বিশেষ প্রতিনিধি,জি নিউজ ঃ সন্দেহভাজন দুষ্কৃতকারীর হামলায় গুরুতর আহত হয়ে টানা তিন মাস লড়াই শেষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আরিফ রায়হান ওরফে দীপ মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি… রাজিউন)। গতকাল ভোর সাড়ে তিনটার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। গত ৯ই এপ্রিল দুর্বৃত্তের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তিনি গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে তিনি স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। গতকাল স্কয়ার হাসপাতাল থেকে তার লাশ বুয়েটে নেয়া হয়। দুপুরে বুয়েটের রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় বুয়েটের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, আরিফের পিতা, ভাইসহ আত্মীয়-স্বজন অংশ নেন। সেখানে তার জানাজার পর লাশ পিরোজপুরে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। আরিফ যন্ত্রকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও বুয়েট ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি নজরুল ইসলাম হলের ২২৪ নম্বর কক্ষে থাকতেন। দীপের ওপর হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা গত ১৭ই এপ্রিল বুয়েটের মেজবাহউদ্দীন নামের এক ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে। মেজবাহ স্থাপত্য বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। সে এম রশীদ হলের ৩০১ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র। মেজবাহ হেফাজতের সমর্থক বলে ডিবি কর্মকর্তারা দাবি করেছেন। এ ঘটনায় চকবাজার থানায় আরিফের ভাই বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এ মামলায় মেজবাহকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ডিবি কর্মকর্তারা দাবি করেন, জিজ্ঞাসাবাদে মেজবাহ বলেছেন, গত ৬ই এপ্রিল ঢাকায় হেফাজতের সমাবেশে আসা লোকজনকে খাবার সরবরাহ করায় একটি হলের মসজিদের ইমামকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছিল আরিফ ও তার বন্ধুরা। এ জন্যই তিনি আরিফের ওপর হামলা চালান। বুয়েটের ভিসি অধ্যাপক এসএম নজরুল ইসলাম বলেন, আরিফের মৃত্যুতে আমরা মর্মাহত। একজন শিক্ষার্থীকে আরেকজন শিক্ষার্থী এভাবে আঘাত করে মেরে ফেলতে পারে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা আরিফের উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ভারতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এবং সে অনুসারে কাজও এগিয়েছিল। ভিসি আরও জানান, বুয়েটের নিজস্ব তদন্তেও আরিফকে কুপিয়ে আঘাত করার জন্য মেজবাহকে দায়ী করা হয়। তদন্তের পর মেজবাহকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই মসজিদের ইমামকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।