নিজস্ব প্রতিবেদক, জি নিউজ : গতকাল সকাল থেকেই পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা ছিল মারমুখী। এ দিকে সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা হেফাজতে ইসলামের সমর্থকদের বাধা দেয়। সকাল ১০টার দিকে যাত্রাবাড়ী থেকে একটি মিছিল নিয়ে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা মতিঝিলে আসার চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ বঙ্গভবনের পাশে মিছিলটিকে বাধা দেয়। মিছিলকারীরা বাধা উপেক্ষা করে মতিঝিলে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের ওপর গুলিবর্ষণ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। সেখানে অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত ও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা হেফাজতে ইসলামের লোকজনকে মতিঝিলে আসতে বাধা দেয়। এ দিকে এই সংঘর্ষের সময় পুরো গুলিস্তান, বায়তুল মোকাররম, ও জিপিও এলাকায় যানবাহন, দোকানপাট, অফিসসহ বিভিন্ন স্থানে আগুন লাগানো হয়। অন্তত অর্ধশত যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
এ দিকে পল্টন হাউজ বিল্ডিংয়ের গলি থেকে হেফাজতে ইসলামের একটি মিছিল বের হয়, মিছিলটি পল্টন মোড়ে গেলে পুলিশ কোনো কথা ছাড়াই গুলিবর্ষণ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। হেফাজতে ইসলামের লোকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। সেখানে অন্তত ৩০ জন গুলিবিদ্ধ ও আহত হন। পরে আহতদের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়া হয় । এভাবেই থেমে থেমে চলতে থাকে সংষর্ঘ। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা বৃষ্টির মতো গুলি বর্ষণ শুরু করলে পল্টন মোড় থেকে একটু পিছু হটে হেফাজত কর্মীরা। টানা ৩টা পর্যন্ত এভাবে গুলি বর্ষণ চালায় পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা। এ সময় ৪ জন নিহত হন
অপর দিকে হেফাজতের কর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ অব্যাহত রাখে। বেলা ৩টার দিকে পিছু হটে যায় পুলিশ। তারা পল্টন মোড় পার হয়ে রাস্তার পশ্চিম পাশে অবস্থান নেয়। এ সময় পুলিশ তোপখানা রোডের অলিগলিতে ঢুকে গুলি বর্ষণ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ শুরু করে। একই সাথে পুলিশ বিজয়নগর রোডেও গুলি চালায়। এ সময় শত শত লোক পুলিশ ও র্যাবের গুলিতে আহত হন। আহতদের অনেককে রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাবে তা-ও সম্ভব হয়নি হেফাজত কর্মীদের। পুলিশের গুলি থেকে রেহাই পাননি সাংবাদিক এবং সাধারণ পথচারীরাও। এ দিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আসতে শুরু করে হেফাজতে ইসলামের মিছিল। মিছিলগুলো ছিল মতিঝিলমুখী, এই মিছিলগুলো যখন মতিঝিলের সমাবেশের সাথে এসে মিশে যাচ্ছিল, ঠিক তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়।এ সময় পল্টনে গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় অনেক হেফাজত কর্মীকে। পুলিশ একপর্যায়ে দৈনিক বাংলা এলাকাতেও গুলিবর্ষণ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ শুরু করে।