স্থানীয়দের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মকর্তা, কর্মচারীদের ম্যানেজ করে তারা দখল বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। প্রকাশ্য দিবালোকে বেপরোয়া দখলের মহোৎসব চললেও ওই দখলদাররা এতটাই প্রভাবশালী যে তাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস নেই সাধারণ জনগণের। তাই দখলদারদের অবৈধ কাজে বাঁধা দেওয়ার ইচ্ছে থাকলেও বিভিন্নভাবে হয়রানির আশঙ্কায় চোখের সামনে মুখ বুজে সহ্য করছেন সাধারণ জনগণ।
সরেজমিন ও তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার একমাত্র নদী বন্দর পয়সারহাট সেতুর পূর্বপাড়ে নদীর একটি অংশে পাইলিং ও ইট বালু দিয়ে ভরাটের মাধ্যমে দখলে করে ইট বালুর ব্যবসা করছে স্থানীয় বাদশাহ্ বক্তিয়ার। দীর্ঘদিনেও নদী খনন না করা ও পয়সারহাট নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণের ফলে নদী মরে যাওয়ায় নদীর বিভিন্নস্থানে চর জেগে ওঠায় ওই নৌবন্দরে ঢাকা গামী লঞ্চ চলাচলে বিঘœসহ বিভিন্ন খালের স্রোত কমে যাওয়ায় ইরিগেশনের সমস্যা হচ্ছে। তার উপর দখলদারদের কারণেই নদী আরও ভরাট হয়ে যাচ্ছে। একই নদীতে বাগধা হাটে নদীর পূর্বপাড়ে নদী দখল করে পাকা ভবন নির্মাণ করছেন আব্দুল এমপি তালুকদার মো. ইউনুসের বেয়াই কাদের মিয়া, মাওলা মিয়া ও ভায়রা আকবর মিয়া।
উপজেলা সদরে সম্প্রতি দু’দু’বার ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাজারের মধ্যে সরকারী জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণের ফলে গলি ছোট হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকিয়ে কাজ করতে না পারায় ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে। অগ্নিকান্ডের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্ল¬াহ্ এমপি, বরিশাল জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল আলম বন্দরের দোকান ও গলি নির্মাণে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিলেও সেই নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারী জায়গা দখল করে চলছে নির্মাণ কাজ। অবৈধ ওই নির্মাণ কাজে সরকার দলীয় কয়েক নেতা বাঁধা দিলেও তা উপেক্ষা করে কাজ চলছে। উপজেলা সদর বন্দরের একমাত্র ঘাটলাটিও এখন দখলদারদের কারণে ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে গেছে। উপজেলা সদর ছাড়াও সাহেবেরহাট, গৈলার রথখোলা, ছয়গ্রাম বাজার, বাশাইল হাট, আস্কর কালীবাড়ি, দুশুমী হাট, রাজিহার বাজার, বারপাইকা করিম বাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রভাবশালী দখলবাজরা একটি মহলকে ম্যানেজ করে সরকারী জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ করে রাতারাতি বিক্রি করে দিচ্ছে। দখলকৃত জায়গা দখলবাজরা তদের পৈতৃক, ক্রয়কৃত, ডিক্রি করা ইত্যাদি ব্যাখ্যা দিলেও জায়গার প্রকৃত মালিক কে তার কোন হদিস পাওয়া যায়না।
এব্যাপারে এসি (ল্যান্ড) এর অতিরিক্ত দায়িত্বরত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবী চন্দ বলেন, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল বাগধায় গিয়েছিলেন। কাগজপত্র পর্যালোচনায় ওই জায়গা তাদের রেকর্ডীয়। পূর্বে নদীতে ভেঙেছিল, এখন চর জেগে ওঠায় তারা কাজ করছে। নদী দখল করে বালুর ব্যবসার ঘটনাস্থল সম্পর্কে তিনি অবগত নন বলে জানান।