অনলাইন ডেস্ক, জি নিউজঃ- প্রতি গ্রীষ্মে লাখ লাখ আরব ট্যুরিস্ট বাভারিয়ার রাজধানীতে এসে ভিড় করেন৷ তাদের অনেকেই আসেন উপসাগরীয় দেশগুলি থেকে৷ মিউনিখ শহরও এই ধনি আরব অতিথিদের স্বাগত জানানোর জন্য পুরোমাত্রায় প্রস্তুত৷ মিউনিখে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আরব ৩৬ বছর বয়সি আহমেদ পেশায় বিমানচালক৷ স্বদেশ সৌদি আরবে ডাক্তাররা তাঁর পায়ের অপারেশন করতে গিয়ে ভুলক্রমে একটি স্নায়ু কেটে ফেলেন৷ আরব মুলুকে জার্মানির ডাক্তারদের খুবই সুনাম৷ তাদের দিয়ে চিকিৎসা করানোর জন্য আহমেদ আসেন মিউনিখে৷ সে বছর দু’য়েক আগের কথা৷ আহমেদের পা এখন সেরে গেছে কিন্তু আহমেদকে পেয়ে বসেছে মিউনিখ৷ মাসের পর মাস হোটেলে ঘর নিয়ে দিব্যি কাটাচ্ছেন আহমেদ: ‘‘আমি যত জায়গায় গেছি, মিউনিখ তাদের মধ্যে সেরা৷ পরিষ্কার, নিরাপদ, মানুষজন ভদ্র, হাসিমুখ৷ আমার এখানে থাকতে দারুণ লাগে৷” পর্যটকরা আরব ট্যুরিস্টদের জন্য ব্রিটেনের পরেই জার্মানি হলো ইউরোপে অন্যতম গন্তব্য৷ তাদের অধিকাংশই আসেন সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে; তার পরেই আসছে সৌদি আরব ও কুয়েত৷ মিউনিখ এই ক্ষণিকের অতিথিদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়৷ একেকজন আরব মিউনিখে প্রতিদিন গড়ে খরচ করেন গড়ে ৫৫০ ইউরো! বিশেষ করে গ্রীষ্মের মাসগুলোতে তাদের নিজেদের দেশে যখন বেজায় গরম, তখন উপসাগর থেকে আসেন এই বিশেষ অতিথিরা দক্ষিণ জার্মানির ইসার নদীর তীরে সুদৃশ্য মহানগরীতে৷ এখানে তাঁদের তিনটে কাজ: ঐতিহাসিক ভবন ইত্যাদি দেখা; ডাক্তার-বদ্যি দেখানো; আর শপিং কর
দামটা কোনো ব্যাপারই নয়
আরব দেশের ওপরমহলের আমির-ওমরাহ পর্যায়ের লোকেদের বিত্তের অভাব নেই৷ কাজেই তারা খুব আদরের খদ্দের৷ মিউনিখে দিনে গড়ে ৫৫০ ইউরো খরচ করে থাকেন তারা – মাথাপিছু৷ জার্মানিতে তাদের কেনাকাটার অর্ধেকই হয় এই মিউনিখ শহরে৷ দামি জামাকাপড় ছাড়া কেনা হয় গয়নাগাঁটি, কাপ-প্লেট, এছাড়া ওষুধ-পত্র৷ কাজেই মিউনিখের নামি-দামি দোকানপাট আর হোটেলের মালিকরা গ্রীষ্মের এই সময়টাকে ‘‘আরব সপ্তাহ” নাম দিয়েছেন৷ মহিলাদের হাতব্যাগ হোক আর সুগন্ধ হোক অথবা হিল-তোলা জুতোই হোক: আরবরা কেনেন বিলাসসামগ্রী৷ দাম যত বেশি হয় ততই ভালো৷ দৃশ্যত আরব মহিলাদের পছন্দ ধনি ইউরোপীয় মহিলাদের পছন্দের সঙ্গে অনেকটা মেলে৷ বহু আরব ট্যুরিস্ট ইংরিজি বলতে পারেন৷ তা সত্ত্বেও মিউনিখের সমৃদ্ধ বিপণিগুলি ইতিমধ্যে দোভাষী রাখতে শুরু করেছে৷ তবে মনে রাখতে হবে, আরব মহিলাদের ক্ষেত্রে পুরুষ বিক্রেতা কোনোমতেই চলবে না৷
পাহাড় দেখা, বরফ দেখা
মিউনিখের ভৌগোলিক অবস্থানও আরব অতিথিদের পছন্দ৷ কাছেই অস্ট্রিয়া, সুইজারল্যান্ড কিংবা ইটালি৷ মিউনিখে বাসা বেঁধে বেশ ভালো করে ঘুরে নেওয়া যায়৷ সবচেয়ে বড় কথা: মিউনিখ থেকে আল্পস পর্বতমালা খুব দূরে নয়৷ মরুভূমির মানুষদের কাছে তুষারাবৃত পর্বতের আকর্ষণ কল্পনা করা যেতে পারে৷ জার্মানির সর্বোচ্চ পাহাড় হলো ‘সুগস্পিৎসে’৷ সেখানে বছরে শুধুমাত্র উপসাগরীয় দেশগুলি থেকে হাজার পঁচিশেক ট্যুরিস্ট আসেন৷ অনেকেই হয়ত জীবনে প্রথমবার বরফ দেখছেন৷ কিন্তু মিউনিখ? মিউনিখে বায়ারিশে হোফ কিংবা কেম্পিন্সকির মতো নামকরা হোটেল হালাল খাবার থেকে শুরু করে নামাজ পড়ার ঘরের ব্যবস্থা রেখেছে৷ এছাড়া কিচেন শুদ্ধু অ্যাপার্টমেন্টও ভাড়া পাওয়া যায়৷ কাজেই আরব দেশ থেকে আগত অতিথিরা এই অতি-জার্মান শহরে মাসের পর মাস কাটাবেন না কেন? খবর DW DE এর