জি নিউজ বিডি. নেটঃ সোমবার থেকে দেশব্যাপী শুরু হচ্ছে এইচএসসি, আলিম ও এইচএসসি বিএমসহ সমমানের পরীক্ষা। ১০ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবারের পরীক্ষায় অংশ নিতে যাচ্ছে ১০ লাখ ১২ হাজার ৫৮১ পরীক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়ে পরীক্ষা চলাকালে হরতাল দেয়াসহ যে কোন ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মসূচী থেকে বিরত থাকতে সব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। প্রয়োজনে পরীক্ষার মাঝেও হরতাল বিএনপি নেতাদের এমন মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, মনে রাখবেন নতুন প্রজন্মের এই ১০ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী কোন দলের সন্তান নয়, এরা পুরো জাতির সন্তান। এদিকে সংবাদ সম্মেলন করে একই দাবি জানিয়েছে পরীক্ষার্থীরাও।
সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এবারের পরীক্ষার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা সচিব ডা. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাসলিমা বেগম, মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুন নূর প্রমুখ। মন্ত্রী জানান, এবারের পরীক্ষায় গত বছরের তুলনায় পরীক্ষার্থী বেড়েছে ৮৫ হাজার ৭৬৭ জন। এ বছর আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এইচএসসি, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিম এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ভোকেশনাল/বিএম (বিজনেজ ম্যানেজমেন্ট) ও ডিআইবিএসে মোট ১০ লাখ ১২ হাজার ৫৮১ জন পরীক্ষা দেবে। যার মধ্যে পাঁচ লাখ ৩৫ হাজার ৬৬২ জন ছাত্র এবং চার লাখ ৭৬ হাজার ৯১৯ ছাত্রী। গত বছর এইচএসসি ও সমমানের এ পরীক্ষায় ৯ লাখ ২৬ হাজার ৮১৪ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। মন্ত্রী জানান, এবার দুই হাজার ২৮৮ কেন্দ্রে সাত হাজার ৮০৩টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছে। গতবারের চেয়ে এবার ২৪৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ৯২টি পরীক্ষা কেন্দ্র বেড়েছে। এবার এইচএসসিতে আট লাখ ২৩ হাজার ২৪১, আলিমে ৮৮ হাজার ৭৭৯, এইচএসসি বিএম/ভোকেশনালে ৯৫ হাজার ৯৫৬ এবং ডিআইবিএসে চার হাজার ৬০৫ জন পরীক্ষা দেবে। এবার বিদেশের পাঁচটি কেন্দ্রে ১৬৫ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে। গত বছর একটি বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্ন হলেও এবার মোট সাতটি বিষয়ে পরীক্ষা হবে সৃজনশীল প্রশ্নে। এবার বাংলা প্রথম পত্র, রসায়ন প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র, পৌরনীতি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র, ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা সৃজনশীল পদ্ধতিতে হবে। পরীক্ষা পদ্ধতি আরও সংস্কার হওয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, পরীক্ষা গ্রহণের সময় কমিয়ে আনতে হবে। এবারও শ্রুতিলেখক নিয়ে বুদ্ধি ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীরা অন্য সময়ের মতো অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় পাবে। ১ এপ্রিল থেকে ২৮ মে পর্যন্ত লিখিত এবং ১ থেকে ১৪ জুন ব্যবহারিক পরীক্ষা হবে। শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে। এদিকে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় দফায় দফায় হরতালের পর এইচএসসি পরীক্ষার সময়েও বিরোধী দলের হরতালের হুমকির ঘটনায় ক’দিন ধরেই উদ্বেগের মধ্যে লাখ লাখ পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। সংবাদ সম্মেলনে তাই পরীক্ষার সময়ে হরতাল না দিতে সব দল ও সংগঠনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেছেন, হরতালের বিকল্প কিছু করেন যা লাখ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য ক্ষতির কারণ না হয়। প্রয়োজনে রাতে হরতাল করুন, অন্য কোন কর্মসূচী দিয়ে দাবি প্রকাশ করুন। মন্ত্রী বলেন, এসএসসি পরীক্ষার আগে হরতাল না দিতে আমরা আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা হরতাল দিয়েছে। আমরা বিস্মিত ও মর্মাহত। খুবই বিব্রতকর ও বিপদসঙ্কুল পরিবেশে আমাদের ওই সময় পরীক্ষা বন্ধ করতে হয়েছিল। পাবলিক পরীক্ষার মধ্যে হরতালের কর্মসূচী দেয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বিরোধী দলের উদ্দেশে নাহিদ বলেন, যদি হরতাল করতে হয় রাতে হরতাল করুন। রাত ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত হরতাল দেন। আমাদের অসুবিধা নেই। দায়িত্বজ্ঞানহীন কোন কাজ করবেন না। হরতাল না করে বিকল্প কর্মসূচী দিন। মিছিল করেন। জমায়েত করেন, বাধা দিচ্ছি না।
জি নিউজ বিডি. নেট /৩০-০৩-২০১৩