লাইফস্টাইল ডেস্কঃ- বিয়ের পর দুই বছর পাড় হয়ে হয়েছে শাহেদ-প্রিয়ার, ভালোই চলছে সবকিছু। এরই মধ্যে সেদিন সকালে শাহেদের মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার ফোন এলো অপরিচিত একটি নম্বর থেকে। প্রিয়া দেখলো শাহেদ ফোনটি রিসিভ করছে না। প্রিয়া ভাবলো হয়তো শাহেদের অফিসের কোনো ফোন… সে প্রতিদিনের মতো শাহেদের বাইরে যাওয়ার জোগার করতে ব্যস্ত হয়ে গেল। সব ঠিকঠাক, হঠাৎ প্রিয়া লক্ষ করে সে যখন অন্য ঘরে থাকে তখন শাহেদ যেন কার সঙ্গে কথা বলে। তাকে দেখে দ্রুত ফোনটি কেটে দেয়, প্রিয়া জানতে চায় কার ফোন ছিল? উত্তর দিতে কেমন যেন গলা কেঁপে ওঠে শাহেদের। সে একবার বলে অফিসের ফোন তো আরেকবার বলে বন্ধুর। এটা বলে যখন বুঝতে পারে কিছু একটা লুকাচ্ছে এটা প্রিয়া বুঝতে পারছে, সে তখন রেগে যায়। আর তাকে অবিশ্বাস করা হচ্ছে বলে উল্টো প্রিয়াকেই বকা দেয়। প্রিয়া শাহেদকে কখনো এই রূপে দেখেনি। এতো বিশ্বাস, ভালোবাসা, একসাথে অনেক কিছু করার স্বপ্ন সবই তাহলে মিথ্যা হতে চললো…তার সুখের সংসার এভাবে ভেঙ্গে যাবে? প্রিয়ার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে। তারপর প্রিয়া খোঁজ নিয়ে জানে বর্ষা নামের একটি মেয়ের সঙ্গে শাহেদ নিয়মিত ফোনে কথা বলে, মাঝে মাঝে দেখাও করে। এটা জানার পরে শাহেদ সম্পর্কে আর কিছু জানার মতো মানসিক অবস্থা প্রিয়ার ছিল না… আমরা নিশ্চিন্তে আমাদের স্বামী, স্ত্রী, ভাইবোন আর সন্তানদের বিশ্বাস করি। আমরা দেখি নিয়মিত তারা কাজের জন্য বের হচ্ছে সময় মতো ফিরেও আসছে কিন্তু আসলে তারা অন্য রকম অসামাজিক কোনো কাজে জড়িয়ে পড়ছে কিনা তার কি খোঁজ রাখছি? পরিবারের একজনের এধরনের পরকীয়ার সম্পর্ক ধ্বংস করে দিতে পারে ব্যক্তি এবং পারিবারিক বিশ্বাস আর শ্রদ্ধার সম্পর্ক। বিশেষজ্ঞদের মতে, মিথ্যা মোহের বশবর্তী হয়ে পরকীয়ার মতো একটি সামাজিক ব্যাধিতে আক্রান্ত না হয়ে, বিবাহিত জীবনকে আরও সুন্দর এবং সুখী হতে যে বিষয়গুলোর আমাদের চর্চা করতে হবে।
সততা-সম্পর্কের ক্ষেত্রে মূল স্তম্ভ হচ্ছে সততা। প্রতিটি সম্পর্কের বিষয়ে সততা দেখাতে হবে। একজনকে অন্যজনের অনেক কাছে নিয়ে আসবে যখন সে বলতে পারবে,‘যাই হোক তুমি আমার সম্পর্কে সত্যটাই জানবে’।
ক্ষমা-একদিনে কোনো সম্পর্ক গড়ে ওঠে না। কোনো ভুল হলে প্রথমেই সম্পর্ক ভেঙ্গে দেওয়ার চিন্তা না করে সংশোধনের সুযোগ দিতে হবে।
বোঝাপড়া-স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে চমৎকার বোঝাপড়া থাকাটা খুব জরুরি।
বিশ্বাস-এমন কিছু কখনো করা যাবে না যাতে করে দুজনের মধ্যে বিশ্বাস নষ্ট হয়ে যায়। শুধুমাত্র অবিশ্বাসই একটি সম্পর্ক ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
সময় কাটানো-একসঙ্গে সময় কাটাতে আগ্রহী হতে হবে। দুজনের একান্ত সময়টুকু আনন্দময় করে তুলতে নতুন নতুন পরিকল্পনা করতে হবে।
বন্ধুত্ব- ‘বিয়ের আগে আমরা খুব ভালো বন্ধু ছিলাম’। তো, বিয়ের পরে কী হলো? বিয়ের পর সম্পর্কটাকে আরও মজবুত করতে চাই দুজনের নিবিড় বন্ধুত্ব।
ধৈর্য- দাম্পত্য জীবনের পুরো সময়টাই হানিমুন মুডে থাকতে পারবো…এটা ভাবলে বড় ধরনের ধাক্কা খেতে হতে পারে। দুঃসময় আসতে পারে, এমন অবস্থায় ভেঙ্গে না পড়ে ধৈর্য ধরতে হবে।
এক বিয়েতে বিশ্বাস-এক সঙ্গীর সঙ্গেই সারাজীবন কাটানোর জন্য মনস্থির করতে হবে।
ভালোবাসা -সব সম্পর্কের মূলে থাকে ভালোবাসা। সঙ্গীর জন্য ভালোবাসা থাকতে হবে এবং সেই ভালোবাসার প্রকাশও করতে হবে। তবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে এরকম অনেক বিষয় নিয়েই সন্দেহ দেখা দেয়, যেগুলোর হয়তো তেমন বাস্তব ভিত্তি নেই। তাই সন্দেহ করার আগে বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কথা বলে বা খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হন। আমরা কখনোই চাই না সুখের সংসার কোনো সন্দেহে ভেঙ্গে যাক। কিন্তু এটাও হওয়া উচিৎ নয় যে দিনের পর দিন একজনকে ঠকিয়ে অপরাধী পার পেয়ে যাবে। সূত্র-ইন্টারনেট।