ডেস্ক রিপোটঃ রাজধানী ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে কিছু অসাধু ব্যক্তি নিজেদের’কে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে, ড্রাগ লাইসেন্স ব্যতীত ভেজাল/নকল ঔষধের কোম্পানীর/দোকান পরিচালনা এবং রেজিস্ট্রেশন ও লেবেল বিহীন ভেজাল/নকল ক্ষতিকারক ঔষধ বিক্রয় করে নিরীহ সাধারণ মানুষ’কে সু-চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে অপরাধমুলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। এছাড়াও দেশের অপামার জনসাধারণের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে শহর থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো’কে সক্রিয় করে তুললেও ভেজাল ঔষধ সেবন করে অনেক জটিল রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অনেক রোগী বাড়ি-ঘর বিক্রি করে সুস্থতার নামে অসুস্থতায় ভুগতে হচ্ছে। ভেজাল ঔষধসহ ভুল চিকিৎসার জন্য জনস্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে। বর্তমানে তারা নিজেরা ঔষধ তৈরী করে বাজারের প্রসিদ্ধ ব্র্যান্ডের ঔষধের মোড়ক ব্যবহার করে তা বিক্রি করে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারনা করে আসছে। এই ধরণের প্রতারক চক্রের হাত থেকে জনগণ’কে রক্ষা করার জন্য র্যাব-২ এর গোয়েন্দা টিম ছায়া তদন্তে নামে।
এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য ০৩/০৮/১৫ তারিখ আনুমানিক ১২.০০ ঘটিকায় র্যাব-২ এর উপ-পরিচালক জনাব ড. মোঃ দিদারুল আলম এর নেতৃতে, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক এটিএম গোলাম কিবরিয়া এর উপস্থিতিতে এবংর্যাবের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জনাব মোঃ হেলাল উদ্দিনের পরিচালনায় রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় রুট ফার্মাসিউটিক্যালস এ মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাকালে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটি কোয়ালিফাইড পার্সনদের অনুপস্থিতিতে শুধুমাত্র মেশিন অপারেটর দিয়ে ঔষধ প্রস্তুত করছে।
পরিদর্শনকালে আরো দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি বিক্রয় নিষিদ্ধ ডায়েটারী সাপ্লিমেন্ট ও যৌন উত্তেজক Soft Gel Copsule প্যাকিং করছে এবং তারা ইউ.কে ও ইউএসএ সহ বিভিন্ন স্বনামধন্য ও ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে জনসাধারণের সাথে প্রতারণা করছে। এ সকল ঔষধের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং ম্যানেজার সদ্দুত্তর দিতে পারে নাই। জিজ্ঞাসাবাদে ভ্রাম্যমান আদালতের কাছে তিনি এহেন কর্মকান্ড অপরাধজনক বিধায়, দোষ স্বীকার করেন। ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জনাব মোঃ হেলাল উদ্দিন উক্ত অপরাধের জন্য রোড ফার্মাসিটিক্যালের ম্যার্কেটিং মোঃ এনামুল হক ও বাবুল হোসেন’কে ১৯৪০ সালের ড্রাগ এ্যাক্ট এর ১৮ এবং ২৭ ধারা মোতাবেক ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে প্রত্যেককে ২ মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন। ঔষধ প্রতিষ্ঠানটি সীলগালা পূর্বক ৩২ হাজার যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট জব্দ করা হয়।
ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা কালে ইউনিয়ন কেমিক্যাল কোম্পানী মালিক মোঃ জাহেদুল ইসলাম বাবুল জানান যে, বেশ কয়েক বছর আগে প্রতিষ্ঠিত অত্র প্রতিষ্ঠানের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কোন লাইসেন্স নেই। ভ্রাম্যমান আদালতের আরো দৃষ্টিগোচর হয় যে, উক্ত প্রতিষ্ঠানটি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন ব্যতিরেকেই মিথ্যা বিজ্ঞাপন , কফ ট্যাবলেট তৈরী, অনুমোদন ছাড়া বিএসটিআইএর সীল ব্যবহার করে ট্যাবলেট বাজারজাত করছিল। যার কোন ঔষধ প্রশাসনের রেজিষ্ট্রেশন নেই এবং আকর্ষনীয় মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে সাধারণ মানুষ’কে প্রতারিত করে আসছিল। জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক জনাব মোঃ জাহিদুল ইসলাম বাবুল কোন সদ্দুত্তর দিতে পারেন নাই। আদালতের কাছে তিনি এহেন কর্মকান্ড অপরাধ জনক বিধায় দোষ স্বীকার করেন। ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোঃ হেলাল উদ্দিন উক্ত অপরাধের জন্য ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর ৪৩ ধারা মোতাবেক প্রতিষ্ঠানের মালিক’কে ০৬ মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন। উক্ত প্রতিষ্ঠান হতে ৬৩ হাজার পিস কফ ট্যাবলেট জব্দ এবং সীলগালা করা হয়। র্যাব-২ এই ধরণের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবে।