অনলাইন ডেস্ক :- স্বামী শশী থারুরের সঙ্গে সুনন্দা পুশকার। ছবি: রয়টার্সভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী থারুরের স্ত্রী সুনন্দা পুশকারের অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ হিসেবে বিষক্রিয়াকেই দায়ী করা হয়েছে। সুনন্দার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছেন চিকিত্সকেরা। এর ভিত্তিতেই এখন সুনন্দার মৃত্যু তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন সাবডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট।আজ মঙ্গলবার ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’র এক খবরে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।সাবডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট অলক শর্মা তাঁর প্রতিবেদনে বলেছেন, সুনন্দার মৃত্যু নিয়ে এখনো তাঁর পরিবার থেকে কোনো ধরনের অভিযোগ করা হয়নি।নয়াদিল্লিতে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসে (এআইআইএমএস) সুনন্দা পুশকারের ময়নাতদন্তকারী চিকিত্সক বলেন, সুনন্দার মৃত্যু ‘আকস্মিক ও অস্বাভাবিক’। আর এটা মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ সেবনের ফলে বিষক্রিয়া থেকেই হয়েছে।এআইআইএমএস সূত্র জানায়, সাবডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে সুনন্দার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তে দেখা গেছে, সুনন্দার দুই গালে আঘাতের কালশিরে দাগ রয়েছে। তবে তা তাঁর নিজের দুই হাতেরই দাগ হতে পারে। এ ছাড়া সুনন্দার পাকস্থলীতে কোনো খাবারের নমুনা পাওয়া যায়নি। তিনি কয়েক দিন না খেয়ে ছিলেন।পুলিশ সূত্র জানায়, হোটেল কক্ষে সুনন্দার মৃতদেহের পাশ থেকে দুই পাতা অবসাদ কাটানোর ওষুধ ‘অ্যালপ্রাজোলাম’ উদ্ধার করা হয়েছে।গত শুক্রবার রাজধানীর চানক্যপুরীর লীলা হোটেল থেকে ৫২ বছর বয়সী সুনন্দার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়।শুক্রবার দিল্লিতে কংগ্রেসের সভায় ব্যস্ত সময় কাটিয়ে সন্ধ্যায় কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে লীলা প্যালেস হোটেলে স্ত্রীর কাছে যান শশী থারুর। কিন্তু হোটেলে কক্ষটি ভেতর থেকে তালাবদ্ধ ছিল। এ সময় সহযোগিতা চাইলে হোটেলের কর্মীরা তালা খোলেন এবং সেখানে সুনন্দার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। ওই দিনই তাঁদের হোটেল ছাড়ার কথা ছিল। নিজের বাড়িতে রঙের কাজ শুরু হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার তাঁরা দুজনে লীলা হোটেলে ওঠেন। তবে তাঁরা ওই হোটেলের ৩৪২ ও ৩৪৫ নম্বর কক্ষে আলাদা আলাদা থাকতেন।২০১০ সালে দুবাইভিত্তিক ব্যবসায়ী সুনন্দার সঙ্গে বিয়ে হয় শশী থারুরের।দাম্পত্য কলহের খবর প্রকাশিত হওয়ায় সুনন্দা আত্মহত্যা করতে পারেন বলে পুলিশের ধারণা।এদিকে স্ত্রী সুনন্দা পুশকারের মৃত্যুরহস্যের দ্রুত সমাধান চেয়ে গত রোববার দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার সিন্ধের কাছে একটি চিঠিও লিখেছেন শশী থারুর।ওই চিঠিতে শশী থারুর বলেন, ‘সুনন্দার মৃত্যু নিয়ে গণমাধ্যমে যেসব গুজব প্রকাশিত হচ্ছে, তাতে আমি শঙ্কিত। আমি আপনার কাছে আবেদন করছি, এ ব্যাপারে আপনি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে দ্রুত তদন্ত করে সমাধানে আসতে বলুন।’কয়েক দিন ধরে পাকিস্তানি নারী সাংবাদিক মেহর তারার সঙ্গে টুইটারে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন সুনন্দা। মেহর পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের এজেন্ট এবং তাঁর স্বামীকে ফুসলানোর চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে মেহর বলেন, শশী থারুরের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। সুনন্দার মৃত্যুর পর এক টুইটে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। এর আগে সুনন্দাকে ইঙ্গিত করে এক টুইটার বার্তায় মেহর বলেন, ‘সোনালি চুলো ওই নারীর মস্তিষ্ক তাঁর ব্যাকরণজ্ঞান ও বানানের চেয়েও দুর্বল।’সুনন্দা দাবি করেছিলেন, তাঁর স্বামী শশীকে মেহরের পাঠানো একটি বার্তায় লেখা ছিল, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি, শশী থারুর। তোমার সঙ্গে যখন প্রেম করি, তখন নিজেকে সামলাতে পারি না। আমার ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়। মনে রেখো, মেহর সব সময়ই তোমার।’ সুনন্দার দাবি, গত বছরের এপ্রিল থেকে এই ‘আহাম্মক পাকিস্তানি সাংবাদিক শশীর পেছনে লেগে আছেন’।তবে সুনন্দার মৃত্যুর এক দিন পর শনিবার মুখ খুলেছেন পাকিস্তানি ওই নারী সাংবাদিক মেহর তারার। পাকিস্তানের একটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে মেহর তারার বলেছেন, ‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।মেহর তারার দাবি করেছেন, শশী থারুর ও সুনন্দা পুশকারের মধ্যে শুরু হওয়া টানাপোড়েনে তাঁর কোনো ভূমিকাই নেই। সূত্র : ইন্টারনেট তাঃ- ২২ জানুয়ারি ২০১৪।