গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ ঠেকাতে চলছে- সরকারি হরতাল-অবরোধ

rt 28জি নিউজ বিডি ডট নেট ঃ- আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বিএনপি নেতৃত্বাধী ন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ বা ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ ঠেকাতে সরকার সমর্থক সংগঠন মটর চালক লীগের ডাকে দু’দিনব্যাপী হরতাল চলছে। তবে হরতাল শুরুর আগেই অনেক জেলায় বন্ধ হয়ে গেছে ঢাকা অভিমুখে বাস ও লঞ্চ চলাচল। রেলপথে যাত্রীবেশে যাতে বিরোধী দলের ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ কর্মসূচিতে কেউ যোগ দিতে না পারে, সে জন্য ঢাকার বাইরের সব স্টেশন থেকে আসনবিহীন টিকিট বিক্রির ওপর কড়াকড়ি আরোপ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সিলেট, বগুড়া, রাজশাহী ও কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী সব ধরনের ট্রেনের শিডিউল বাতিল করা হয়েছে। ফলে আবারো দুর্ভোগে পড়েছে দেশের মানুষ। বিভিন্ন জেলার সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে রাজধানী। –চলছে গ্রেফতার অভিযান– বিরোধীদলের কর্মসূচি প্রতিহত করতে সরকারি দলের নেতা-কর্মী, সরকার-সমর্থক বাস ও লঞ্চের মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতারা ছাড়াও মাঠে নেমেছে পুলিশ। আজ (শনিবার) ভোর সাড়ে চারটা থেকে সকাল নয়টা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চল থেকে সদরঘাট টার্মিনালে আসা যাত্রীবাহী লঞ্চে তল্লাশি চালিয়ে ১০ যাত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া, নাশকতা পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে যৌথবাহিনীর বিশেষ অভিযানে ১৬২ জনকে আটক করা হয়েছে। –টাঙ্গাইলে ট্রেনে অভিযান চালিয়ে আটক ১২৫ – টাঙ্গাইল প্রতিনিধি টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা রেল ষ্টেশনে দুটি ট্রেনে অভিযান চালিয়ে ১২৫ জনকে আটক করেছে টাঙ্গাইল থানা পুলিশ। শনিবার সকাল ৮টার দিকে এ অভিযান চালানো হয়। ঘারিন্দা রেল ষ্টেশনে দায়িত্বে থাকা জিআরপি থানার পুলিশ কর্মকর্তা শাহাদুল ইসলাম জানান, সকালে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী পদ্মা ও নীল সাগর এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা রেল ষ্টেশনে পৌছায়। এসময় ট্রেনে ‘জঙ্গি’ রয়েছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে টাঙ্গাইল থানার পুলিশ ট্রেনটিতে অভিযান চালায়। এসময় তারা ট্রেনের সন্দেহজনক১২৫ যাত্রীকে আটক করে নিয়ে যায়। রাজধানীতে কর্মজীবী মানুষের দুভোগ
দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধের পর রাজধানীর অভ্যন্তরীণ রুটেও পরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। কোনো কোনো রুটে বাস চলাচল করলেও তা সংখ্যায় খুবই কম। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রাজধানীর কর্মজীবী মানুষ। শনিবার সকালে শাহবাগ, বাংলামটর, মগবাজার, মালিবাগ, কাকরাইল, গুলিস্তান, সদরঘাট, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, গাবতলী, মিরপুর, কুড়িল বিশ্বরোড, আবদুল্লাহপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় কর্মজীবী মানুষ কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে থাকলেও বাস না পেয়ে অনেকে রিকশায় বা পায়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে যাত্রা করন। দূরপাল্লার বাস বন্ধের নেপথ্যে
পরিবহন মালিকরা জানিয়েছেন, ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত দূরপাল্লার পথে বাস চালালে নাশকতার আশঙ্কা আছে এবং নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব নয়-এমন কথা বলে দিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও সরকার সমর্থক মালিক-শ্রমিক নেতারা। এ জন্য গতকাল থেকেই বাস বন্ধ হয়ে গেছে। নৌপথেও সরকার-সমর্থক নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্দেশে লঞ্চ, স্টিমার ও সি ট্রাক বন্ধ রয়েছে। অনেক স্থানে ফেরি চলাচলও বন্ধ এবং কিছু স্থানে সীমিত করা হয়েছে। রেলপথেও ঢাকামুখী যাত্রী ঠেকাতে টিকিট নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিরোধী দলের টানা অবরোধ কর্মসূচির সময় যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান দফায় দফায় বৈঠক করে বাস চালানোর জন্য বাস মালিকদের অনুরোধ জানিয়েছিলেন। অথচ গতকাল বিকেলে মিরপুরে সংসদ সদস্য আসলামুল হকের ভাই মফিজুল হকের বাসায় পরিবহন শ্রমিক-মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বাস না চালানোর নির্দেশ দেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। ওই বৈঠকের গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকেই অনেক জেলা থেকে ঢাকামুখী বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। জেলা-উপজেলায় ১৮-দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা যাতে বাস ভাড়া করতে না পারেন, সে জন্যও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কয়েকটি জেলায় মাইকিং করে বাস বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন সরকার-সমর্থক পরিবহন নেতারা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, বাস বন্ধ রাখার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নিরাপত্তার কথা ভেবে যদি কেউ বাস না চালায়, তাতে তাঁদের কিছু করার নেই। পেট্রল পাম্প ও সিএনজি স্টেশন বন্ধ
ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে পেট্রল পাম্প ও সিএনজি স্টেশনগুলো বন্ধ থাকার খবর পাওয়া গেছে। কয়েকজন পাম্প মালিক জানিয়েছেন, তাঁদের নানাভাবে যানবাহনে জ্বালানি সরবরাহ না করতে বলা হয়েছে। তবে পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল হক তা অস্বীকার করেন। তাঁর মতে, বিচ্ছিন্নভাবে কেউ কেউ জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করতে পারে। ঢাকামূখী জনস্রোত
মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কর্মসূচি ঘোষণার পরদিন থেকেই ঢাকায় আসতে শুরু করেছে দলীয় নেতাকর্মীরা। এরইমধ্যে কয়েক লাখের বেশি নেতাকর্মী ঢাকা ও তার আশপাশে অবস্থান নিয়েছে।বিরোধী জোটের ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ প্রতিহত করতে সরকারিভাবে অবরোধ- হরতাল ও গণগ্রেফতার অভিযান সত্ত্বেও কর্মসূচিতে অংশ নিতে বিভিন্ন অঞ্চল ঢাকা আসছে ১৮ দলের নেতাকর্মীরা। ১৮ দলীয় জোট সূত্রে জানা গেছে, ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচি ঠেকাতে সরকার ২৯ ডিসেম্বরের আগেই ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে এই শঙ্কা থেকে আগেই ঢাকা এসে অবস্থান নিতে শুরু করেছেন নেতাকর্মীরা। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা টানা ৮৩ ঘণ্টার অবরোধ শেষে মঙ্গলবার বিকালে ১৮ দলীয় নেতা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা অভিমুখে অভিযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এরপর সরকার তা প্রতিহতের ঘোষণা দিলে সব বাধা উপেক্ষা করে ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ সফল করার আহ্বান জানান বেগম খালেদা জিয়া।
শুক্রবার বিকেলে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় দলের নেতাকর্মী এবং দেশবাসীর প্রতি এ আহ্বান জানান তিনি। খবর রেডিও তেহরানএর তাঃ-২৮ ডিসেম্বর ২০১৩ #

Exit mobile version