কাজী নাছির উদ্দিন সাতক্ষীরা প্রতিনিধি,জি নিউজঃ- বিএনপির কর্মী সমাবেশে গতকাল শুক্রবার দু’গ্রুপের সংঘর্ষে জেলা মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এ সংঘর্ষের কারণে বিএনপির কর্মী সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। এ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিমউদ্দিন আলম। তার সামনেই এ সংঘর্ষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কর্মী সমাবেশের মঞ্চে আসন গ্রহণের পর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ইফতেখার আলী গ্রুপের সমর্থকরা অতিথিদের ঘেরাও করে। তখন বক্তব্য দেয়ার জন্য মাইকে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরজেদুর রহমান আরজেদের নাম ঘোষণা করা হয়। এতে বাধা দেয় জেলা জাসাসের সম্পাদক সৈয়দ এখলেছুর রহমান বাচ্চু। শুরু হয় দুই গ্রুপের মধ্যে কথা কাটাকাটি। একপর্যায়ে জেলা বিএনপির সভাপতি হাবিবুল ইসলাম হাবিব কর্মী সমর্থকদের মঞ্চ থেকে নেমে যেতে বলেন। তার সমর্থকদের মঞ্চের সামনে আসার আহ্বান জানান। এ নিয়ে হাবিব গ্রুপ ও ইফতেখার গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় শহরের শহীদ আবদুর রাজ্জাক পার্ক সংলগ্ন শিল্পকলা একাডেমি চত্বর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এতে মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান, বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার আলী, শ্রমিক দলের সভাপতি আবদুস সামাদ, তরুণ দলের আবদুল আলিম আমিনুল ইসলাম, আবদুল করিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম ও দফতর সম্পাদক রায়হানসহ অন্তত ১৪ জন আহত হন। আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আমানউল্লাহর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাতক্ষীরা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ইফতেখার আলীর অভিযোগ, জেলা সভাপতি হাবিবুল ইসলামের হুকুমেই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। হাবিব সমর্থকরা রামদা, চাইনিজ কুড়াল, লাঠিসোটা ও হকিস্টিক নিয়ে তার সমর্থক ও দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন।
সাতক্ষীরা বিএনপির সভাপতি হাবিবুল ইসলাম হাবিবের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার সমর্থক জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারিকুল হাসান জানান, বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মী সমাবেশে বহিরাগত কিছু লোককে দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে বিএনপির সংস্কারপন্থি নেতা সৈয়দ ইফতেখার আলী। দলীয় নেতাকর্মীরা তা প্রতিহত করে। এ ঘটনায় হাবিব গ্রুপের সমর্থক স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুস সালাম ও রায়হানসহ ৫ জন আহত হয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন।
কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিমউদ্দিন আলম জানান, সাতক্ষীরা বিএনপি দুই ভাগে বিভক্ত তা তার জানা ছিল না।
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি শাজাহান খান জানান, বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো পক্ষই এখনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।