জি নিউজ বিডি ডট নেট ঃ- নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় দিনাজপুরের কর্ণাই গ্রাম ও বীরগঞ্জ উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি, দোকানপাটে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে পরিকল্পিত বলে অভিযোগ করেছে বিরোধী ১৮ দলীয় জোট। আজ (বুধবার) সকালে দিনাজপুর জেলা বিএনপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ১৮ দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়,এ ঘটনার সঙ্গে তাদের কেউ জড়িত নয়। আওয়ামী লীগ উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে। প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচারের দাবি জানিয়েছে বিরোধী দল। এ বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য ১৮ দলের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়েছে। এদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে.জে.(অব) মাহবুবুর রহমান সারদেশে নির্বাচন-উত্তর সহিংসতা তদন্ত করে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছেন।বুধবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “যারা সহিংসতা ঘটাচ্ছে তাদের কোনো পরিচয় থাকতে পারে না। তারা দুর্বৃত্ত। তারা সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দিতে চায়। তাই আসুন আমরা সকলে সহিংসতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদের রুখে দেই। তবে, যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সংখ্যালঘুদের জিম্মি করে রাজনীতি না করার জন্য বিএনপি-জামায়াতকে পরামর্শ দিয়েছেন,বুধবার সকালে দলীয় উপকমিটির নেতাদের এক বৈঠকে তিনি সতর্ক করে দেন, যারা সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ও নির্মমতা চালাচ্ছেন তাদেরকে মনে রাখতে হবে পাশের দেশেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন আছে। এদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালিয়ে প্রতিবেশী দেশের সংখ্যালঘু মুসলমানদের জীবন বিপন্ন করবেন না। তিনি দলের নবনির্বাচিত এমপিদের নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহবান জানান। এদিকে, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত মন্তব্য করেছেন যৌথ, সামরিক বাহিনী ও প্রশাসন মাঠে থাকার পরও নির্বাচনের পর সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ কেন প্রতিহত করা গেল না, সে বিষয়টি স্বচ্ছ নয় । বুধবার দুপুরে রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় সুরঞ্জিত অভিযোগ করেন, “নির্বাচনের আগে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে মিলে বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করেছে। এই দায় শুধু সরকার আর প্রশাসনকে দিলে চলবে না, আমরা যারা প্রগতিশীল রাজনীতি করি তাদেরও নিতে হবে। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিক সঞ্জীব চৌধূরী রেডিও তেহরানকে জানান, নির্বাচনের দুই দিন আগে ভারতের স্বরাষ্ট্র সচিব যেমনটি আগাম মন্তব্য করেছিলেন, সংখ্যালঘুদের বাড়ীঘরে সে রকম হামলা হতে দেখে তিনি চিন্তিত ও কিছুটা আতঙ্কিত। তিনি মনে করেন, যারাই এসব ঘটনার জন্য দায়ী তাদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তি দেয়া সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু সে দায়িত্ব পালনে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। ধর্মীয় সম্প্রীতির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জাফরুল্লাহ খান বলেন, ইসলাম সম্প্রীতির ধর্ম। বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)’র শিক্ষা হচ্ছে সকল ধর্মাবলম্বী তাদের যার যার ধর্ম পালন করবে। অতএব কোন মুসলমান সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করতে পারে না। যারা করে তারা দুষ্কৃতকারী। তাদের দমন করা সরকারেরই দায়িত্ব। এদিকে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেয়ার ক্ষেত্রে রাষ্ট্র সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। বুধবার দুপুরে রাজধানীর সেমিনারে ড. মিজানুর রহমান বলেন, এ ব্যর্থতা যেন দীর্ঘায়িত না হয়, সেই বিষয়ে সরকারকে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। নয়তোবা দেশ বিপন্ন হয়ে যাবে। সূত্রঃ- রেডিও তেহরান #