দেশের রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসন করতে হলে খালেদার সাথেই সরকারকে সংলাপ করতে হবে:মির্জা ফখরুল
জি নিউজ অনলাইনঃ- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন দেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসন করতে ও সঙ্ঘাত এড়াতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথেই সরকারকে আলোচনা করে নির্বাচন দিতে হবে।
তিনি বলেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব বান কি মুনের বৈঠকে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন ও সংলাপ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিথ্যাচার করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন
।মির্জা ফখরুল বলেন কিন্তু মিথ্যাচার করে জনগণকে ধোঁকা দেয়ার চেষ্টা করে কোনো লাভ হবে না।
গতকাল এক প্রতিবাদ সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের প্রতি লক্ষ্য করে বলেন, আমাদের সব ধরনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। সঙ্কট উত্তরণের লক্ষ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের সাথে দ্রুত সংলাপে বসুন এবং সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিন।
গতকাল বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস কাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ৬৯তম জন্মবার্ষিকীতে তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে ঢাকাস্থ দাউদকান্দি ও মেঘনা উপজেলা জাতীয়তাবাদী ফোরাম আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম।
মির্জা ফখরুল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব বান কি মুনের বৈঠকে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন ও সংলাপ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিথ্যাচার করেছেন। কিন্তু মিথ্যাচার করে জনগণকে ধোঁকা দেয়ার চেষ্টা করে কোনো লাভ হবে না।
তিনি বলেন, ইতঃপূর্বে জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব বান কি মুন বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচনের জন্য চিঠি দিয়েছিলেন। ওই চিঠি প্রকাশ না করে তা ১৬ দিন গোপন রেখেছিল সরকার।
লতিফ সিদ্দিকীর অপসারণ প্রসঙ্গে সরকারের লুকোচুরির সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, জনরোষ থেকে বাঁচতে সরকারের প থেকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে তাকে অপসারণ করা হয়েছে। কেবিনেট সচিব স্বীকার করেছেন তিনি এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা পাননি। সরকার এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলছে না, লুকোচুরি করছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে নিয়ে কথা বলার কারণে এক যুবকের সাত বছর দণ্ড হয়েছে। আর আমাদের প্রিয় নবী হজরত
মুহাম্মদ সা: কে নিয়ে কটূক্তি করা হলো অথচ এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সরকার।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ড. মোশাররফ শুধু একজন রাজনীতিবিদই নন, তিনি একজন খ্যাতিমান ভূ-তত্ত্ববিদ। দেশের খনিজ সম্পদ আবিষ্কার এবং বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করতে তার অনেক অবদান রয়েছে।
কিন্তু বর্তমান সরকারের অনৈতিক এবং অন্যায় কর্মের যেন কেউ সমালোচনা করতে না পারে, আন্দোলন করতে না পারে, সে জন্যই খন্দকার মোশাররফের মতো একজন নেতাকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছে। শুধু তিনিই নন, সারা দেশে বিএনপি ও জোটের সাড়ে তিন লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার মামলা করা হয়েছে। ২০০৮ সালের তথাকথিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ সরকার জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নির্মূল করতে পরিকল্পিতভাবে বিরোধী দলের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে।
সম্প্রচার নীতিমালাকে ‘ভীতিমালা’ আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করতে এই নীতিমালা এবং বিচারকদের নিজেদের অধীনে রাখার জন্য বিচারপতি অভিশংসন বিল পাস করেছে সরকার। এসব আইন বাতিল এবং জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল দিগন্ত, ইসলামিক ও চ্যানেল ওয়ান এবং আমার দেশ পত্রিকা খুলে দেয়ার দাবি জানান তিনি।
দেশের সব প্রতিষ্ঠানে এক ব্যক্তির শাসন চলছে মন্তব্য করে বিএনপির এ নেতা বলেন, গণতন্ত্রের আবরণে ভিন্ন লেবাসে আবারো বাকশাল কায়েমের চূড়ান্ত পরিকল্পনা করছে আওয়ামী লীগ সরকার। দলের শীর্ষ নেতাকর্মীদের মুক্তির জন্য সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো: শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, যুব সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবীব উন নবী খান সোহেল, ছাত্রদল সভাপতি আব্দুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, ড. মোশাররফের ছেলে খন্দকার মারুফ হোসেন, প্রকৌশলী মো: মজিবুর রহমান, মিঞা মো: মিজানুর রহমান প্রমুখ।