জি নিউজ বিডি ডট নেট ডেস্কঃ- ভাইয়ের পরকীয়ার জের ধরে বোনকে গণধর্ষণের নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তানের একটি গ্রাম-পঞ্চায়েত। পাঞ্জাব প্রদেশের মুজাফফারগড় জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম রাদিওয়ালায় এ ঘটনা ঘটে গত সপ্তাহে। এ ঘটনায় জড়িত নয় জনের মধ্যে ছয় জনকে আটক করেছে পুলিশ। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলায় ভিন্ন সম্প্রদায়ের ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগে এক তরুণীকে গ্রাম-পঞ্চায়েতের নির্দেশে গণধর্ষণ করার পর পাকিস্তানে এ ঘটনা ঘটল। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে দৈনিক ডন জানিয়েছে, মজিদ নামের এক ব্যক্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে এই বলে নালিশ করে যে, তার স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়েছে তারই আত্মীয় আজমল। গত ২৪ জানুয়ারি এ অভিযোগের বিচার করার জন্য পঞ্চায়েতের বৈঠক বসে। সেখানে আজমলের ‘কৃতকর্মের’ প্রতিশোধ নিতে তার তালাকপ্রাপ্তা ৪০ বছর বয়সী বোন এফ. বিবি’কে ধরে আনার নির্দেশ দেয়। পঞ্চায়েত প্রধান নওয়াজ মাত্র ১০ মিনিটের শুনানি শেষে মজিদের পরিবারের পুরুষদের নির্দেশ দেয় এফ. বিবিকে গণধর্ষণ করার জন্য। এ অবস্থায় এফ. বিবিকে একটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে মজিদের এক আত্মীয় বসেছিল। সে আজমলের বোনকে বিবস্ত্র করে তাকে থাপ্পড় মারে। দৈনিক ডন জানিয়েছে, ঘটনা এখানেই শেষ হয়ে যায় এবং আজমল ও মজিদের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকায় গ্রামবাসীও এ ঘটনার প্রতিবাদ করেনি। তবে আজমল জানিয়েছে, তার বোনকে এর চেয়ে বেশি হেনস্থা করলে তার সহযোগীরা তাকে উদ্ধার করার জন্য প্রস্তুত ছিল। আকরাম নামক একজন গ্রামবাসী জানিয়েছেন, “ঘটনাটি শান্তিপূর্ণভাবে মিটে গেছে। দুই পরিবারের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে কেউ বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে যায়নি।” কিন্তু স্থানীয় গণমাধ্যমে ঘটনাটি প্রকাশ হওয়ার পর পুলিশ সেখানে হস্তক্ষেপ করে। এমনকি আত্মীয়তার সম্পর্কের কারণে এফ. বিবিরও এখন আর কোনো অভিযোগ নেই। তাকে ‘ধর্ষণ’ করা হয়নি বলে দাবি করে তিনি পালিয়ে থাকা ব্যক্তিদের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। অভিযুক্তদের একজন বলেন, এফ. বিবির কাপড় খুলে শুধু থাপ্পড় মারা হয়েছে। যে থাপ্পড় মেরেছে তার উদ্দেশ্য ধর্ষণ ছিল না বলে তিনি দাবি করেন। সম্প্রতি ভারতের বীরভূম জেলার লাভপুরের রাজারামপুরে মুসলিম সম্প্রদায়ের তরুণ আব্দুল খালেকের সঙ্গে আদিবাসী তরুণীর প্রেমের সম্পর্কের ব্যাপারে জানাজানি হলে গত সোমবার গ্রাম্য সালিশ বসে। সেখানে সালিশকারী ছিলেন গ্রামের মোড়ল বলাই মান্ডি। সালিশে ওই তরুণী ও তরুণকে একটি গাছের সঙ্গে পিঠমোড়া করে বেঁধে রাখা হয়। এরপর দু’জনকে ২৫ হাজার করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তরুণের আত্মীয়রা টাকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিলেও তরুণীর পরিবার তা করতে পারেননি। নিয়ে মঙ্গলবার আবার সালিশ বসে। এ সময় জরিমানার টাকা দিতে না পারায় ওই তরুণীকে ধর্ষণ করার নির্দেশ দেন পঞ্চায়েতের মোড়ল৷ রাতেই তরুণীকে বাড়ি থেকে তুলে মোড়লসহ ১৩ জন ধর্ষণ করে বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায়। তরুণীকে প্রথমে গ্রামীণ হাসপাতালে এবং পরে বীরভূম জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ (শুক্রবার) ওই তরুণী হাসপাতাল ছেড়ে বাড়ি ফিরে গেছে বলে জানা গেছে। সূত্র-রেডিও তেহরান তাঃ-৩১ জানুয়ারি২০১৪।