জি নিউজ বিডি ডট নেট ঃ- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম মিথ্যাচার করেছেন বলে দাবি করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ দাবি করেন। উল্লেখ -গত ২০ জানুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত বিএনপির গণসমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনবেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যে দেশদ্রোহিতামূলক কোনো কিছু ছিল না দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, “এ বিষয়ে মিথ্যা অভিযোগ এনে জনগণকে বিভ্রান্ত করা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে আশা করা যায় না। তিনি বলেন, আমি জানি না উনি কি অবস্থায় কেন একথা বলেছেন। তবে উনি সত্য কথা বলেননি, মিথ্যাচার করেছেন। প্রসঙ্গত,গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাতক্ষীরায় যৌথ বাহিনীর অভিযানের বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ‘রাষ্ট্রদ্রোহমূলক’ আখ্যা দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই বক্তব্য প্রত্যাহারসহ জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন। অন্যথায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। গত২০ জানুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেএক সমাবেশে খালেদা জিয়া সাতক্ষীরায় যৌথ বাহিনীর সাম্প্রতিক অভিযানে কারা ছিল, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে প্রকারান্তরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতি ইঙ্গিত করেছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন সৈয়দ আশরাফ। এদিকে মির্জা ফখরুল বলেন, “সরকার সরাসরি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে। আজ যারাই ভিন্নমত পোষণ করছেন, যারাই আজ সত্য কথা বলছেন তাদেরকেই হত্যা, গুম, নির্যাতন করা হচ্ছে। এছাড়া গতকাল বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, সরকার ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের’ আশ্রয় নিয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, “দেশে এখন গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই। গণতন্ত্র এখন মৃত। গত ৫ জানুয়ারি থেকে গণতন্ত্রের শবযাত্রা শুরু হয়েছে। মানবাধিকার আজ ভূলুণ্ঠিত। এভাবে চলতে পারে না। গত ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘নজিরবিহীন’ একটি ‘কলঙ্কিত’ নির্বাচন হয়েছে—দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, “এই নির্বাচনে ৫ শতাংশের বেশি ভোট পড়েনি। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪১টি দলের মধ্যে ৩০টিই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। এই নির্বাচন দেশে-বিদেশে কোথাও গ্রহণযোগ্য হয়নি। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছে বলেও এসময় দাবি করেন তিনি । মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, “বর্তমান অবৈধ সরকার ক্ষমতা গ্রহণে দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বেড়েই চলেছে—দাবি করে তিনি বলেন, গত তিন মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে ২৯৪ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। উক্ত সময়ের মধ্যে দেশব্যাপী গুম হয়েছেন ১৮৭ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে আতঙ্কজনক হচ্ছে গুম ও গুপ্তহত্যা। এমনকি মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের হত্যা করে ফেলে রাখা হচ্ছে।তিনি বলেন, বন্ধ করুন এই প্রতিহিংসামূলক হত্যাযজ্ঞ। সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি বন্ধ করুন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করুন। এছাড়া সরকারকে গণতন্ত্রণের পথে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “অবিলম্বে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন—উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ‘প্রতিহিংসামূলক হত্যাযজ্ঞ’ বন্ধ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির এই মুখপাত্র । সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড.আসাদুজ্জামান রিপন, । তাঃ-২৩ জানুয়ারি ২০১৪।