অনলাইন ডেস্কঃ- যদি প্রশ্ন করা হয় মানুষ কী? উত্তর হতে পারে অনেক কিছুই। তবে সাধারণভাবে যে বিষয়টি সহজেই মস্তিষ্কে ধরা দেয়- তা হলো মানুষ প্রাণীকূলের এমন প্রজাতি যে চিন্তা করতে পারে, যে ঘটনার পরম্পরা বোঝে এবং যে জানে ঘটনার পরিণতি। চিন্তার এই অনিঃশেষ ক্ষমতা তাকে অন্য প্রাণী থেকে পৃথক করে।পৃথিবী একটি প্রেমময়-শান্তিময় জায়গা। এটি অর্থবহ হয় নারী-পুরুষের শাশ্বত ও স্বীকৃত সামাজিক বন্ধনে। ‘দাম্পত্য জীবন’ বলে যা পরিচিত। বৈবাহিক জীবনে এমন দম্পতি বিরল- যাদের জীবনে অন্তত একটিবার ঝগড়া-বিবাদ কিংবা নিদেনপক্ষে তর্ক-যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হয়নি। এই তিক্ত ঘটনার অবতারণা যাতে না হয়, সে জন্য ‘প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিওর’ নীতিই মেনে চলা উত্তম।তারপরও যদি বেঁধেই যায় এমন কোন বিবাদ, তবে আপনি কী করবেন? আপনি কি আপনার সারা জীবনের সঙ্গী স্বামী বা স্ত্রীকে এমন কোনো কথা বলবেন যাতে তিনি ঘায়েল বা ছোট হন? যদি করতে চান সেটা আপনার ব্যাপার। কিন্তু মনে রাখতে হবে, সংসার জীবনে সব দম্পতিকেই ভাঙ্গা-গড়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, অতিক্রম করতে হয় নানা বন্ধুর পথ। এখানে সুসময় যেমন আছে তেমনি রয়েছে দুঃসময়ের হাতছানি।একটি সুখী ও সতেজ সম্পর্কের মধ্যেও রয়েছে মতপার্থক্য, রয়েছে পছন্দ-অপছন্দের অমিল। ভাল সময়েও তাই চেষ্টা করবেন কিছু বিষয় মনে রাখার। চেষ্টা করবেন এমন কিছু শব্দ ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে যা একটি তিক্ত ঘটনার জন্ম দিতে উৎসাহিত করে। এখানে এমন ৫টি কথা মনে করিয়ে দেওয়া হলো যা ঝগড়ার সময় কখনও উচ্চারণ করতে নেই: ১. ‘এটা তোমার ভুল‘ : অন্যকে দোষ দেওয়া একটি সাধারণ ঘটনা যা দাম্পত্যকলহে হয়ে থাকে। আপনি যদি অন্যায়ভাবে (হতে পারে আপনার দৃষ্টিতে ন্যায়) কেবল সঙ্গীকে দোষারোপ করেন তবে তা প্রত্যাঘ্যাত হয়ে আপনার দিকেই ফিরে আসবে। এতে সমস্যা আরো ঘনীভূত হবে। তাই অন্যকে দোষ দেওয়ার পূর্বে ভাবুন কীভাবে এর সমাধান বের করা যায়। উপলব্ধি করুন সঙ্গীকে, স্পর্শ করার চেষ্টা করুন তার ভেতরের মানুষটিকে।২. ‘আবারও তুমি একই কাজ করলে‘ : দম্পতির মধ্যে ঝগড়ার কোনো এক পর্যায়ে অনেকেই একে অন্যকে এমন কাজের জন্য অভিযোগ করেন যা আসলে তিনি করেননি। উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ ছাড়া শুধু সন্দেহের বশে এ ধরনের অভিযোগ পরাস্পরিক ভুল বোঝাবুঝি ও সন্দেহের সৃষ্টি করে। কারো পেছনের বিষয় তুলে না এনে বরং সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হোন।৩. ‘আমি ডিভোর্স চাই‘ : স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়ার সময় সবচেয়ে মারাত্মক শব্দগুচ্ছ এটি। দম্পতির মধ্যে বিবাদের চরমতম মুহূর্তে ব্যবহৃত হয় এ ধরনের উক্তি। প্রকৃতপক্ষে আপনি হয়তো গুরুত্ব দিয়ে বা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হিসেবে এটি বলেননি। তবু এটি অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের ক্ষেত্রে। বিশেষ করে আপনি যদি বারবারই এ ধরনের উক্তি করেন তবে কতবার আর ক্ষমা চাইবেন। সুতরাং একবার যদি বলেই ফেলেন তাহলে আন্তরিকভাবেই ক্ষমা চান। আর প্রতিজ্ঞা করুন আর কখনও এ ধরনের কথা উচ্চারণ করবেন না মুখে। কারণ ক্ষমা চাওয়ার পরও কিন্তু এর থেকে দুজনের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি হয়।৪. ‘তুমি একটা নির্বোধ বা কাপুরুষ‘ : এ ধরনের ব্যক্তিগত আক্রমণ বড্ড বিচলিত করে দেয় সঙ্গীকে। দাম্পত্য জীবনে ঝগড়া-বিবাদ হতেই পারে, কিন্তু সঙ্গী যদি এমন কিছু শব্দ বলে যার আঘাত অনেক দিন ধরে পীড়া দেয় তবে এ থেকে এক ধরনের হীনম্মন্যতা তৈরি হয়। একবার ভাবুন তো, আপনি কি চান আপনার স্বামী বা স্ত্রী অন্যের সামনে নিজেকে ছোট ভাবুক। সুতরাং এ ধরনের মন্তব্য দিয়ে হয়তো আপনার অলক্ষ্যেই আরেকজনের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে ছোট করলেন আপনার জীবন সঙ্গীকে।৫. ‘এখনই আমার কথার উত্তর দিতে হবে‘ : বিবাদকালে এ ধরনের উক্তি তখনই করা হয়, যে মুহূর্তে আপনার স্বামী বা স্ত্রী কোনো একটা ব্যাপার নিয়ে কথা বলতে চাইছেন না। আসলে সব বিষয়ে কি সব সময় কথা বলা যায় বা সব বিষয়কে ব্যাখ্যা করা যায়? বিশেষ করে মেজাজ যখন একেবারে মাথার ব্রহ্মতালুতে ক্রমাগত আঘাত করে? তার চেয়ে যে কথাটি প্রথমেই বলেছি, চিন্তা করুন। এটি এমন একটি উপাদান কেবলমাত্র যা সব ঝামেলা থেকে উদ্ধার করতে পারে আপনাকে। সুতরাং এমন পরিস্থিতিতে শান্ত হোন, চিন্তাকে যুক্তি দিয়ে উপস্থাপন করুন এবং বলার পূর্বে আবারও ধীর-শান্তভাবে চিন্তা করুন- সমাধান আসবেই। সূত্র-ইন্টারনেট,তাঃ-২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ।