জি নিউজ বিডি ডট নেট ঃ- সর্বদলীয় সরকার থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা এবং নির্বাচন বর্জন ও সরকারের সঙ্গে দর- কষাকষিসহ তিন দিন ধরে নানা নাটকীয়তার পর নির্বাচনে অংশ নিতে নতুন শর্ত দিয়েছেন। শর্ত হল সরকার নির্বাচন ১০ দিন পেছালে এবং সব দল অংশ গ্রহণ করলে নির্বাচনে যাবেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। গতকাল শুক্রবার রাতে বনানির বারিধারাস্থ প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে আমার মন্ত্রীরা বলেছেন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় নির্বাচনকালীন সরকারে থাকা জাতীয় পার্টির মন্ত্রীরা তফসিল পরিবর্তন করার অনুরোধ করেছেন। ১০ দিন সময় বাড়ানো হলে কি নির্বাচনে যাবেন? এ প্রশ্নের জবাবে এরশাদ বলেন, ১০ দিন সময় বাড়ানোর পরও যদি সব দল নির্বাচনে না আসে, তাহলে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যাবে না। এ সিদ্ধান্তে তিনি অটল ও অনড় আছেন। এদিকে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে জানা যায়, জাপাকে নির্বাচনে রাখার জন্য সরকার মরিয়া। এরশাদকে ধরে রাখতে সরকার শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাবে। রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক উভয় পর্যায়ে সরকার গতকালও এরশাদ ও তাঁর দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে বিষয়টি তত্ত্বাবধান করছেন। গতকাল রাতেও গণভবনে প্রধানমন্ত্রী দলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতার সঙ্গে পুরো পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। জাপার শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক সূত্র জানায়, সরকারের পক্ষ থেকে এরশাদকে চিকিৎসার জন্য কিছুদিনের জন্য বিদেশে পাঠিয়ে রওশন এরশাদকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করে জাপাকে নির্বাচনে রাখার চেষ্টা চলছে। তবে এ প্রস্তাবে এরশাদ গতকাল পর্যন্ত সম্মত হননি বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ একজন নেতা জানিয়েছেন। সরকারের সঙ্গে জাপার আলোচনা চলার কথা জানিয়ে গতকাল দলটির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, সরকার তো সরকারই। সরকারের সঙ্গে আলোচনা হতেই পারে, এতে দোষের কিছু নেই।এদিকে বিরোধী দল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে টেলিকনফারেন্সে আলাপ হয়েছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে এরশাদ বলেন, না, আমার সঙ্গে টেলিকনফারেন্সে কারো আলাপ হয়নি। টেলিকনফারেন্সে কথা বলার যন্ত্রাংশও আমার এখানে নেইবলে জানা তিনি । এরশাদ নির্দেশের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে রওশন এরশাদ, রুহুল আমীন হাওলাদার ও মুজিবুল হক চুন্নু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। ওইদিন সন্ধ্যায় তারা এরশাদের হাতে পদত্যাগপত্র জমা দেন বলে সাংবাদিকদের জানান জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার। এদিকে মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগের চিঠি জমা না দেয়া নেতাদের বিষয়ে এরশাদ বলেন, তারাও পদত্যাগপত্র দেবেন। আমার দলে কোনো বিভক্তি নেই। বিরোধ নেই। এদিকে এখন পর্যন্ত দলটির দুই প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ও আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এরশাদের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেননি। উল্লেখ -১৮ নভেম্বর নির্বাচনকালীন সরকারে শপথ নেন এরশাদের স্ত্রী ও দলের সভাপতিম-লীর সদস্য রওশন এরশাদ, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার, মুজিবুল হক চুন্নু এবং সালমা ইসলাম। এছাড়া গতকাল রাতে জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতা রওশন এরশাদের গুলশানের বাসায় বৈঠক করেছেন বলে জানা গেছে। তাঃ-০৭-১২-২০১৩