অনলাইন ডেস্ক ঃ- ধর্ষণের অভিযোগ তোলায় এবং সে খবর প্রচার করায় অভিযোগকারিনীসহ তিন সাংবাদিকের শাস্তি পেতে হবে সোমালিয়ায়৷ বিজ্ঞানসম্মত নয় এমন উপায়ে অভিযোগ যাচাই করে শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে৷ বিষয়টি আদালতে গড়ায়৷ মামলার রায়ে মানহানি, মিথ্যা বলা এবং রাষ্ট্রের অবমাননার অভিযোগে উল্টো ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয় ওই তরুণীকে৷ এছাড়া খবরটি প্রচার করায় ‘রেডিও শাবেলে’-র সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক এবং ব্যবস্থাপকের যথাক্রমে এক বছর ও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে৷ রায় ঘোষণার সময় বিচারক হাসি এলমি নুর জানান, তরুণী সাংবাদিক শাস্তির সময় নিজের বাড়িতেও অন্তরীণ থাকতে পারবেন৷ তবে ‘রেডিও শাবেলে’-র ব্যবস্থাপক এবং সাংবাদিককে জেল খাটতে হবে৷ কারাদণ্ডাদেশ থেকে তাঁরা রেহাই পেতে পারেন প্রতি দিনের জন্য এক ডলার করে জরিমানা দিলে৷ রেডিও শাবেলে’-র তরুণী সাংবাদিক তাঁকে ধর্ষণের অভিযোগ তোলার পরই বিষয়টি নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল৷ তাঁকেসহ তাঁর পাশে দাঁড়ানো প্রত্যেকটি মানুষকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে – এ অভিযোগ পাবার পর ঘটনাটি নিরপেক্ষভাবে এবং যথাযোগ্য গুরুত্ব সহকারে তদন্তের দাবি জানিয়েছিল হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ)৷ তারপর অভিযোগ উত্থাপনকারী সাংবাদিকের যৌনাঙ্গে আঙুল দিয়ে এক ধাত্রী জানান, ধর্ষণের অভিযোগ মিথ্যা৷ ধর্ষণের অভিযোগ যাচাইয়ের এই পদ্ধতিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো অনেক আগে থেকেই ‘অবৈজ্ঞানিক’ বলে আসছে৷ সোমালিয়া সরকার বিজ্ঞান এবং চিকিৎসা শাস্ত্রের অগ্রগতির এ যুগে তারপরও সেই পদ্ধতিতেই অভিযোগ যাচাই করেছে৷ এমন পদ্ধতিতে যাচাইয়ের পর উল্টো অভিযোগ তোলা নারীকেই দেয়া হয়েছে ছয় মাস অন্তরীণ থাকার আদেশ৷ অগ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে অভিযোগ যাচাইয়ের পর তাঁকে মিথ্যা বলা, অভিযুক্তদের মানহানি করা এবং রাষ্টীয় প্রতিষ্ঠানের অবমাননার অভিযোগে শাস্তি ঘোষণা করলেও অভিযুক্তদের কাউকেই এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি৷ সোমালিয়ায় ধর্ষণের অভিযোগ তোলা নারীকেই শাস্তি দেয়া নতুন কিছু নয়৷ গত ফেব্রুয়ারিতে কয়েকজন আফ্রিকান ইউনিয়ন সেনার বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ তুলেছিলেন এক নারী৷ সে খবরও প্রচার করেছিলেন এক সাংবাদিক৷ অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় না এনে সেবার অভিযোগ তোলা নারী এবং সে খবর প্রকাশ করা সাংবাদিকের এক বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছিল আদালত৷ যৌনাঙ্গে আঙ্গুল দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ যাচাইয়ের প্রক্রিয়াকে ‘অবৈজ্ঞানিক এবং অবমাননাকর’ আখ্যা দিয়ে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছিল এইচআরডাব্লিউ৷ অথচ ছয় মাস পরের আরেক ঘটনায় একই প্রক্রিয়ায় অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা করা হলো৷ পূর্ব আফ্রিকার দেশ সোমালিয়ায় সংবাদ কর্মীদের নিহত হওয়াও প্রায় নিয়মিত ঘটনা৷ গত বছর নিহত হন আঠারো জন সাংবাদিক৷ এ বছর এ পর্যন্ত হত্যা করা হয়েছে কমপক্ষে ছয় জন সাংবাদিককে৷ সোমালিয়া সরকার অবশ্য বরাবরই দাবি করে, দেশে নারীর নিরাপত্তা এবং সাংবাদিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে৷ খবর DW DEএর