিত রয়েছে বরিশাল। ফলে গোটা বিভাগের উন্নয়নসহ দলীয় কর্মকান্ড গতিশীল রাখা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পরেছেন প্রবীণ রাজনৈতিক বোদ্ধারা। শুধু ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নয় প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতারাও চান বরিশাল থেকে সংসদে অন্তত: একজনকে মন্ত্রী হিসেবে দেখতে। সরকারের উন্নয়ন ও সফলতার ধারা অক্ষুণœ রাখতে বরিশাল-১ আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বনদ্বিতায় নির্বাচিত আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহকে ১০ম জাতীয় সংসদে মন্ত্রীর সমমর্যাদায় চিফ হুইপ হিসেবে দেখতে চায় গৌরনদী-আগৈলঝাড়াসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের জনগণ।
জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকারের সময় জাতীয় সংসদে চিফ হুইপের দায়িত্ব পালন করেছেন আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। ওইসময় তিনি বরিশাল বিভাগের সর্বত্র ব্যাপক উন্নয়ন করেছিলেন। শুধুমাত্র তার নির্বাচনী এলাকা গৌরনদী-আগৈলঝাড়াতেই সাড়ে ৮শ কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করেছিলেন তিনি। দেশের যুদ্ধবিগ্রহ এলাকা খ্যাত পার্বত্য চট্টগ্রামে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন করেছিলেন। ওই চুক্তির মাধ্যমে তিনি দেশেই নয়, আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিও অর্জন করেন। আওয়ালীগের দুঃসময়ে অভিভাবক হয়ে তিনি ধরেছেন গোটা বরিশাল বিভাগের রাজনীতিক হাল। প্রবীণ রাজনৈতিক নেতারা জানান, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের মন্ত্রী পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় পানি, সেচ, বিদ্যুৎ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন হাসানাতের বাবা আগৈলঝাড়ার কৃতী সন্তান শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত। তার দূরদর্শিতায় সাতলা-বাগধা সেচ প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা কোটালীপাড়া-গোপালগঞ্জের জীবনযাত্রা পাল্টে গিয়ে আজ আধুনিকায়ন হয়েছে।
পরবর্তীতে আগৈলঝাড়ার আরেক কৃতী সন্তান প্রয়াত সুনীল গুপ্ত জিয়াউর রহমান ও এরশাদ সরকারের আমলে বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এরশাদের মন্ত্রী পরিষদে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় এনজিও বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন আগৈলঝাড়ার আরেক সন্তান প্রয়াত মাইকেল সুশীল অধিকারী। ২০০৬ সালে তত্বাবধায়ক সরকারের মন্ত্রীর মর্যাদায় সরকারের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন এলাকার কৃতী সন্তান মানিক লাল সমদ্দার ও ব্রিগেডিয়ার (অব:) এমএ মালেক। স্বাধীনতা পরবর্তী সরকারগুলোর ধারা অব্যাহত রেখে উন্নয়ন ও তৃণমুল পর্যায়ে দলকে শক্তিশালী করতে গৌরনদী-আগৈলঝাড়াসহ গোটা বরিশাল জেলার জনসাধারণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহকে বর্তমান সংসদে মন্ত্রীর মর্যাদায় চিফ হুইপ নিযুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।