জেলা মৎস্য অফিসের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার ছয়টি উপজেলার প্রায় ৬০ হাজার ছোট বড় মৎস্য ঘেরে বাণিজ্যিকভাবে চিংড়ি চাষ করা হচ্ছে। এরমধ্যে সাতক্ষীরা সদরে ২ হাজার ২০০টি, তালায় ১ হাজার ৯৯৫টি, দেবহাটায় ৩ হজার ৫২০টি, আশাশুনিতে ১৪ হাজার ৫২০টি, কালিগঞ্জে ১৫ হাজার ৯৩০টি ও শ্যমনগর উপজেলায় ১৩ হাজর ৮২০টি চিংড়ী ঘেরে বাগদার চাষ করা হচ্ছে। উপজেলাগুলোতে এবার প্রায় ২৬ হাজার টন রপ্তানিজাত চিংড়ি উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন জেলা মৎস্য বিভাগ। জেলায় ছয়টি উপজেলায় অধিকাংশ মৎস্য ঘেরে ব্যাপক হারে চাষ করা হচ্ছে বাগদা চিংড়ি। এ বছর ভাইরাস ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সংক্রামক প্রার্দুভাব কম এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদন ভাল হচ্ছে বলে জানান চিংড়ি চাষীরা। ঘের ব্যবসায়ী আশাশুনি উপজেলার কচুয়া গ্রামের মনজুর“ল হুদা, শংকর ঘোস ও বলভপুর গ্রামের ওকালত হোসেন জানান, তারা প্রায় ২ হাজার বিঘা জমিতে রপ্তানিযোগ্য চিংড়ি মাছের চাষ করেছেন। গত বছরের তুলনায় এবার তাদের ঘেরে ভাইরাস ও অন্যান্য রোগের প্রার্দুভাব অনেক কম। তাই তুলনামুলক ভাবে এবার উৎপাদন ভাল হবে বলে ব্যবসায়ীরা আশা করছেন। তারা আরও জানান, যেভাবে মাছ ধরা পড়ছে তাতে পুরো মৌসুম এভাবে মৎস্য ঘেরে বাগদা চিংড়ি ধরা পড়লে গত বছরের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ বাগদা চিংড়ি বেশি উৎপাদন হবে। এদিকে শ্যামনগরের ঘের ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক শামীম আহমেদ বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা বাগদা চিংড়িতে নানাবিধও অপদ্রব্য পুষ করে বিদেশের কাছে দেশের সম্মান ক্ষুণ্ণ করেছে। সেসব বিষয় গুলো ইতিমধ্যে কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছেন সংশিষ্টা। ফলে দেশের বাইরে চিংড়ির মান আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জেলা চিংড়ি চাষী সমিতির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী ডা. আবতাবুজ্জামান জানান, মৌসুমের শুর“তেই জেলায় মৎস্য ঘেরগুলোতে ভাইরাস দেখা দিলেও এখন এর প্রার্দুভাব নেই বললেই চলে। এ অঞ্চলের চিংড়ি ঘেরে ভাইরাস আক্রমণের অন্যতম কারণ মাটি ও পানির সঠিক তাপমাত্রার নির্ণয় করার অভাব। তাছাড়া এ এলাকার চিংড়ি চাষীদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দিতে পারলে আরও বেশি চিংড়ি উৎপাদন করা সম্ভব হতো বলে তিনি মনে করেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল অদুদ জানান, বর্তমানে জেলায় চিংড়ি ঘেরগুলোতে যে হারে চিংড়ি উৎপাদন হচ্ছে তাতে চলতি মৌসুমে গতবছরের তুলনায় অš—ত ২৫ শতাংশ বাগদা চিংড়ি বেশি উৎপাদন হবে বলে আশার করছেন। আরও বলেন, বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার বাগদা চিংড়ি বিদেশে রপ্তানি হয়। এর ৩৫ শতাংশ চিংড়ি উৎপাদন হয় শুধুমাত্র সাতক্ষীরা জেলা থেকে। সে হিসেবে এবার সাতক্ষীরা জেলা থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার বাগদা চিংড়ি রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে ধারণা করছেন তিনি।
কাজী নাসির উদ্দীন, সাতক্ষীরা