আটক চেয়ারম্যান মজিদ ও স্ত্রী রহিমাকে দুই দিনের রিমান্ড
কাজী নাসির উদ্দীন, সাতক্ষীরাঃ সাতক্ষীরায় চাঞ্চল্যকর দুটি কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত দুটি মামলায় দুই জনকে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেস আদালতের বিচারক শহীদুল ইসলাম গতকাল শুনানি শেষে পৃথক দুটি মামলার দুই আসামীকে ২দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আসামীরা হলেন, চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ ও রহিমান খাতুন।
আদালতের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, গত ২৬ আগস্ট রাতে সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম পার্শ্ববর্তী পরানদহা বাজার থেকে মোটর সাইকেল যোগে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে রাত অনুমান ১০ টার দিকে হরিশপুর নামক ফাকা জায়গায় পৌছালে অজ্ঞাত দু:স্কৃতিকারিরা তার চলন্ত মোটর সাইকেল থামিয়ে মর্মান্তিকভাবে মাথায় কুপিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে পাশের ডোবায় লাশ ফেলে দিয়ে খুনিরা চলে যায়। ঘটনার দুই দিন পর নিহতের ভাই বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় ২২ জনকে জ্ঞাত ও ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এমামলার প্রধান আসামী সদরের ৫ নং শিবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদকে গত ৫ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে সাতক্ষীরা থানার পুলিশ। এরপর ঢাকা থেকে সাতক্ষীরায় এনে তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই আবুল কাশেম ধৃত আব্দুল মজিদকে ১০ দিনে রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত শুনানি শেষে সোমবার ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এছাড়াও গত ৩১ আগস্ট রাতে সাতক্ষীরা শহর উপকণ্ঠের বকচরা গ্রামের মৃত আবুল খায়ের এর ছেলে আব্দুল খালেক (৪০) বাড়ির পাশে মাঠের মধ্যে মেশিন ঘরে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় অজ্ঞাত দু:স্কৃতিকারিরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরদিন সকালে স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে সদর থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এব্যাপারে নিহতের ফুফাতো ভাই সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এদিকে লাশ উদ্ধারের পর স্থানীয়দের নানা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ নিহতের স্ত্রী রহিমা খাতুন (৩২) কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওইদিন থানায় নিয়ে আসে। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই হযরত আলী জানান, রহিমাকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের সন্দেহ ঘনিভূত হলে রহিমাকে প্রথমে কার্যবিধির ৫৪ ধারায় কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এরপর হত্যার সাথে সংশিষ্টতার আরও অভিযোগ পাওয়ার পাশাপাশি রহিমার বসত ঘর থেকে তার ব্যবহৃত রক্ত মাখা ওড়না উদ্ধার হওয়ার পর স্বামী হত্যার অভিযোগে প্রথমে তাকে শোন এরেস্ট ও পরে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত গতকাল শুনানি শেষে রহিমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহজাহান আলী খান স্পর্ষকাতর দুটি মামলায় দুই জনকে দুই দিন করে রিমান্ডের বিষয়ে নিশ্চিত করে বলেন, রবিউল হত্যা মামলা পলিটিক্যাল হলেও সেটির মুল আসামী ধরা পড়েছে। এছাড়াও বকচরার খালেক হত্যাকাণ্ড স্ত্রীর পরকীয়ার কারণে ঘটেছে উলেখ করে বলেন, এই হত্যাকাণ্ডে সংশিষ্ট ইতোমধ্যে এলাকা থেকে দুই জন পালিয়ে গেছে তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পারলে পূর্ণাঙ্গ রহস্য বেরিয়ে আসবে।