অনলাইন ডেস্ক :- ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলছে, কুড়ি বছরের এক আদিবাসী তরুণীকে ১২ জন ব্যক্তি গণধর্ষণ করেছে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলায়। গ্রামে সালিশী সভায় ওই তরুণীকে ‘অপরাধী’ বলে চিহ্নিত করে গণধর্ষণের শাস্তি দেওয়া হয়।ওই মেয়েটির ‘অপরাধ’ অনাদিবাসী একটি ছেলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল গত পাঁচ বছর ধরে।তরুণীটির চিকিৎসা চলছে বীরভূম জেলা হাসপাতালে।গ্রামের মোড়ল ও ধর্ষণকারী সহ মোট ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।বীরভূমের পুলিশ প্রধান সি সুধাকর বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, “সোমবার রাতে রাজারামপুর গ্রামে সালিশী সভায় ওই গণধর্ষণের নির্দেশ দেন গ্রামের মোড়ল বলাই মান্ডি। মেয়েটির পরিবার গত দু’দিন আতঙ্কে কাটানোর পরে বুধবার পুলিশের কাছে আসেন। রাতের মধ্যেই আমরা সবাইকে গ্রেপ্তার করেছি”।অভিযোগে বলা হয়েছে, চৌহাট্টা গ্রামের এক অনাদিবাসী ছেলের সঙ্গে অত্যাচারিতা ওই মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক জানাজানি হয় সোমবার।সেদিনই সালিশী সভায় দু’জনকে অপরাধী বলে চিহ্নিত করা হয় আর ২৫০০০ টাকা করে জরিমানা ধার্য করা হয়। যুবকের পরিবার টাকা মিটিয়ে দিতে পারলেও ওই তরুণীর পরিবার তাদের আর্থিক অবস্থার কথা জানিয়ে টাকা দিতে পারবে না বলে জানায় গ্রামের প্রধানদের।তখনই মোড়ল বলাই মান্ডি বলে “যাও, ওকে নিয়ে মজা করো”। পরপর ১২ জন ধর্ষণ করে তরুণীটিকে, যাদের মধ্যে মেয়েটির বাবার বয়সী লোকও ছিল, আবার তার ভাইয়ের বয়সী ছেলেও ছিল। প্রধান বলাই মান্ডি ওই তরুণীর গ্রাম সম্পর্কে কাকা।দু’দিন আতঙ্কে কাটানোর পরে বুধবার দুপুরে মেয়েকে নিয়ে থানায় যান তার মা। তারপরে রাতে তাঁকে বীরভূম জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।জেলার প্রধান সরকারী চিকিৎসক অসিত বিশ্বাস বলছেন, পাঁচজন ডাক্তারের একটি দল চিকিৎসা করছে। নমুনা সংগ্রহ করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।বীরভূমে আদিবাসী তরুণীর ওপরে অত্যাচারের ঘটনা এর আগেও ঘটেছে।২০১০ সালে এক তরুণীকে নগ্ন করে গ্রামে ঘোরানো হয় এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের কারণে।আদিবাসী সমাজে অনাদিবাসী কাউকে বিয়ে করলে সমাজচ্যুত করার চল রয়েছে, কিন্তু শারীরিক নিগ্রহ গর্হিত অপরাধ বলেই গণ্য করা হয়।বীরভূমের সাঁওতাল আদিবাসীদের মধ্যে কাজ করেন এমন এক এন জি ও কর্মী কুনাল দেব বলছেন, “ইদানীং আদিবাসী সমাজের মধ্যেও গণধর্ষণ বা যৌন নিগ্রহের মতো ঘটনা ঘটছে, বিষাক্ত হয়ে যাচ্ছে সমাজটা”।এই ঘটনার নিন্দায় যেমন সরব হয়েছে রাজ্য সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোও, তেমনই নিন্দা জানিয়েছে আদিবাসী সমাজও। সূত্র- বিবিসি বাংলা, কলকাতা,