স্পোর্টস ডেস্ক:- পুল এ-তে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে স্কটল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় জয় পেল বাংলাদেশ। এরফলে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার স্বপ্ন জিইয়ে রাখল টাইগাররা। নিউজিল্যান্ডের নেলসনে স্যাক্সটন ওভাল স্টেডিয়ামে স্কটিশদের ছুড়ে দেয়া ৩১৯ রানের বিশাল পাহাড় ১১ বল ও ৬ উইকেট হাতে রেখেই টপকে যায় বাংলাদেশ। তামিম, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ ও সাকিবের ফিফটিতে দ্বিতীয়বারের মতো তিনশ’ রান তাড়া জিতল টাইগাররা।
এর আগে স্কটল্যান্ডের ছুড়ে দেয়া ৩১৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকার। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে জোস ড্যাভের বলে উইকেটের পেছনে ক্রুসের গ্লাভসবন্দি হয়ে ফেরেন সৌম্য সরকার। মাত্র দুই রানে সৌম্য সরকারের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে তামিম-রিয়াদ জুটি ভালোই এগিয়ে নেন দলকে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের রেকর্ড জুটি গড়ে ওয়ার্ডল’র বলে বোল্ড হয়ে রিয়াদ সাজঘরে ফিরলেও, ততক্ষণে বাংলাদেশের দলীয় স্কোর ১৪৪। এ দু’জন মিলে ১৩৯ রানের জুটি গড়েন। আউট হওয়ার আগে ৬টি চার আর একটি ছক্কার সাহায্যে ৬২ রান করেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। আর ৩২তম ওভাবে ড্যাভের বলে এলবি’র ফাঁদে পড়ে আউট হওয়ার আগে ওপেনার তামিম ইকবাল সংগ্রহ করেন ৯৫ রান। তামিমের এ ইনিংসটি বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের একক ইনিংস সর্বোচ্চ রান। এর আগে অবশ্য তামিম ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নিজের চার হাজার রান সংগ্রহ করেছেন। এরপর দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম। ইয়ান ওয়ার্ডলর বলে লংঅফ দিয়ে বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে অর্ধশতকে পৌঁছান মুশফিকুর রহিম। ৬০ রান করে ফিরে যান তিনিও। এরপর দলের দায়িত্ব নেন অলরাউন্ডার সাকিব ও সাব্বির রহমান। তারা দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে ফেরেন। সাকিব ৫২ ও সাব্বির ৪২ রান করেন।
এদিকে ফিল্ডিং করার সময় দলের ওপেনার এনামুল হক বিজয় কাঁধে চোট পান। তাকে এমআরআই করার জন্য হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তার পরিবর্তে তামিম ইকবালের সঙ্গে ওপেন করতে এসেছিলেন সৌম্য সরকার। তবে ৫ বল খেলে ২ রান করেই আউট হন তিনি।
এর আগে ওপেনার কাইল কোয়েটজারের রেকর্ড সেঞ্চুরিতে ভর করে কোন টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে দলীয় সর্বোচ্চ রান করে স্কটল্যান্ড। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে স্বটিশদের সংগ্রহ ৩১৮ রান ৮ উইকেট হারিয়ে। এটি তাদের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তৃতীয়ও বিশ্বকাপে প্রথম সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে স্কটল্যান্ডের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরি করেছেন কাইল কোয়েটজার। শুধু সেঞ্চুরি করেই থামেনি তিনি আউট হওয়ার আগে স্কটল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৫৬ রান করেন তিনি। নাসির হোসেনের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হওয়ার আগে তিনি ১৩৪ বল খেলেন, হাঁকান ১৭টি চার ও ৪টি ছয়ের মার। তার সেঞ্চুরিতে ভর করে বাংলাদেশের বিপক্ষে বড় সংগ্রেহের ভিত পায় স্কটল্যান্ড। কাইল কোয়েটজার আউট হওয়ার আগে অধিনায়ক ১৪১ রানের জুটি বেঁধেছিলেন। কিন্তু প্রেস্টন মমসেন ৩৯ রানে আউট করেছেন নাসির হোসেন সেই জুটি ভেঙে দলের জন্য প্রথম স্বস্তি এনে দেন। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে স্কটল্যান্ডের সংগ্রহ ৮ উইকেটে হারিয়ে ৩১৮ রান।
অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের বোলিং ব্যর্থতার মাঝেও তাসকিন আহমেদ নেন তিনটি উইকেট। এছাড়া নাসির হোসেন পান দুটি উইকেট। সাকিব আল হাসান, মাশরাফি ও সাব্বির পান একটি করে উইকেট। স্কটিশদের হয়ে ১৫৬ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলায় ওপেনার কোয়েটজার ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন।
এদিকে, পুল-এ আজকের খেলায় জয়ের ফলে বাংলাদেশ নিজের চার খেলা শেষে ৫ পয়েন্ট অর্জন করেছে। আগামী সোমবার তারা মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ডের। ইংল্যান্ড সমান সংখ্যক খেলা খেলে সংগ্রহ করেছে মাত্র ২ পয়েন্ট। ফলে ওই ম্যাচে ইংল্যান্ডকে হারানোর কোনো বিকল্প নেই টাইগারদের। কারণ, বাংলাদেশের শেষ খেলা স্বাগতিক নিউ জিল্যান্ডের সঙ্গে এবং এই দলটি নিজেদের মাঠে সব সময় শক্তিশালী অবস্থানে থাকে। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের বাকি দুই খেলায় প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। আফগানিস্তানকে ইংল্যান্ড হারাবেই- এমন একটি অবস্থা ধরে নিলে বলা যায়, বাংলাদেশ ইংল্যান্ডের কাছে হেরে গেলে শেষ খেলায় নিউজিল্যান্ডের কাছেও পরাজিত হলে ৫ পয়েন্ট নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা থেকে বঞ্চিত হবে।খবর:রেডিও তেহরান,অন্যদিকে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানকে হারিয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শেষ আটে চলে যাবে ইংলিশরা।
দ্বিতীয় জয় পেল বাংলাদেশ: ইংল্যান্ডকে হারালেই কোয়ার্টার ফাইনাল
Share This