অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে :চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা নারীর পরিচয় মিলেছে। ঢাকার খিলক্ষেতের বাসায় বোনের সাথে ঝগড়া করে আত্মহত্যার পথ বেঁছে নেয় ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার আবুল কালামের মেয়ে আরজু বেগম (২০)।
জানাগেছে, ছোটবেলায় মা মারা যাওয়ার পরে ঢাকায় বোনের বাসায় থাকত আরজু। সোমবার বড় বোন আঁখি বেগম তাকে গার্মেন্টসে চাকুরী করার কথা বললে আরজু চাকুরী করতে অস্বীকার করায় দু’বোনের মাঝে ঝগড়ার এক পর্যায় বড় বোন আঁখি তাকে মারধর করে। মনের দুঃখে ও ক্ষোভে আরজু আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। সকাল ১০ টায় বাসা থেকে বের হয়ে ঢাকার সদরঘাটে এসে হুলারহাটগামী লঞ্চে ওঠে। রাত ৯ টার দিকে লঞ্চ চাঁদপুর ঘাটের কাছাকাছি পৌঁছুলে আরজু আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে নদীতে ঝাঁপ দেয়। এসময় পিছন দিক থেকে আসা ঢাকা-পয়সারহাটগামী পুরবী-২ লঞ্চের স্টাফ ও যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বহু কষ্টে তাকে নদী থেকে উদ্ধার করে চাঁদপুর নিয়ে আসে। উদ্ধারকৃত নারীর শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। এসময় লঞ্চের সুকানী মো. কালাম চাঁদপুর থানায় গেলে পুলিশ ঝামেলা এড়াতে আরজুকে থানা হেফাজতে রাখতে অস্বীকৃতি জানালে লঞ্চের স্টাফরা বাধ্য হয়ে তাদের গন্তব্য বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার পয়সারহাট বন্দরে নিয়ে আসে। পরদিন মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় ডাক্তার দ্বারা আরজুকে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করে। দুপুর পর্যন্ত আরজুর জ্ঞান ফিরে না আসায় তাকে লঞ্চের সুপারভাইজার সজল আহমেদ প্রথমে গৈলা হাসপাতালে ও পরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগে মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি করে। মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসারত অবস্থায় আরজুর জ্ঞান ফিরে এলে সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের মুখে বেড়িয়ে আসে আরজুর পরিচয় ও আত্মহত্যা প্রচেষ্টার ঘটনা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আরজু বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে এবং তার পরিবারের লোকজন আরজুকে ফিরিয়ে নেবার জন্য বরিশালে এসেছেন বলে জানা গেছে।