বিয়ে করার ইচ্ছে প্রকাশের পর শ’ শ’ পাত্র তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল।
দেশ-বিদেশের বহু আগ্রহী ব্যক্তি তার মোবাইল ফোন, ই-মেইল ও ফেসবুকের মাধ্যমে প্রস্তাব পাঠিয়ে এখণ হতাশ। কারণ বিদিশাই এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি।
বিদিশা বিয়ের জন্য পাত্র খুঁজছেন এই সংবাদ প্রকাশের পর থেকে তার কাছে বিয়ের প্রস্তাবের ফোন যেতে শুরু করেছে। এখনও তা অব্যাহত আছে। একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকায় এ সম্পর্কিত খবর প্রকাশের পর থেকেই বিদিশা ফোন ধরতে ধরতে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছেন।
এত মানুষ ফোন করছে যে, বিয়ের প্রস্তাবে পাগল হয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, বিয়ের জন্য যারা প্রস্তাব দিয়েছেন তাদের মধ্যে ব্যবসায়ী বেশি।এছাড়াও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার যন্ত্রণায় আরও অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি।
বিদিশা বলেন, আমি আর যা-ই হোক কোন বিবাহিত লোককে বিয়ে করবো না। বিয়ে করবো না কোন আশি বছরের পুরুষকেও। যে পুরুষ লোকভয়ে বউকে পুলিশে ধরিয়ে দেয় ওই ধরনের কাপুরুষ লোককে আমি বিয়ে করতে রাজি নই। এরশাদ কাপুরুষ। তিনি ভয়ে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিয়েছিলেন আমাকে। সতীনের সংসার করার কোন ইচ্ছা আমার নেই। সে সংসারের যন্ত্রণা আমি দেখে এসেছি।
বিদিশা আরও বলেন, আমি যাকে বিয়ে করতে চাই। তাকে অবশ্যই অবিবাহিত ও ইন্টেলেকচুয়াল হতে হবে, বয়স আমার চেয়ে একটু বড় হলেই হবে, লেখাপড়া জানতে হবে, ভাল একটা মনের মানুষ হতে হবে, যে আমার সন্তানদের মেনে নেবে, আদর করবে, নিজের সন্তানের মতো ভালবাসবে। এ নিয়ে কোন রকম ঝামেলা করবে না। এছাড়াও তাকে আমাকে বোঝার মতো মন থাকতে হবে। টাকা পয়সা ধন সম্পদের ব্যাপারে বিশেষ কোন আগ্রহ নেই।
বলেন, ক্ষমতাশালী, প্রভাবশালী, ধনাঢ্য ব্যক্তির বউ হয়ে দেখেছি তারা সব পারে। নিজের স্বার্থের জন্য বউকে অপমানিত বোধ করতে দ্বিধা করে না। ওই ধরনের অভিজ্ঞতা আর চাই না। বিদিশা জানান, তিনি মোবাইল ফোন ও ফেসবুকের মাধ্যমে এবং ই-মেইলেই বেশি প্রস্তাব পেয়েছেন।
কোথাও গেলে সবাই পাত্রের কথা জানতে চাইবে এ কারণে তিনি কিছুটা লজ্জাও পেয়েছেন। বলেন, বিয়ে করবো এটা কেমন ভাবে নেবে মানুষ তাই ভাবছি। এরশাদ তার বিয়ে করতে চাওয়ার খবর কেমন করে নিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে তো রেগে আগুন। সে নিজে সব করবে আমি কিছু করলেই তার ভাল লাগবে না। বিয়ে করতে চাওয়াটাকেও তিনি স্বাভাবিক ভাবে নেবেন না।
