জি নিউজ বিডি ডট নেট ঃ- লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও নীলফামারী জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলি ও সংঘর্ষে আওয়ামী লীগের ৪ নেতাকর্মী ও জামায়াত-শিবিবিরের ১০ নেতা-কর্মী নিহত হয়েছে। এসব ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। এছাড়া, পাবনায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাড়িতে আগুন, নারায়ণগঞ্জ শহরে দু’টি পুলিশ ফাঁড়িতে পেট্রোল বোমা হামলা হয়েছে। নোয়াখালীতে পুলিশের গুলি, ৭ জামায়াত– শিবিরকর্মী নিহত , জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরের প্রতিবাদে আগামীকালের হরতালের সমর্থনে আজ বিকেল পৌনে ৪টার দিকে কোম্পানীগঞ্জে জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করে। পুলিশ মিছিলে বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ পাল্টা টিয়ারশেল, রাবার বুলেট এবং শতাধিক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে জামায়াত-শিবিরের ৭ নেতা-কর্মী নিহত হয়। নিহতরা হলো, এরা হচ্ছেন-সাইফুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার, মতিউর রহমান, নূর হোসেন রাসেল, রায়হান, মিশু ও জিয়াউল হক জিয়া। এদের মধ্যে ৩ জনের লাশ কোম্পানীগঞ্জ থানায় আছে বলে ওসি স্বীকার করেন। বাকি ৪টি লাশ নিহতের স্বজনদের হেফাজতে রয়েছে। নোয়াখালী শহর শাখা শিবিরের সভাপতি নেয়ামত উল্লাহ শাকের দাবি করেছেন, পুলিশের গুলিতে কমপক্ষে ২৫ জন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। গুলিবিদ্ধদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে তিনি জানান। সংঘর্ষের সময় জামায়াত-শিবির কর্মীরা উপজেলা ভূমি অফিস, একটি ট্রাক ও একটি স্টলে অগ্নিসংযোগ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। নীলফামারীতে সংঘর্ষে নিহত ৬, নীলফামারীতে আওয়ামী লীগ, পুলিশ ও বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের সংঘর্ষে ৬ জন নিহত ও প্রায় অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহতরা হলেন, টুপামারি ইউনিয়নের কৃষক লীগের সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরী, যুবলীগ নেতা ফরহাদ আলম, যুবলীগ কর্মী মুরাদ, আওয়ামী লীগ কর্মী লেবু মিয়া, শিবির কর্মী খয়রাত, জামায়াতকর্মী আবু বক্কর সিদ্দিক। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় মানিক নামের এক বিএনপি কর্মীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর আজ সকালে নীলফামারী জেলা সদরের পলাশবাড়ী লক্ষ্মীচাপ রামগঞ্জ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পথসভা করতে যান। বিকেলে সমাবেশ শেষে ফেরার পথে তার গাড়ি বহরে থাকা সফর সঙ্গীরা গাড়ি থামিয়ে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে। এ সময় এলাকাবাসী সংঘবদ্ধ তাদের প্রতিরোধ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। পরে সরকারি দলের সাথে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব যোগ দেয়। পুলিশ বেশ কয়েকটি কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে সংসদ সদস্য নূরকে সেখান থেকে উদ্ধার করে। এমপি নূরের গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তিনি অক্ষত আছেন। পরে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে আসাদুজ্জামান নূর পুলিশ প্রহরায় শহরে প্রবেশ করেন। সংঘর্ষে অন্তত ৪০টি মোটর সাইকেল ভাঙচুরসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। নীলফামারী সদর সার্কেল এএসপি শফিউল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, বিকাল ৪টার দিকে জিপ, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল নিয়ে আসাদুজ্জামান ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা রামগঞ্জ বাজারে যান। দুপক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। তারা অন্তত ৫০টি মোটরসাইকেল, ছয়টি জিপ ও তিনটি মাইক্রোবাস জ্বালিয়ে দেয়। লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতা নিহত– লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার নায়েবে আমীর ডা. মো. ফয়েজ আহমেদ (৫৮) র্যাবের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ঘোষণা দিয়েছে জেলা জামায়াতে ইসলামী। জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি এআর হাফিজ উল্যা শনিবার দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ হরতালসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা দেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকায় শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে র্যাবের ২০-২৫ জন সদস্য ডা. ফয়েজ আহমদের কাউছার মঞ্জিলে প্রবেশ করে। এসময় তারা ডা. ফয়েজকে খুঁজতে থাকলে তিনি দৌড়ে বাসার ছাদে গিয়ে আশ্রয় নেন। র্যাব তার পিছু পিছু ছাদে গিয়ে সেখানেই তার পায়ে গুলি করে। এক পর্যায়ে তিনি ছাদ থেকে পড়ে মারা যায়। নিহতের স্ত্রী মারজিয়া ফয়েজ জানান, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে র্যাবের একটি দল গেট ভেঙে বাসায় ঢুকে বিভিন্ন রুম তল্লাশি চালায় তারা। এক পর্যায়ে ডা: ফয়েজকে তাদের সাথে বাসার ছাদে যেতে বলেন। এ সময় তিনি ছাদে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, আমি অসুস্থ। তাই সিঁড়ি বেয়ে ছাদে যেতে কষ্ট হবে। আমাকে নিতে হলে থানায় নিয়ে চলেন। এ সময় তারা ফয়েজকে আটক করে জোরপূর্বক বাসার ছাদে নিয়ে প্রথমে গুলি করে। পরে সেখান থেকে নিচে ফেলে দেয়। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে গভীর রাতে হাসপাতাল এলাকায় তার লাশ পড়ে আছে বলে আমরা খবর পাই। লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত ডা. জয়নাল আবেদিন সাংবাদিকদের জানান, রাত ১টা ৪০ মিনিটের দিকে একটি গাড়ি এসে মৃতদেহটি হাসপাতালে রেখে যায়। নিহতের মাথায় ও ডান পায়ের উরুতে আঘাতের চিহ্ন ছিল। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের পর বাদ জোহর শহরের উত্তর তেমুহনী লিলাহ জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে নামাজে জানাজা শেষে ওই মসজিদের পাশে তাকে দাফন করা হয়। খবর রেডিও তেহরান এর তাঃ-১৫ ডিসেম্বর ২০১৩ #
রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ- ১০ জামায়াতকর্মী- ৪ আওয়ামী লীগকর্মী নিহত
Share This