মুহাম্মদ আবু হেলাল, ঝিনাইগাতী ঃ শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে সরকারের ডিজিটাল ক্লাসরুম কর্মসূচী ব্যর্থ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা ও কলেজসহ প্রায় ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের ডিজিটাল ক্লাসের আওতায় আনার জন্য প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি একটি ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, স্পিকার, পেনড্রাইভ, ইন্টারনেট মোডেমসহ প্রায় লক্ষাধিক টাকার প্রয়োজনীয় উপকরণ দেয়া হলেও তা কোনো কাজে আসছে না। অনেক প্রতিষ্ঠানে এসব যন্ত্রপাতির প্যাকেট পর্যন্ত খোলা হয়নি। শিক্ষার্থীদের মাল্টিমিডিয়া ক্লাশ রুমের প্রাথমিক ধারণাও নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাঠদান কার্যক্রম আনন্দময়, সহজবোধ্য ও শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক করে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই- প্রকল্প উদ্ভাবিত মাল্টিমিডিয়া ক্লাশরুম ও শিক্ষকদের দিয়ে ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করে কর্মসূচীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাশরুম করার পদক্ষেপ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রনালয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি একটি ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, স্পিকার, পেনড্রাইভ, ইন্টারনেট মোডেমসহ প্রায় লক্ষাধিক টাকার প্রয়োজনীয় উপকরণ দেয়া হয়েছে ঝিনাইগাতী উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায়। সরকার সরবরাহকৃত এসব যন্ত্রপাতি দিয়ে এখনো শুরু হয়নি মাল্টিমিডিয়া ক্লাস। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষা প্রদানের জন্য দেয়া মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরসহ আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। ডিজিটাল পদ্ধতি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসে কনটেন্ট তৈরি ও পাঠদানের জন্য ল্যাপটপ দেয়া হয়েছে। কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নিজের ব্যক্তিগত কাজ ও বিনোদনের কাজে এগুলো ব্যবহার করছেন। উপজেলার জনৈক কম্পিউটার শিক্ষক নাম না বলার শর্তে জানান, তিনি চলতি বছরের মার্চ মাসে ল্যাপটপ ও সেপ্টেম্বর মাসে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর পেয়েছেন। তিনি এ সময়ের মধ্যে ৬ দিন ডিজিটাল পদ্ধতিতে ক্লাস নেয়ার দাবি করেন। এদিকে শিক্ষার্থীদের দাবি তারা এক দিনও মাল্টিমিডিয়া ক্লাস করতে পারেনি। উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে হতাশাজনক চিত্র। ডিজিটাল ক্লাসের এমন হতাশাজনক পরিস্থিতিতে অসন্তোষ বিরাজ করছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলের মাঝে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিখনের পাশাপাশি দাপ্তরিক কাজেও কম্পিউটারের ব্যবহার নেই। ঝিনাইগাতী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আলহাজ এম আবু ওবায়দা আলী জানান, কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নৈশ্য প্রহরী না থাকায় অনেক শিক্ষকরা মাল্টিমিডিয়া ক্লাসের আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতি বাড়িতে রেখেছেন। মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে কোন ডিজিটাল ক্লাস নেওয়া হয় না বলে এর সত্যতা স্বীকার করেন। কাজেই মালটি মিডিয়া ক্লাশ রুমের যথাযথ বাস্তব প্রয়োগ না হলে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কোন ফল আসবেনা।