কাজী নাসির উদ্দীন, সাতক্ষীরাঃসাতক্ষীরার পশ্চিম সীমান্তের গরুর বিট (খাটাল) নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন মুহুর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে। গত ৪দিন আগে কুশখালি গরুর খাটাল নিয়ে বর্তমান ভাইচ চেয়ারম্যান গোলাম মোরশেদ ও তার প্রতিদ্বন্দি গ্রুপ দেব কুমারের মধ্যে দখল নিয়ে সংঘর্ষ হয়। এতে কমবেশি ৩/৪ জন আহত হলেও ফের গুরুত্বর সংঘর্ষের আশংকা করছে এলাকার সাধারণ মানুষ। বর্তমানে কুশখালিতে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানাগেছে, দেশব্যপি ১৪টি গরুর খাটালের মধ্যে সাতক্ষীরা জেলায় রয়েছে ৯টি। এরমধ্যে সাতক্ষীরা সদরেই রয়েছে ৭টি। এসম¯ গরুর খাটাল গুলো বন্ধ রেখে নবায়নের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক গতমাসে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের নিকট একটি চিঠি প্রেরণ করেন। উক্ত আদেশ পেয়ে জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান জেলার ৯টি গরুর খাটাল বন্ধের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং জেলা প্রশাসকের নির্দেশ পত্র ¯স্ব স্ব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বিজিবি ৩৮ ও ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়কদের নিকট প্রদান করে উক্ত খাটাল গুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ জারী করেন।
দেখাগেছে, জেলা প্রশাসকের নির্দেশ উপেক্ষা করে বিজিবি’র নিয়ন্ত্রণে প্রায় সকল খাটালে ভারতীয় গরু উত্তোলন অব্যহত ছিল। এক পর্যায়ে সদরের অন্যান্য খাটাল বন্ধ হয়ে গেলেও কুশখালি ও বৈকারি গরুর খাটালে গরু উত্তোলন অব্যহত থাকে। সর্বশেষ কুশখালি গরুর খাটালটি জেলার তালা উপজেলার জনৈক দেবনাথের নামে গেল বছর অনুমোদন হয়। সেখানে থেকে সদর উপজেলার ভাইচ চেয়ারম্যান গোলাম মোরশেদ ৪০ ভাগ ডিড নিয়ে নিয়ন্ত্রণের নামে কোটি কোটি টাকা চাঁদা উত্তোলন করে আসছিল। এক পর্যায়ে উক্ত খাটালের শত ভাগ মালিকানা দাবি করে চলতি মাসের ২ তারিখে দেব কুমারের লোকজন দখল করতে গেলে মোরশেদ গ্রুপের সাথে সংঘর্ষ বাধে। এতে উভয় পক্ষের ৪/৫ জন কমবেশি আহত হয়। এরপর থেকে শক্তির মহড়ার এক পর্যায়ে উক্ত কুশখালি খাটালে গরু উত্তোলন বন্ধ আছে। তবে পার্শ্ববর্তী বৈকারি গরুর খাটালে গরু উত্তোলন অব্যহত আছে।
এদিকে কুশখালি গরুর খাটাল বন্ধের বিষয়ে গোলাম মোরশেদ এর সত্যতা ¯স্বীকার করে বলেন, অনুমোদন না হওয়ায় খাটাল বন্ধ আছে। এতে সরকার বিপুল অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তবে তার অপর পার্টনার দেব বাবুর ব্যক্তগত সেলফোনে যোগাযোগ করা হলে তপন নামের অপর এক যুবক ফোন রিসিভ করে কোন সদউত্তর দেননি।
জানাগেছে, জেলা প্রশাসকের নির্দেশকে উপেক্ষা করে এবং খাটালের অনুমোদন গ্রহণ ছাড়াই প্রতিদিন বৈকারি খাটালে হাজার হাজার গরু আনা হচ্ছে। এতে করে সেখানকার একটি মহল গরু ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে গরু প্রতি ১৮ শত টাকা নিয়ে কোটি কোটি টাকা লুটে নিচ্ছে।
এব্যাপারে জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ আনুযায়ী আমি জেলার সমস্ত খাটাল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। এরপরও যদি এসব খাটালে গরু উঠে সে দায়িত্ব বিজিবি বহন করবে। কারণ সীমান্ত— এলাকা নিয়ন্ত্রণ হয় বিজিবি’র মাধ্যমে।
সাতক্ষীরা সদরের সীমান্ত এলাকায় খাটাল বন্ধ নিয়ে উত্তেজনা
Share This