জি নিউজ ঃ সাভারে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ শিল্প দুর্ঘটনায় যে শত শত মানুষ শারীরিকভাবে পঙ্গু হয়ে গেছেন, তাদের অনেকেই এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রানা প্লাজার ধ্বংস¯—ূপ থেকে জীবিত অবস্থায় বের হয়ে আসতে পারলেও এরা শারীরিক প্রতিবন্ধিতার কারণে এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে। সাভারে ভবন ধসের ঘটনায় আহত অসংখ্য শ্রমিক যারা দুর্ঘটনায় প্রতিবন্ধী হয়ে গেছেন, তাদের পরিবারগুলো পড়েছে গভীর অনিশ্চয়তায়।
এদের মধ্যে গুর“তর আহতদের অনেকেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন রাজধানী ঢাকা ও সাভারের হাসপাতালগুলোতে, যাদের অনেককেই জীবন বাঁচাতে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই শ্রমিকদের অনেকেই ছিলেন তাদের পরিবারের আয়ের প্রধান উৎস আর তাই অসহনীয় শারীরিক যন্ত্রণার পাশাপাশি তারা অন্ধকার দেখছেন তাদের ভবিষ্যৎ নিয়েই।
আহতদের কেউ কেউ বলেছেন চিকিৎসা সেবা ছাড়াও ব্যক্তিগত উদ্যোগে নানা সহায়তা তারা পেয়েছেন। তবে তারা মনে করছেন এ ধরনের ব্যক্তি উদ্যোগে আসা সহায়তা বেশি দিন পাওয়া যাবেনা। তাই ভবিষ্যতে চিকিৎসার বিপুল পরিমাণ অর্থ ছাড়াও পরিবারের ভরন পোষণ হবে কীভাবে তা নিয়েও তারা উদ্বিগ্ন।
হাসপাতালে অবস্থানরত একজন শ্রমিক বলেন, “অনেক কষ্ট ভাই। হাত আর পা গেছে। কথা বলতেও সমস্যা হয়। কি করে খাব জানিনা। ডান হাত আর ডান পায়ের হাড় ভেঙ্গে গেছে। সুস্থ হয়েও তো কিছু করতে পারবো না। আমাকে তো একটা উপায় করে দিতে হবে। সেগুলো কেউ কিছু বলেনি এখনো আমাকে।”
আরেকজন শ্রমিক বলেন, “জানিনা, উপরওয়ালার ইচ্ছা কীভাবে চলবে সংসার।” অপর একজন শ্রমিক বলেন, “উঠতে বসতে এমনকী শুয়ে থাকতেও পারিনা। সংসার কীভাবে চলবে কেউ কিছু বলেনি”।
তবে পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, সরকার এবং বহু দেশি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এদের গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পুনর্বাসনের অনেক প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। সরকার এবং সংস্থাগুলো বলছে কোন শ্রমিককেই যেন অন্য কারো মুখাপেক্ষী না হতে হয় সেটি তারা নিশ্চিত করবেন প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দিয়ে।
এদিকে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে উদ্ধার তৎপরতার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটলেও স্থানীয় প্রশাসন আহত ব্যক্তিদের চূড়াš— কোন তালিকা করতে পারেনি এখনো।
যত দ্রুত সম্ভব সরকার, বিজিএমইএ এবং অন্যান্য সংগঠন যারা ওই সব আহত ব্যক্তিদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে চায় তা সুনিশ্চত করা না হলে শ্রমিকদের মাঝে হতাশা বাড়তেই থাকবে আর অসন্তোষও দানা বেধে উঠতে পারে। আহত শ্রমিকরা পুর্নবাসিত হবেন কীনা তা নিয়ে অনেকেই উদ্বিগ্ন।
জহিরুল ইসলাম- রেমন/জি নিউজ