নড়াইল-নওয়াপাড়া মহাসড়কের বেহাল দশা

himelমোঃ হিমেল মোল্যা, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধিঃ নড়াইল থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাণিজ্য নগরী নওয়াপাড়া হয়ে অথবা ফুলতলা হয়ে বিভাগীয় শহর খুলনা যেতে গুরুত্বপূর্ণ সড়কের নাম নড়াইল-ফুলতলা সড়ক। যা নড়াইল-নওয়াপাড়া সড়ক বলে ও অধিক পরিচিত। জন গুরুত্বপূর্ণ এই আঞ্চলিক সড়কটি দিন দিন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
সড়কের নড়াইল শহরের রূপগঞ্জ র্ভিক্টোরিয়া কলেজের মোড় থেকে গোবরা বাজার পর্যন্ত সাত কিলোমিটার সহ অধিকাংশ স্থানে পিচ উঠে সড়কের মাটি ও বালি বের হয়ে গেছে। রাস্তার অধিকাংশ জায়গায় তৈরী হয়েছে বড় বড় খাদ ও গর্ত। প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে এই রাস্তায় চলাচল করছে কয়েক’শ যাত্রীবাহী বাস ও মালবাহী পরিবহন।
পরিবহন সংশ্লিষ্ট শ্রমিক ও মালিকেরা বলছেন, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য প্রতিনিয়ত চালকদের দোষারোপ করা হলেও নড়াইল-নওয়াপাড়া সড়কের বেহাল দশার কারণেই যত্রতত্র দুর্ঘটনা ঘটছে। তাছাড়া গাড়ির পাতি সহ নানা ধরনের ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। যে গাড়িটি ১০ বছর ভালোভাবে চলার কথা তা ৫ বছরে একেবারে অচল হয়ে যাচ্ছে । দীর্ঘ ৫ বছরে সড়কটির কোন সংস্কার কাজ না করায় একেবারে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে ।
এই সড়ক দিয়ে নড়াইল শহরের গোবরা, সেখহাটি, সিংগাশোলপুর, বিছালী ইউনিয়সহ নড়াইলের দক্ষিণাঞ্চলের অন্তত ১ লক্ষ ২০ হাজার জনসাধারণের নড়াইল শহরের প্রবেশ পথ। তাছাড়াও বিভাগীয় শহর খুলনা যেতে হলে নড়াইলের জনসাধারণকে ২৫ কিঃ মিঃ পথ বেশি ঘুরে নড়াইল-ধলগা-বসুন্দিয়া-নওয়াপাড়া-ফুলতলা হয়ে খুলনা যেতে হয়। নড়াইল-নওয়াপাড়া সড়কটি চলাচলের উপযোগী হলে ২৫ কিঃ মিঃ পথ কম পাড়ি দিয়ে সহজে নড়াইলের অন্তত এক লক্ষ ২০ হাজার মানুষের বিভাগীয় শহরের সাথে যোগাযোগ সহজ হয়। রাস্তায় চলাচলকারী যাত্রীদের বক্তব্য, এই রাস্তায় ২০ মিনিটের পথ যেতে অন্তত ১ ঘণ্টা সময় লাগে।
তাছাড়া এই রাস্তায় চলতে গিয়ে সবসময়ই দুর্ঘটনায় পড়ার আতঙ্কে থাকতে হয়। রাস্তাটি মেরামত করলে নড়াইল থেকে খুলনা যেতে অনেক সহজ হবে। রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় ২৫ কিঃ মিঃ পথ বেশে ঘুরে খুলনা যেতে হচ্ছে। বার বার দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রশাসনের কোন মাথা ব্যাথা নেই।
জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী ২৬ কিঃ মিঃ দীর্ঘ নড়াইল-নওয়াপাড়া সড়কটি আগে জেলা পরিষদের আওতাধীন ছিল। অন্তত ১৫ বছর আগে এটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় আসে। দীর্ঘদিন এই সড়কের পূর্ণাঙ্গ নির্মাণ সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি এই রাস্তাটি এই আঞ্চলিক মহাসড়ক হিসেবে ডিপিপি প্রণয়ন করে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সড়কটিকে গত অর্থবছর থেকে সবুজ পাতা প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
নড়াইল জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহম্মেদ খান বলেন, এভাবে চললে অচিরেই এই রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তিনি আরো বলেন, নানা সময়ে সড়ক বিভাগকে অবহিত করলে তারা অনুন্নত ইট দিয়ে কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে চলে যান, যা কয়েক দিনের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়।
জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাস বলেন, এতবড় রাস্তা মেইনটেইন্স এর টাকা দিয়ে সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ৪৫ কোটি টাকার নড়াইল-নওয়াপাড়া সড়কের একটি প্রকল্প পেশ করা হয়েছে। প্রকল্পটি পাশ হলে আগামী বছর নাগাদ এই সড়কের কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন।

Exit mobile version