জি নিউজ রিপোর্টঃ যুদ্ধাপরাধীর বিচার ঠেকাতে বড় ধরনের নাশকতার প্রস্তুতির সময় রাজধানীতে ডিবি পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হরকাত-উল-জিহাদের (হুজি) সদস্য ৪ পাকিস্তানী নাগরিক ও ১২ বাংলাদেশী নাগরিকসহ ১৬ জঙ্গী সদস্য। জামায়াতের নির্দেশ পালন, জঙ্গী তৎপরতা ও নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগের সময় গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আছেন জামায়াতের রোকন ডা. ফরিদ, ২ জন পাকিস্তানী মহিলা ও ২ জন বাংলাদেশী মহিলা। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১ কোটি ২৯ লাখ ভারতীয় জাল রুপী, ১ লাখ ৩ হাজার বাংলাদেশী টাকা, ৪ হাজার পাকিস্তানী রূপী, ৪শ’ মার্কিন ডলার, ৪টি পাকিস্তানী পাসপোর্ট, ৮টি তাজা হাতবোমা, বোম তৈরির সরঞ্জাম, মোবাইল ফোনসহ নাশকতা চালানো ও জঙ্গী তৎপরতা সংক্রান্ত বই, কাগজপত্র। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) রাজধানীর নিকুঞ্জ, কাঠালবাগান ও পুরনো ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারের পর তাদের ডিবি অফিসে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিকেশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়েছে, গ্রেফতারকৃতরা বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করছিল। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হত্যা ও স্পর্শকাতর স্থানে নাশকতা চালানোর প্রস্তুতি গ্রহণের সময়ে ধরা পড়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনের সদস্যরা। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য দিয়েছেন ডিএমপি ডিবির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভিআইপিদের ওপর হামলাসহ বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল হরকাত-উল জিহাদ। এ লক্ষ্যে হরকাত-উল জিহাদ আবারও সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। সাংগঠনিকভাবে শক্তি অর্জনের জন্য জাল টাকা ও রুপী তৈরি করছে। জাল টাকা ও রুপীর লাভের একটি অংশ জঙ্গী অর্থায়নে ব্যয় করা হবে। হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের হরকাত-উল জিহাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে দেশে বড় ধরনের নাশকতার চেষ্টা করছিল চক্রটি।
২৯ মার্চ দুপুর ২.৩০টা থেকে ৩০ মার্চ ভোররাত ২.০০টা পর্যন্ত ডিসি ডিবি মোল্লা নজরুল ইসলাম, বিপিএম, পিপিএম (বার)-এর সার্বিক নির্দেশনায় ও তত্ত্বাবধানে এডিসি ডিবি মশিউর রহমান পিপিএম, সিনিয়র এসি মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সিনিয়র এসি বাকীবিল্লাহ এবং এসি একেএম মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে একাধিক টিম ঢাকা মহানগরীর কাঁঠালবাগান এলাকা, নিকুঞ্জ-২ এবং বংশাল থানাধীন বায়তুস সামীর আবাসিক হোটেলে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে মোট ৮টি হাতবোমা, ১ কোটি ২৯ লাখ ভারতীয় জাল রুপী, ৪টি পাকিস্তানী পাসপোর্ট, ৩টি বাংলাদেশী পাসপোর্ট, ১৬টি মোবাইল সেট, ১২টি বিভিন্ন ধরনের বই, এক বস্তা বৈদ্যুতিক তার, তাতাল, ছকেট, সুইচ, নগদ ১ লাখ ৩০০০ হাজার টাকা, ৪০০০ পাকিস্তানী রুপী এবং ৪০০ মার্কিন ডলার উদ্ধার করা হয়। এ ৪ জন পাকিস্তানী নাগরিক, একজন বাংলাদেশী চোখের ডাক্তারসহ মোট ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়।