চীন মায়ের দুধ খাওয়ানোয় উৎসাহ দিচ্ছে

অনলাইন ডেস্ক, জি নিউজঃ- কি ওয়েনজুয়ান হাসপাতালে শুয়ে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন৷ খুব ভালো লাগছে তাঁর৷ কিন্তু চার মাস পরে কী হবে? চীনে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো আশঙ্কাজনক হারে কমছে৷ সরকার অবশ্য পরিস্থিতির পরিবর্তনের জন্য কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছে৷ চীনের মায়েদের মধ্যে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর প্রবণতা খুব কম৷ কম হবার সবচেয়ে বড় দুটো কারণ কর্মজীবী মায়েদের সন্তানকে ঘরে রেখে বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকা এবং ফিগার সচেতনতা৷ চীনে মাতৃত্বকালীন ছুটি সর্বোচ্চ চার মাস৷ স্বাভাবিক কারণেই কর্মজীবী মায়েরা ওই চার মাস নবজাতকের কাছে থাকেন, তারপর  ফিরে যেতে হয় কর্মজীবনে৷ তখন দাদি বা নানির কাছে থাকতে হয় সন্তানকে৷ কাজের সূত্রে মা থাকে বাইরে৷ সন্তানের বুকের দুধ খাওয়া বন্ধ চীনে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো আশঙ্কাজনক হারে কমছে মায়েদের আরেকটা বড় অংশ মনে করেন, সন্তানকে নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়ালে স্তন আর আকর্ষণীয় থাকবেনা৷ মায়েদের অপারগতা, অবহেলা বা অসচেতনতাকে কাজে লাগাচ্ছে বেবি ফর্মুলা৷ টিনজাত এই দুধ খাওয়ালে বাচ্চাদের লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি – এটা জেনেও অনেক মা বাধ্য হন বিদেশি টিনজাত দুধ খাওয়াতে৷ ফিগারসচেতন মায়েরা তো আগে থেকেই বুকের দুধের বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজতে আগ্রহী৷ সেই আগ্রহ বাড়ছে বলে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর প্রবণতা কমছে৷ বড় দুশ্চিন্তা হলো, মাতৃত্বকালীন ছুটির সময়, অর্থাৎ সন্তান জন্ম নেয়ার ঠিক পরের সময়টাতেও ইদানিং চীনের মায়েরা ঘরে তোলেন বেবি ফর্মুলা৷ ইউনিসেফ, চীনে গত ছয় মাসের মধ্যে মা হওয়াদের মাঝে এক জরিপ চালিয়ে দেখেছে তাদের শতকরা মাত্র ২৮ ভাগ সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ান৷ অথচ এ বয়সের সন্তানদের মুখে বেবি ফর্মুলা তুলে দিলে পরে তার নানা রকমের দুরারোগ্য ব্যাধি হবার আশঙ্কা বাড়ে, বড় হয়ে শিশু মুটিয়েও যেতে পারে৷ এত কিছুর পরও চীনে মায়েদের মধ্যে বেবি ফর্মুলা নির্ভরতা বাড়ছে৷ ২০০৮ সালে দেশি বেবি ফর্মুলা খেয়ে ৬টি শিশু মারা যাওয়ায় মায়েদের আমদানীকৃত বেবি ফর্মুলা কেনার ঝোঁক বেড়েছিল৷ চীনে বেবি ফর্মুলার উৎপাদন বেড়েই চলেছে , সম্প্রতি জানা গেল, নিউজিল্যান্ডের ফন্টেরা কোম্পানির বেবি ফর্মুলা শিশু স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর৷ এ অবস্থায় চীন সরকার বেবি ফর্মুলা আমদানি কমিয়ে মায়েদের বুকের দুধ খাওয়ানোয় উৎসাহিত করছে৷ ২০২০ সালের মধ্যে নবজাতকদের বুকের দুধ খাওয়ানোর হার শতকরা পঞ্চাশ ভাগে নিয়ে যেতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে৷ কর্মস্থলে বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য আলাদা ঘর রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷ সে ব্যবস্থা করার জন্য নিয়োগকর্তাদের নির্দেশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ৷ হাসপাতালে নবজাতকের জন্মের পরই মা-র কাছ থেকে সরিয়ে নেয়া হতো৷ এখন মা-সন্তানকে একসঙ্গে রাখার ব্যবস্থা হবে৷ এছাড়া সেবিকাদের বলে দেয়া হয়েছে তাঁরা যেন মায়েদের বুকের দুধ কেমন করে বাচ্চাদের খাওয়াতে হয় তা শিখিয়ে দেন এবং পাশাপাশি মায়ের দুধের উপকারিতাও ভালো করে বুঝিয়ে বলেন৷ এত করেও কাজ হচ্ছেনা৷ চীনে বেবি ফর্মুলার উৎপাদন এবং ঘরে ঘরে এর প্রতি নির্ভরশীলতা বেড়েই চলেছে৷ তা ছাড়া কর্মজীবী মায়েদের আগের সমস্যাটা তো রয়েছেই৷ তাই চার মাস পর ঠিকই কাজে যোগ দিতে হবে কি ওয়েনজুয়ানকে৷ তখন কীভাবে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াবেন? কি ওয়েনজুয়ান নিজেও তা জানেন না৷ DW   .DE এসিবি/এসবি (এপি) সূত্র: ওয়েবসাইট

 

Exit mobile version