নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, জি নিউজ ঃ সাভারে রানা প্লাজায় ধসের পর সরকার মৃতের সংখ্যা কম দেখাতে মরদেহ গুমের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন ,বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া। মে দিবস উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল এ জনসভার আয়োজন করে। সমাবেশে তিনি এই অভিযোগ করেন, হতাহতের সঠিক পরিসংখ্যান প্রকাশ করছে না অভিযোগ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, সাভারে রাতে লাশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে কম দেখানোর জন্য। সরকারের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, সাভারে এত মানুষ হত্যা করলেন, অথচ লাশ ফেরত দিচ্ছেন না, আবার লাশ কম দেখাচ্ছেন। খালেদা জিয়া বলেন, রানা প্লাজা ধসের সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীকে পাঠানো হলে আরও জীবন রক্ষা পেত। কিন্তু সেনাবাহিনী দায়িত্ব পেয়েছে অনেক পরে। সরকার যদি তাত্ক্ষণিক উদ্ধার তত্পরতা শুরু করত, তাহলে আরও প্রাণ বাঁচানো যেত। কিন্তু সরকার সেটাকে গুরুত্ব দেয়নি।
ঘটনার পরপর প্রধানমন্ত্রী ঘটনাস্থলে না যাওয়ায় বিরোধীদলীয় নেতা সমালোচনা করে বলেন, জনগণের ভয়ে প্রধানমন্ত্রী সেখানে যেতে পারেননি। সাভারে ভবন ধসে সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী সেখানে গেছেন। শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, দেশের স্বার্থে আমরা আপনাদের পাশে আছি, থাকব। আন্দোলন করতে হবে, সরকারকেও বিদায় করতে হবে। এই সরকার আসার পর কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কারণ কারখানায় বিদ্যুত্ ও গ্যাস দিতে পারছে না। আওয়ামী লীগের চাঁদাবাজির জন্য কেউ ব্যবসা চালাতে পারছেন না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রতি জেলায় একজন গডফাদার
আওয়ামী লীগকে. সন্ত্রাসীদের দল. আখ্যা দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, প্রতি জেলায় তাদের একজন বা একাধিক গডফাদার আছে। নারায়ণগঞ্জেও একজন গডফাদার আছে। আপনারা সবাই তার নাম জানেন। এখানে ত্বকীকে হত্যা করা হয়েছে। ত্বকীর বাবা এবং এখানকার মেয়র বলেছেন কে ত্বকীকে হত্যা করেছে। তার পরও কিছু হয়নি। শুনেছি, সে বিদেশে চলে গেছে। কিন্তু বিদেশে যায় কীভাবে? সন্ত্রাসী দল দিয়ে দেশে কিছু করা যায় না। সরকার-পতনের অন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান। বেগম খালেদা জিয়া দাবি করেন, বিএনপির আমলে পোশাক কারখানায় ৫ শতাংশ লভ্যাংশ শ্রমিকদের পাওয়ার সুযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু এই সরকার এসে তা বন্ধ করে দিয়েছে। সরকারের দুর্নীতির কারণে দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ নেই, তাই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ঘুরে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। সরকার প্রশাসন, পুলিশ বাহিনীতে নির্লজ্জভাবে দলীয়করণ করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। কিন্তু সরকারকে সঠিক হিসাব দিতে হবে। এ সময় নিহতদের প্রতি পরিবারের জন্য ২০ লাখ টাকা এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি।
মে দিবস উপলক্ষে শ্রমিক দলের সমাবেশে সভাপতি ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, এম কে আনোয়ার, আ স ম হান্নান শাহ, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক
হোসেন খোকা, নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকারসহ দলের সগযোগী সংগঠনের নেতারা বক্তৃতা করেন। জি জি নিউজ / 1মে / ২০১৩