জি নিউজঃ- পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলার প্রধান আসামি ঐশী রহমান অভিযোগ করেছে, পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করেছেন। তাই সেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেছে। আদালত তার আবেদন নথিভুক্ত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ঐশী ও তাদের গৃহকর্মী সুমির জামিন আবেদনও নাকচ করেছেন আদালত। আইনজীবীরা জানান, গতকাল বেলা পৌনে ১২টায় ঐশীকে আদালতের কাঠগড়ায় ওঠানোর পর তার আইনজীবী প্রকাশ রঞ্জন বিশ্বাস ও মাহবুবুর রহমান রানা তাকে স্বীকারোক্তি প্রত্যাহার করতে হবে বলে জানান। এতে তার ভাল হবে জেলে সে রাজি হয়। এরপর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। আদালতের শুনানিতে আইনজীবীরা দাবি করেন, ঐশী তার মা-বাবাকে হত্যা করেনি, অন্য কেউ হত্যা করেছে। তার কাছে থেকে জোর করে ভয় দেখিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। তাই তাকে জামিন দেয়া হোক। ওই সময় আইনজীবীরা ঐশী স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের ব্যাপারে আদালতের সঙ্গে কথা বলতে চান জানান। কিন্তু বিচারক ঐশীকে কথা বলতে সুযোগ না দিয়ে আইনজীবীদের লিখে আনা স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের আবেদনে স্বাক্ষর করাতে অনুমতি দেন। এরপর ঐশী কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ওই আবেদনে স্বাক্ষর করেন। স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের আবেদনে বলা হয়, “আমি (ঐশী রহমান) এই মামলার আসামি। বিগত ১৭ই আগস্ট পল্টন থানায় স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করলে আমাকে নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে ও আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে। বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে গত ১৮ই আগস্ট আমাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে ও ভয়ভীতি দেখায়। পুরুষ পুলিশ সদস্যরা আমাকে প্রহার করেছেন। একপর্যায়ে বলে যে, আমাদের কথামতো তুমি যদি আদালতে ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবের সামনে আমাদের শেখানো কথা না বলো, তাহলে তোমাকে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে মেরে ফেলবো অথবা ক্রসফায়ারে মেরে ফেলবো। তোমরা সমাজের কীট! আবর্জনা! আমি নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এবং মৃত্যুর ভয়ে তাদের শেখানো কথা আদালতে গিয়ে বলতে বাধ্য হই। তাই গত ২৪শে আগস্ট তারিখে আদালতে আমার প্রদত্ত জবানবন্দি সত্য নয়। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মাদ এরফান উল্লাহ এই আদেশ দেন। ঐশীর শুনানি শেষ হওয়ার পর সুমিকে ম্যাজিষ্ট্রেট আনোয়ার ছাদাতের আদালতে নেয়া হয়। সুমি কিশোর হওয়ায় শিশু আইন অনুযায়ী বিচারক তাকে ও তার আইনজীবী খাসকামরায় ডেকে নেন। খাসকামরায় ১০ মিনিটের শুনানি শেষে সুমির আইনজীবী সৈয়দ নাজমুল হুদা জানান, জামিন নামঞ্জুর করা হয়েছে। গত ১৬ই আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (রাজনৈতিক শাখা) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পর দিন ঐশী নিজে থানায় আত্মসমর্পণ করে। গত ২৪শে আগস্ট রিমান্ড শেষ ঐশী মহানগর হাকিম আনোয়ার সাদাতের খাসকামরায় ওই জবানবন্দি দেয়। সূত্র : অনলাইন, তাঃ-বৃহস্পতিবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩
ঐশীর অভিযোগ মৃত্যুভয়ে শেখানো কথা বলতে বাধ্য হই
Share This