রাজধানীর বিএনপির চেয়ারপারসনে গুলশান কার্যালয়ে গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এ কথা বলেন। নির্বাচনী প্রচারে নেমে জনগণের আবেগ, উচ্ছ্বাস দেখে অভিভূত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। বিএনপির এই নেত্রী বলেন, গণজোয়ার দেখে আওয়ামী লীগ দিশেহারা হয়ে গেছে। তাদের সব হিসাব পাল্টে গেছে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অভিযোগ করেছেন, গত কিছুদিন তাঁর গাড়িবহরে হামলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের উসকানির ফলে। তিনি বলেন, ‘আমার হাতে কোনো বাহিনী নেই। আমার আছে আল্লাহর রহমত ও দেশবাসীর সমর্থন ও দোয়া। এর ওপর নির্ভর করেই আমি রাজপথে নেমেছি। আমি জনসংযোগে নামতেই যে দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে, তাতে তাদের এতদিনকার সব প্রচার মিথ্যা হয়ে গেছে। তাই প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীরা প্রকাশ্যে আমার বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য রেখেছেন; সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়েছেন।’
খালেদা জিয়া বলেন, সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে উত্তরা, কারওয়ান বাজারে আমার ওপর হামলা হয়েছে। হামলায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা অংশ নেয়। হামলাকারীদের পুলিশ পুরোপুরি সহায়তা করে। পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আমাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আমি তখন সবেমাত্র গাড়িতে উঠে বসেছি। আমি যে পাশে বসা ছিলাম, তার কাচ ফেটে যায়। আল্লাহর রহমতে আমার জীবন বেঁচে যায়। কতটা মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করলে বুলেটপ্রুফ গাড়ির কাচ ফেটে যায়?’
বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, টেলিভিশনের সচিত্র প্রতিবেদন, হামলাকারীদের নামধাম, সাংগঠনিক পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে। এদের কয়েকজনকে ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থীদের প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা যায়। কাজেই এসব পরিকল্পিত হামলা, তা বুঝতে কষ্ট হয় না। আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বারবার হামলা চালানো হলেও একজন সন্ত্রাসীকে ধরা হয়নি; বরং যারা আক্রান্ত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেই মামলা দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে আমাদের সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের।’
‘আমার প্রাণনাশের লক্ষ্যে হামলাকে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নাটক আখ্যা দিয়েছেন, তাতে আমি মর্মাহত। আমি বুঝতে পারি এর কোনো বিচার হবে না। এরা একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে আমি ভয় পাই না। জীবন-মৃত্যুর মালিক আল্লাহ। তিনি রক্ষা করলে অন্য কেউ আমাকে হত্যা করতে পারবে না। এই হত্যাচেষ্টার ন্যায়বিচার আল্লাহ একদিন করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি,’ বলেন খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়া বলেন, ৫ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনের প্রতিবাদে তাঁরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি শুরু করেন। কিন্তু সেই কর্মসূচি চলাকালে যানবাহনে রহস্যজনক বোমা হামলা হয়েছে। এসব হামলায় অনেক নিরপরাধ মানুষ নিহত ও আহত হয়েছে। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, সশস্ত্র পাহারা চলাকালে কীভাবে এসব হামলা হয়?
বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ‘হত্যা, নাশকতা সন্ত্রাস ও লাশের রাজনীতি আমরা করি না। সন্ত্রাস নির্ভর নষ্ট রাজনীতির চ্যাম্পিয়ন আওয়ামী লীগ। মানুষ হত্যা করে তার দায় বার বার বিএনপির ওপর চাপানো হয়েছে। কিন্তু তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারেনি।’
তিনি বলেন, সন্ত্রাস নির্ভর নষ্ট রাজনীতির ধারক আওয়ামী লীগ। যে সরকার ও প্রশাসন সামাজিক উৎসবে নারীদের নিরাপত্তা দিতে জানে না, নারীদের সম্মান জানাতে পারে না তাদের ক্ষমা চাওয়া ও ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়া উচিৎ। বেগম জিয়া বলেন, দেশের পরিস্থিতি এমন যে ক্ষমতাসীন ছাড়া কারও কোন সুবিধা পাওয়ার অধিকার নেই।