জি নিউজ ডেস্কঃ- একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যাসহ সাত ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে জামায়াতে ইসলামী ও সহযোগী সংগঠন এবং মুখপত্র হিসেবে দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকা নিষিদ্ধের আবেদন করেছে তদন্ত সংস্থা। আজ (মঙ্গলবার) বেলা ১১টায় ধানমন্ডির সেফ হোম কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান জানান, ট্রাইব্যুনাল আইনের সাতটি ধারায় জামায়াতের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, জেনেভা কনভেনশন ভঙ্গ প্রভৃতি। ৩৭৬ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্র থেকে সক স্তরের নেতাদের অভিযুক্ত করে তাঁদের নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে। জামায়াতের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাক্ষী করা হচ্ছে ৭০ জনকে ।হান্নান খান জানান, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে পাকিস্তানি বাহিনী দীর্ঘ ৯ মাস এ দেশের মানুষের উপর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। আর পাক বাহিনীকে এই হত্যাযজ্ঞে সহযোগিতা করে জামায়াতে ইসলামী। একাত্তরে জামায়াতের অবস্থান সম্পর্কে তদন্তে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলাম ও তার সহযোগী সংগঠন আল বদর, রাজাকার ও তৎকালীন দৈনিক পত্রিকা ও দলটির মুখপাত্র সংগ্রাম পত্রিকা সকল মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। সাংগঠনিকভাবে এর কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল জামায়াতে ইসলাম। গত বছরের ১৮ আগস্ট জামায়াতের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। প্রায় আট মাস পর বিভিন্ন নথিপত্র, স্থান পরিদর্শন করে জামায়াতের বিরুদ্ধে তদন্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন ও আনুষঙ্গিক নথিপত্র আজ দুপুর ২টার দিকে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে দাখিল করা হবে। এরপর প্রসিকিউশন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিবেদনটি ট্রাইব্যুনালে দাখিল করবে। ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত জামায়াতের শীর্ষ ছয় জন নেতার বিরুদ্ধে একাত্তরের মানবাতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে বিচার কার্য শুরু করে। ট্রাইব্যুনালের বিভিন্ন রায়ে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতার সাজার পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধে দল হিসেবে জামায়াতের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি উঠে আসে। ইতোমধ্যে জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে। গত বছর ১৮ আগস্ট দলটির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে তদন্ত সংস্থা। প্রায় আট মাস পর বিভিন্ন নথিপত্র, স্থান পরিদর্শন করে জামায়াতের বিরুদ্ধে তদন্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। এদিকে, হাইকোর্ট গতবছর ১ আগস্ট রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে দেয়। সূত্র-রেডিওতেহরান,পরে জামায়াতের আইনজীবীরা নিবন্ধন বাতিলের রায় স্থগিতের আবেদন করলেও তা খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত।