জি নিউজ ঃ- রাজধানীর প্রায় ৯০ শতাংশ ভবন ত্রæটিযুক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, স্পেকট্রাম থেকে সাভারের রানা প্লাজার মতো ভবন ধসের সব ঘটনা শুধু নির্মাণ ত্রæটির (ফাউন্ডেশন ফেইলিয়র) কারণেই ঘটেছে। রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে শনিবার ‘ভবন ধস ও বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেন। বিশেষজ্ঞারা বলেন, এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণের কার্যকরিতা ও বাধ্যবাধকতা সৃষ্টির জন্য প্রয়োজন ‘বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি’। ভবন নির্মাণে আইন প্রয়োগে কার্যকর পদ¶েপ নিতে রাজউককে তিনভাবে ভাগ করে এর যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। বাড়াতে হবে জনবল কাঠামো।
প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল হুদা।
আলোচকরা বলেন, সাভারের রানা প্লাজা ধস ইতিহাসের ভয়াবহ ঘটনা হলেও এটিই প্রথম নয়। এর আগে ২০০৫ সালে স্পেকট্রাম, ১৯৯৬ সালে কলাবাগানের সাত তলা, ২০০৬ সালের তেজগাঁওয়ের ফিনিক্স ভবন ধসে পড়ার ঘটনা রয়েছে। কিন্তু এতো কিছুর পরেও ভবন নির্মাণের ¶েত্রে কোনো নিয়ম মানা হয়নি। শুধু আইনের প্রয়োগ না থাকায় এমনটি বার বার ঘটছে। যেন দেখার কেউ নেই।
অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, সরকার হচ্ছে জগদ্দল পাথরের মতো। ভারি, নড়ে না। তবে এটি গোলাকার। ধাক্কা দিলে খানিকটা গড়িয়ে চলে, আবার থেমে যায়। তাই জাগ্রত, নিদ্রাহীন সুশীল সমাজ ছাড়া জগদ্দল পাথর সরকারকে নড়ানো যাবে না।
জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, রাজউককে তিনভাবে ভাগ করে ব্যবস্থা নিতে হবে। একভাগ ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) বাস্তবায়ন করবে। দ্বিতীয় ভাগের কাজ হবে ভবন নির্মাণ রেগুলেট করা এবং শেষ ভাগটি হবে ডেভেলপ করা। এছাড়া রাজধানীতে ভবন নির্মাণের বিষয়ে রাজউক সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। পাশপাশি বাড়াতে হবে জনবল।
রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল হুদা বলেন, ভবনের মালিকরা ১০ কোটি/ ২০ কোটি টাকা দিয়ে ভবন করতে পারেন, কিন্তু সেই ভবন সেফটি ও সাউন্ড করার জন্য ৫ লাখ টাকা খরচ করতে চান না। তারা প্রকৌশলীর কাছে যাবেন না, যাবেন রাজমিস্ত্রীর কাছে।
আইনের শাসন বাস্তবায়ন না হওয়ায় রানা প্লাজার মতো ভবন ধসের ঘটনা ঘটছে। ভবন নির্মাণে আইন মানা হচ্ছে না। আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া অকার্যকর হয়ে পড়েছে। আর এ কারণেই আমাদের সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আর যে সকল ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে সনাক্ত করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে সরকারকে কালক্ষেপন না করে ব্যবস্থা নিতে হবে এখনই।
জহিরুল ইসলাম রেমন/জি নিউজ