তথ্য চুরি রুখতে চাই বাড়তি সাবধানতা

জি নিddddddddddd 11উজ, ডেস্ক ঃ সাধারণ মানুষের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি হলে যে ক্ষতি হতে পারে, বাণিজ্যিক সংস্থার ক্ষেত্রে তার মাত্রা অনেক বেশি – এমনকি অস্তিত্বের সংকটও দেখা দিতে পারে৷ তাদেরই সুরক্ষা দিচ্ছে এক জার্মান সংস্থা৷ কাটরিন ব্যুটনার নিজের প্রয়োজনীয় সব তথ্য সঙ্গে নিয়ে অফিসে আসেন৷ ল্যাপটপে এনক্রিপ্ট করা থাকে সবকিছু৷ পার্টনার শরিফ টিব-কে সঙ্গে নিয়ে তিনি সহজে ওয়েবসাইট তৈরির এক সফটওয়্যার গড়েছেন৷ কোম্পানির নাম ‘পকি পয়েন্ট অফ কনট্যাক্ট’৷ বার্লিনের কেন্দ্রস্থলে একটি অফিসে অন্যান্য প্রোগ্রামারদের সঙ্গে কাজ করেন তাঁরা৷ তাদের বিভিন্ন আইডিয়া এবং ব্যবসায়িক কৌশল এখন অত্যন্ত সুরক্ষিত হার্ডডিস্কে জমা রাখা হয়৷ আগে তাঁরা এত সতর্ক ছিলেন না৷ মাসকয়েক আগে এক তথ্য চুরির ঘটনায় শিক্ষা হয়েছে তাদের৷ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফ টিব বলেন, ‘‘তথ্য সুরক্ষা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ আমাদের ভালো করে তা শিখতে হয়েছে৷ আগে আমরা আমাদের বিভিন্ন আইডিয়া অন্যের সঙ্গে শেয়ার করতাম, ওয়াইফাই-হটস্পট ব্যবহার করতাম – এমনকি কম্পিউটার খোলা ফেলে রাখতাম৷ একদিন দেখলাম আমাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া কিছু তথ্য অন্য একজনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে৷ এরপরই সতর্ক হই৷” এই প্রোগ্রামারদের এক প্রতিদ্বন্দ্বী চুরি করা তথ্য দিয়ে একইরকম আরেকটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন৷ ভাগ্য ভালো যে তারপরও খদ্দেররা তাদের ছেড়ে যাননি৷ ‘পকি পয়েন্ট অফ কনট্যাক্ট’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাটরিন ব্যুটনার বলেন, ‘‘এসব দক্ষতা, জ্ঞানই আমাদের টিকে থাকার অবলম্বন৷ আমরা প্রচণ্ড পরিশ্রম করে এই দক্ষতা অর্জন করেছি৷ এজন্য আমরা অনেক অর্থ বিনিয়োগের ঝুঁকি নিয়েছি, সময় ব্যয় করেছি৷” কাঠামোগত নকশা থেকে শুরু করে উৎপাদন নিয়ন্ত্রণের সফটওয়্যার অবধি বলতে গেলে সকল প্রতিষ্ঠানের সব তথ্য এখন ডিজিটাল মাধ্যমে জমা থাকে৷ যার অর্থ এগুলো হ্যাক হওয়া সম্ভব৷ ব্যার্নহার্ড ভ্যোবকার ব্যস্ত মানুষ৷ তিনি মাঝারি মাপের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তথ্য সুরক্ষা সম্পর্কে পরামর্শ দেন৷ ইউরোপে মার্কিনিদের গোয়েন্দাগিরি তাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে৷ ব্যার্নহার্ড-এর সফটওয়্যারের চাহিদা বেশি এখন৷ এটির ব্যবহারকারীরা সংবেদনশীল তথ্য খুবই নিরাপদ স্থানে জমা রাখতে পারেন৷ ব্রেনলুপ এজি ডাটেনজিশারহাইট সংস্থার প্রধান নির্বাহী ব্যার্নহার্ড ভ্যোবকার বলেন, ‘‘অনেক ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোক্তার একেবারে নিজস্ব কিছু গুণাগুণ রয়েছে৷ এবং অনেক জার্মান গাড়ি নির্মাতার রয়েছে সম্পূর্ণ নিজস্ব কিছু পণ্য৷ যদি তাদের কৌশল বা পণ্যের তথ্য চুরি হয়, তাহলে তারা খুব বিপদে পড়বে৷’ এই তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে একটি সমীক্ষা করেছেন৷ তাতে দেখা গেছে, প্রতি পাঁচজন ক্ষুদ্র বা মাঝারি উদ্যোক্তার মধ্যে অন্তত একজন সাইবার হামলার শিকার হয়েছেন৷ নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এরকম হামলা আরো অনেক হয়েছে কিন্তু টের পাওয়া যায়নি৷ অথচ শুধুমাত্র তথ্য ফাঁসের কারণে একটি প্রতিষ্ঠান অর্ডার হারাতে পারে৷ বিশেষ করে খদ্দেররা যখন মনে করবেন, সংবেদনশীল তথ্য আর নিরাপদে সংরক্ষণ করতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি৷ কর্পোরেট ট্রাস্ট বিজনেস এবং ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিয়ান শাফ বলেন, ‘‘এসব প্রতিষ্ঠান অনেক উদ্ভাবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত৷ উৎপাদন কৌশল এবং প্রক্রিয়া সম্পর্কেও তাদের জ্ঞান অনেক৷ আসলে শিল্পোন্নত এই বিশ্বে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ব্যবধান খুব একটা নেই৷ তথ্যই সব কিছু৷ বিশেষ করে কার কার ভালো সাপ্লায়ার এবং খদ্দের রয়েছে – সে সব খবর হাতিয়ে নিতে চায় চোররা৷” জার্মান সংস্থাগুলোর উপর সাইবার হামলার সঠিক সংখ্যা কেউ জানেনা৷ তবে ফেডারেশন অফ জার্মান ইন্ডাস্ট্রির ধারণা, সারা বিশ্বের হ্যাকারদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য জার্মান শিল্পজগত৷ সংগঠনের প্রতিনিধি ডেবোরা ক্লাইন বলেন, ‘‘শিল্পক্ষেত্রে গুপ্তচরবৃত্তি এবং সাইবার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ায় জার্মান শিল্পাঙ্গনের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা সঠিকভাবে বলা কঠিন৷ তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ধারণা, এসব কারণে বছরে বিশ থেকে পঞ্চাশ বিলিয়ন ইউরোর ক্ষতি হচ্ছে৷ তবে আসল অঙ্কটা আরও বেশি৷” বার্লিনের এই তরুণ উদ্যোক্তারা এখন অবশ্য শুধু তথ্য এনক্রিপশনের উপর ভরসা করছেন না৷ সংকটের সময় তাদের সহায়তা করেছিল খদ্দেরদের সঙ্গে সুসম্পর্ক৷ এই সম্পর্ককে তাই ব্যবসার মূল ভিত্তি মেনে আগাচ্ছেন তাঁরা  ৷   খবর DW DE এর তাঃ-১১-১০-২০১৩

 

Exit mobile version