সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ঃ হাইব্রিড জাতের পেয়ারা চাষ করে লাভবান হচ্ছে সাতক্ষীরার কৃষকরা। অধিক ফলন ও বাজারে চাহিদার পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়ায় জেলার বিভিন্ন এলাকাতে বানিজ্যিক ভাবে চাষ করা হচ্ছে এ জাতের পিয়ারা। চাষীরা বলছে, সাতক্ষীরার আম ও কুল চাষের পরেই পিয়ারার স্থান ইতিমধ্যে লাভ করেছে। বর্তমানে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও এটি ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকাতে সরবরাহ অব্যহত আছে।
জেলার তালা উপজেলার সুজনশাহা গ্রামের পিয়ারা চাষী অরবিন্দ কুমার মন্ডল জানান, তিনি প্রায় ৩ বিঘা জমিতে হাইব্রিড কাজী ও বো¤^াই জাতের পিয়ারা বাগান করেছেন। ৮ থেকে ১০ বছরের মত বাগানের বয়স হলেও এসব গাছে ফল দিচ্ছে গত ৪ বছর ধরে। তিনি জানান, দেশী পিয়ারার চেয়ে এটি আকারে যেমন বড় হয় তেমনি খেতেও সুস্বাদু। তাছাড়া প্রত্যেক গাছে ধরনও প্রচুর পরিমান। তিনি বলেন, প্রতি বছর খুলনা অঞ্চলের পাইকারী ফল ব্যবসায়ীরা তার বাগান থেকে পিয়ারা ক্রয় করে নিয়ে যায়। তবে অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে এবার উৎপাদন ভালো হলেও দাম ভাল পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতি মন পিয়ারা এবার পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা দরে। তিনি বলেন, গত বার এমন সময় পিয়ারার পাইকারী দাম ছিলো ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা পর্যন্ত।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের কৃষক শেখ সিরাজুল ইসলাম জানান, তার ২ বিঘার বসত বাড়ীর চার পাশে প্রায় ২০ থেকে ২৫টি হাইব্রিড কাজী পিয়ারা গাছ রয়েছে। এসব গাছে গত ৫/৬ বছর ধরে একনাগাড়ে ফল দিচ্ছে। তিনি জানান, একেকটি পিয়ারা ৩০০ থেকে ৪৫০ গ্রাম পর্যন্ত ওজন হয়। পরিবারের চাহিদা মিটিয়েও বছরে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকার পিয়ারা বিক্রি করেন তিনি। তবে আগামীতে তিনি এ জাতের পিয়ারার একটি বাগান করে বানিজ্যিক ভাবে চাষ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, অন্যান্য ফসলের মত হাইব্রিড জাতের পিয়ারা চাষ করে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হওয়া যেতে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সোলায়ামান আলী জানান, হাইব্রিড জাতের পিয়ারা চাষ খুবই লাভজনক একটি ফসল। উচ্চ ফলনশীল জাতের এ পিয়ারা চাষ করে কৃষকরা আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছে। তিনি বলেন, পিয়ারার বাগান করে তাতে অন্য ফসলও করছে এখানকার কৃষকরা। ফলে এ জেলার অধিকাংশ উপজেলাতেই বানিজ্যি ভাবে চাষ করা হচ্ছে এ পিয়ারা।
কাজী নাসির উদ্দীন, সাতক্ষীরা