জি নিউজ বিডি ডট নেট ঃ- সরকার জনগণের ভোটে নয়, অস্ত্রের জোরে ক্ষমতায় রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া । তিনি বলেন, এই সরকার বেশি দিন স্থায়ী হবে না। মেয়াদ খুবই ক্ষীণ, খুবই অল্প। অতি অল্প সময়ের মধ্যে এই সরকার বিদায় নেবে এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। গতকালসোমবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণসমাবেশে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘গায়ের জোরে ভোট করা যায় না জনগণ তা দেখিয়ে দিয়েছে’ মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, গত ৫ জানুয়ারি জনগণ তাদের ভোট দেয়নি। ভোটার নয় অনেক ফাঁকা কেন্দ্রে কুকুরকেও চিন্তিত দেখা গেছে।এ সময় ছবি দেখিয়ে তিনি বলেন, “এই যে দেখেন- ভোটকেন্দ্রে কুকুর বসে আছে। তারাও চিন্তিত।” আরেকটা ছবি দেখিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, “বাচ্চারা ভোট কেন্দ্রে, কারণ ভোটাররা ভোট দিতে যায়নি। তিনি বলেন, “এই সমাবেশ প্রমাণ করেছে- সরকারের সঙ্গে জনগণ নেই। এই সমাবেশ কেন ডেকেছি জানেন- আপনারা প্রহসনের নির্বাচনে অংশ নেননি, তাই ধন্যবাদ জানাতে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সরকার ক্ষমতায় আছে জনগণের ভোটে নয় বরং অস্ত্রের জোরে। আপনারা কী ভোট কেন্দ্রে গেছেন? আপনারা যাননি, ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে মানুষ নিরব প্রতিবাদ জানিয়েছে।খালেদা জিয়া বর্তমান সরকারকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানান। বর্তমান সরকার জনগণের সরকার নয় দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, তারা জনগণের সরকার নয় বলেই দেশের মানুষের ওপর নির্বিচারে অত্যাচার নির্যাতন চালাচ্ছে। এই সরকার একটি দুর্নীতিবাজ সরকার। গত পাঁচ বছরে তারা জনগণের সম্পদ লুট করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারকে জনগণ অনাস্থা দিয়েছে উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, “এই সংসদে জনগণের দ্বারা কেউ নির্বাচিত নয়। সংসদে কতগুলো সঙ বসে থাকবে। বিরোধী দলবিহীন সংসদ। বিরোধী দলের মন্ত্রী তারা সরকারের সঙ্গে কাজ করবে। তিনি জাতীয় পার্টির একইসঙ্গে বিরোধী দলে থাকা এবং মন্ত্রিপরিষদে থাকারও সমালোচনা করেন। জনগণের অধিকার হরণে সরকার যৌথ বাহিনীর নামে দেশের বিভিন্ন এলাকা তাণ্ডব চালাচ্ছে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, বাংলাদেশের বাহিনী এ রকম তাণ্ডব চালাতে পারে, এটা বিশ্বাস করে না জনগণ।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘এগুলো আদৌ যৌথ বাহিনী ছিল কি না কেউ বলতে পারে না। যেভাবে অত্যাচার করা হয়েছে, যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তাতে জনগণ বিশ্বাস করতে পারে না যে বাংলাদেশের কোনো বাহিনী এতোটা নিষ্ঠুর হতে পারে। আমরা জানতে চাই এই অবৈধ সরকার কাদেরকে দিয়ে এসব করাচ্ছে’? তিনি অভিযোগ করেন, “শুধুমাত্র নির্বাচনের সময়ে আমাদের ২২ জন নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। জনগণের ওপর নির্যাতন বন্ধ করুন। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় সরকারকে দায়ী করে খালেদা জিয়া বলেন, “সরকার তাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, মানুষের দৃষ্টি অন্য দিকে ফেরাতে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। বিএনপি এলে জঙ্গিদের উত্থান হবে, আওয়ামী লীগের এ দাবিকে অপপ্রচার উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, বিএনপি এলে জঙ্গির উত্থান নয়, নির্মূল হয়। জঙ্গিবাদ সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, এই জঙ্গিবাদের সূত্রপাত হয় আপনাদের আমলে। আওয়ামী লীগের আমলে রমনা বটমূলে হামলা হয়। সিপিবির অনুষ্ঠানে বোমা হামলা হয়। খালেদা জিয়া এ সময় বিএনপি সরকারের আমলে জঙ্গি নির্মূলের জন্য র্যাব গঠন করা হয় বলে উল্লেখ করেন। ‘সংবিধান থেকে এক চুলও নড়ব না’- প্রধানমন্ত্রীর এমন কথার কড়া জবাব দেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, “সংবিধান থেকে বহু হাত নড়ে গেছেন তিনি। আজীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য সংবিধান কাঁটা ছেড়া করা হয়েছে। সরকার দেশের জনগণকে ভয় পায় মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, “২৯ ডিসেম্বর মার্চ ফর ডেমোক্রেসি আহবান করেছিলাম। জাতীয় পতাকা নিয়ে মানুষ আসবে। কিন্তু দুই দিন আগে আমাকে গৃহবন্দি করেছে। সারা দেশে তারা অবরোধ করেছে। এই হল সরকার। যদি জনগণের সরকার হতো তাহলে তারা তা করতে পারতো না। আমরা ক্ষমতায় ছিলাম। আমরা যখন ক্ষমতায় ছিলাম তখন কোন দিন এভাবে কর্মসূচিতে বাধা দেইনি। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সাংবাদিকদের কারাগারে নেয়ায় সরকারের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং সরকারের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করেন তিনি। যৌথ বাহিনীর অভিযানের নামে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের আটক এবং দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন খালেদা জিয়া,৷ তিনি নির্যাতন বন্ধ এবং সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ৷ তাঃ-২১ জানুয়ারি২০১৪।