ট্যাবলয়েড পত্রিকাটিও সংবাদ ছেপে অনেকটাই বিপাকে পড়ে যান। কারণ পাত্ররা একের পর এক ফোন করে বিদিশাকে বিয়ের আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং পাত্ররা নিজেদের যোগ্যতা, বিদিশাকে ভাল লাগার কারণ বর্ণনা করে নিজেদের নাম বিদিশার কাছে পাঠানোর অনুরোধ জানান।
নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা ঢাকার গাড়ি ব্যবসায়ী এস আদ্যাক্ষরের একজন ৪৫ বছর বয়সী বিবাহিত পুরুষ তার আগ্রহের কথা জানিয়ে বলেন, বিদিশাকে ভীষণ ভাল লাগে। তার কথাগুলো পড়ে তার জন্য খুব মায়া হয়েছে। তাই তাকে বিয়ে করতে চাই। নিজের যোগ্যতা সম্পর্কে বলেন, গাড়ি ব্যবসা থাকায় বিদিশাকে নিয়ে সংসার চালাতে অর্থ কোন সমস্যা হবে না।
এজন্যই বিদিশাকে বিয়ে করার সাহস দেখাচ্ছি। তিনি বলেন, বহু দিন থেকেই তার প্রতি আমার বিশেষ ভাল লাগা ছিল। নিজে বিবাহিত কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, বিয়ে করেছিলাম। এরশাদ সাহেব যেমন বিদিশাকে কষ্ট দিয়েছেন আমার স্ত্রীও আমাকে ছেড়ে অন্য পুরুষকে বিয়ে করতে যাচ্ছে। আমাদের ডিভোর্স হয়নি। সেপারেশনে আছি।
ঢাকার রায়েরবাগে ও নারায়ণগঞ্জে নিজস্ব বাড়ি থাকার কথা উল্লেখ করে বলেন, পাত্র হিসেবে বিদিশা আমাকে পছন্দ করলে যে কোন সময়ই তার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে রাজি আছি।
লালবাগের প্লাস্টিক ব্যবসায়ী এ. আর. বলেন, আমার বয়স ৫০। অবিবাহিত। বিদিশাকে পছন্দ করি, কারণ সে দেখতে খুবই সুন্দরী। স্মার্ট। সাহসী। আশা করি পরিচয় হলে, সামনাসামনি দেখা হলে বিদিশা আমাকে পছন্দ করবেন। নিজের সেল ফোনের নাম্বার জানিয়ে তিনি নাম্বারটি বিদিশাকে পৌঁছে দিতে বারবার অনুরোধ জানান।
কুমিল্লার চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের ব্যবসায়ী এম. এ. টি বলেন, বিদিশার নিঃসঙ্গ জীবনে পূর্ণতা এনে দিতে তাকে বিয়ে করতে চাই। নিজের বয়স ৪৬ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি বিবাহিত। তবে স্ত্রী দীর্ঘ দিন থেকে বাতজ্বরে ভুগছে। ১২ বছর চিকিৎসা করেছি। কিন্তু সুস্থ হচ্ছে না। আমার দুই ছেলে। তারা বড়। এখন আমার আরও সন্তান চাই। বিদিশা নির্ঝঞ্ঝাট পাত্র খুঁজছেন জানালে তিনি খানিকটা হতাশ হয়ে পড়েন। বলেন, তারপরও আমার নাম্বারটা তাকে একটু দিয়ে দেবেন। আমি কথা দিচ্ছি, তাকে আমি সুখে রাখবো। তিনি অনুরোধ করে বলেন, বিয়ে হচ্ছে আত্মার ব্যাপার। বিদিশার সঙ্গে আমার আত্মার সম্পর্ক হলেই বিয়ে হবে। তিনি জানান, তার প্রথম স্ত্রীর সম্মতিতেই বিয়ে করবেন।
বিভিন্ জন থেকে আসা প্রস্তাবগুলো বিদিশাকে জানালে তিনি বলেন, আগ্রহীদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে প্রকৃত পাত্ররা যোগাযোগ করলেই খুশি হতাম। মোবাইল নম্বরের কথা বললে তিনি বলেন, প্রকৃত পাত্ররা ফেসবুকে যোগাযোগ করতে পারেন।
সূত্র : ডিনিউজ।