রুমন মোস্তাফিজ,ঢাকা ঃ রাজধানীর উত্তরা পুর্ব থানার আব্দুল্লাহপুর এলাকায় রপ্তানীমুখি শিল্পপ্রতিষ্ঠান ”দ্য বেঙ্গল জিন্স লিমিটেড” গার্মেন্টস কারখানায় দু’ নারী শ্রমিককে নির্যাতন করে জোরপুর্বক ভাবে ছাটাই করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শ্রমিক ছাটাইকে কেন্দ্র করে উত্তরা এলাকায় গার্মেন্টস সেক্টরে পোষাক শ্রমিকদের মধ্যে এক ধরনের চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা করছে। নির্যাতিত দু’ নারী শ্রমিক রাজধানী কাওরান বাজারস্থ বিজিএমইএ সদর দপ্তরে ”লেবার আর বিট্রেশন” কমিটি কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত ভাবে একটি অভিযোগ করে ও কোন ফল পায়নি।
নির্যাতিত গার্মেন্টস শ্রমিক তানিয়া আক্তার আজ মঙ্গলবার বিকেলে জানান, সে সাড়ে ৫বছর ধরে ”দ্য বেঙ্গল জিন্স লিমিটেড” গার্মেন্টসে অপারেটর হিসেবে কাজ করছে। তার আইডি কার্ড নম্বর ৩৫২। গার্মেন্টসের মালিক পক্ষের সার্বিক সহযোগীতায় ফ্রেন্ডস সিকিউরিটি ইসলামী এমসিএস লিমিটেড নামে একটি মাল্টিপারপাস প্রতিষ্ঠান করে। উত্তরা ৬নং সেক্টর ৮নং রোডের ৫নং বাড়ীর ৫ম তলায় এই প্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী অফিস করা হয়। গার্মেন্টসের লাইন চীফ কামরুল ইসলামের মাধ্যমে কারখানার ৩শতাধিক শ্রমিককে জোরপূর্বক বিভিন্ন লোভনীয় অফারের মাধ্যমে মাল্টিপারপাসে ডিপিএস করায়। উক্ত ফ্রেন্ডস মাল্টিপারপাস কোম্পানী উত্তরা–টঙ্গী এলাকার গার্মেন্টস শ্রমিকদের ২০০ কোটি টাকা নিয়ে সম্প্রতি হঠাৎ উধাও হয়ে গেছে।
গার্ন্টেস শ্রমিক তানিয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে আরো জানান, মাল্টিপারপাসে আমার পাওনা দেড় লাখ টাকা চাওয়ায় ৩১মার্চ ”দ্য বেঙ্গল জিন্স লিমিটেড” কর্তৃপক্ষ জোর করে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেয়। সেই সাথে আমার সহকর্মী অপারেটর রিপা আক্তারকে মারধর ও নির্য়াতন করে অনুরূপ ভাবে চাকরচ্যিুত করা হয়। এ ব্যাপারে উত্তরা পূর্ব থানায় আমার পিতা আব্দুস সামাদ বাদী হয়ে একটি জিডি করেন। জিডি নং ১২৫৮। একই তারিখে বিজিএমইএ কার্যালয়ে ভুক্তভোগী গার্মেন্টস শ্রমিক তানিয়া ও রিপা লিখিত অভিযোগ জমা দেয়।
নির্যাতিত গার্মেন্টস অপারেটর রিপা আক্তার জানান, ১৪মাস পূর্বে আমি উত্তরা আব্দুল্যাহপুরে বেঙ্গল গার্মেন্টসে অপারেটর হিসেবে কাজ শুরু করি। তার পরিচয় পত্র নম্বর হল ৩৮৯। গার্মেন্টসে যোগদানের পর থেকেই ফ্রেন্ডস মাল্টিপারপাসে যোগদানের জন্য চাপ প্রয়োগ করে কারখানার পিএম সাইফুল ইসলাম। পরে প্রতিমাসে ২৫০০টাকা করে গত ১১ মাসে ২২৫০০টাকা জমা দেই। টাকা চাওয়ায় পিএম সাইফুল ইসলাম ও ফ্লোর ইনচার্জ হারুনূর রশীদ আমাকে (রিপা আক্তার )ও তানিয়াকে মারধর করে হাজিরা বই জোর করে রেখে দিয়ে কারখানা থেকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়া হয়।
পরবর্তীতে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে আমাদের পাওনা বকেয়া বেতন ও ভাতা চাইতে কারখানার সামনে গেলে কর্তৃপক্ষ ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে আমাদেরকে হুমকি প্রদান করে। যারা মাল্টিপারপাস ও কারখানার বকেয়া বেতন চায় তাদেরই সন্ত্রাসী দিয়ে মারধর করে দ্য বেঙ্গল জিন্স গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ ।
বেঙ্গল জিন্স গার্মেন্টসের সহকারী ম্যানেজার (এডমিন ও পারসেস) মোঃ মোশাররফ হোসেন জানান, বিজিএমইএ অফিসে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর তারাই বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। এ বিষয়ে এখন কিছু বলা যাবে না।