জি নিউজ বিডি ডট নেট ডেস্ক ঃ- বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও উলফার নেতা পরেশ বড়ুয়াসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া, অস্ত্র আটকের অন্য একটি মামলায় ওই ১৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এস এম মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। ১০ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়ার প্রায় পৌনে ১০ বছর পর চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো। রায় ঘোষণার পর বাদী পক্ষের আইনজীবীদের দাবি, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফাকে সরবরাহ করার জন্যই অস্ত্রগুলো আনা হয়েছে। সেজন্যই আন্তর্জাতিকভাবে চাঞ্চল্যকর এবং নজিরবিহীন ঘটনা হওয়ার প্রেক্ষিতে মাননীয় আদালত আসামীদেরকে দু’টি মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করছে। যদিও ভিন্ন মত আসামী পক্ষের আইনজীবীদের। তারা বলছেন, এ রায় নজিরবিহীন। চোরাচালান মামলায় কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার কোন নজির নেই। তাছাড়া কোনো অভিযোগই প্রমাণ করতে পারেনি আসামী পক্ষ। তারপরও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়া হয়েছে। রায়কে ঘিরে বাদী ও আসামীপক্ষের আইনজীবীদের এমন প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে আমরা কথা বলেছি বিশেষজ্ঞ আইনজীবীদের সঙ্গে। সম্মিলিত আইনজীবী পরিষদের আহবায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার বলেন, মামলার রায়কে রাজনৈতিক রূপ দেয়ার মনোবৃত্তির কারণেই আসামী পক্ষের আইনজীবীরা এমন অভিযোগ তুলেছেন। কেননা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই মামলাটি আদালতে নিষ্পত্তি হয়েছে। তথ্য উপাত্ত যাচাই বাছাই করেই মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। তাই রাজনীতির কথা বলে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করা উচিৎ হবে না। তবে, ‘আতঙ্কিত বিচারকরা’ হয়রানি এড়াতেই এমন রায় দিয়েছেন বলে মনে করেন আরেক আইনজীবী অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান তিনি বলেন, বিচারকরা হয়রানি আতঙ্কের মধ্যে আছেন বলেই তথ্য প্রমাণ যাই হোক, সরকারের চাহিদা মতো রায় দিচ্ছেন। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মানি লন্ডারিং মামলায় খালাস দেয়ায় সেই বিচারককে হয়রানি করার উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, এ ঘটনায় সকল বিচারক আতঙ্কগ্রস্ত। তা না হলে যে মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন হয়, সেখানে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হতো না। আর যাবজ্জীবন শাস্তি দেয়ার মতো সাক্ষ্য প্রমাণও আদালতে হাজির করা যায়নি। তাছাড়া অস্ত্র আটক ও মামলা করেছে যারা তাদেরই অভিযুক্ত করে শাস্তি দেয়া হয়েছে। আর এটা হয়েছে বিচারকরা আতঙ্কগ্রস্ত বলেই। তিনি আরও বলেন, এমন রায়ের ফলে দেশের মানুষও আজ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। বিচারকরা আর স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না। এ অবস্থা চলতে থাকলে আদালতের ওপর সাধারণ মানুষের হতাশা ও অনীহা আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এ আইনজীবী। সূত্র- রেডিও তেহরান তাঃ-৩০ জানুয়ারী২০১৪।