বিএনএফ’র নাম পরিবর্তন করে বিএনএ

najmulজি নিউজ ডেস্কঃবিএনপি থেকে বহিস্কৃত ও সমালোচিত সাবেক মন্ত্রী ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা নিজের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট’র (বিএনএফ) নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল এ্যালায়েন্স (বিএনএ) ঘোষনা দিলেন । ঘোষনার আগে বলেছিলেন বাঘা বাঘা নেতারা তার এই দলে যোগ দান করবে কিন্তু সার শূন্য ফল শূন্য হিসেবে তিনি নিজে ছাড়া আর কাউকে বাগে আনতে পারলেন না। বিএনপিকে আবারো ভাঙ্গার গভীর ষড়যন্ত্র নিয়ে বর্তমান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় তিনি খুব কৌশলে রাজনীতিতে নতুন দলের আর্বিভাব ঘটালেন।

বুধবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ নাম পরিবর্তনের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “বিএনএফ এর নাম হবে এখন থেকে বাংলাদেশ ন্যাশনাল এ্যালায়েন্স-বিএনএ।”

সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুতেই পবিত্র কালামে পাক হতে তেলায়াত করেন, বিএনএফ কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও কুষ্টিয়া জেলা বিএনএফ এর রেজিষ্টার্ড আহবায়ক আবদুল্লাহ জিয়া। সংবাদ সম্মেলনে বিএনএফ ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ জিয়াকে এবার বিএনএ’র ও ভাইস চেয়ারম্যান ঘোষনা করা হয়। কোরআন তেলায়াতের পরপরই ব্যরিষ্টার হুদা তার লিখিত বক্তব্য সাংবাদিকদের সামনে পড়ে শোনান।

মানবাধিকার বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুষ্ঠু রাজনীতির ভিত্তিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি ও দলীয়করণ নির্মূল করা এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত সমাজ গঠণের লক্ষ্যে কাজ করে যাবে বিএনএ, যোগ করেন নাজমূল হুদা।

নাজমুল হুদা বলেন, দেশে একের পর এক গুম, হত্যা হচ্ছে। দেশে আইন থাকা সত্বেও দুই প্রধান রাজনৈতিক দল একে অপরকে দুষছেন। এমন পরিস্থিতিতে দেশে রাজনীতিতে পরিবর্তনের চাহিদা তৈরি হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে একটি উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। এ প্রয়াস থেকেই আজ নিজ দলের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ২০১২ সালের ৬ জুন নতুন দল প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা এসেছে। ফলে বিএনএফ প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ব্যহত হয়েছে। তাই আমরা দলের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

নাজমুল হুদা বলেন, ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি দলের প্রথম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। খুব শিগগির দলের প্রচারপত্র, গঠনতন্ত্র, নির্বাহী কমিটি, স্থায়ী কমিটি গঠন করা হবে। ওই সময় পর্যন্ত দলকে চালিয়ে নেওয়ার জন্য একটি জাতীয় নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হচ্ছে।

২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত দলের একটি এডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা আর মহাসচিব হিসাবে কমান্ডার এম. শহিদুল রহমান-পিএসসি (নেভি) দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও দলের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে আবদুল্লাহ জিয়া, অ্যাডভোকেট ফিরোজ উদ্দিন আহম্মেদ, মেজর (অব.) হাবিব, ড. জাভেদ সালাউদ্দিন এবং সামসুল আলম খান নেতৃত্ব দেবেন।

অপরদিকে দলটির যুগ্ম মহাসচিব হিসাবে মো. ফয়েজ চৌধুরী, কোষাধক্ষ মো. শামীম আহসান, দপ্তর সম্পাদক মো. আক্কাস আলী খান, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা জান্নাতুল ফেরদৌস, যুব বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান রাজু এবং ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে রাখা হয়েছে সাচী আরাফাত চৌধুরীকে।

এখন দেখার বিষয় তার এই নতুন দল আগামীতে জাতীয় রাজনীতিতে কি ভূমিকা রাখে। দেশে যখন গুম, খুন ও হত্যার রাজনীতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা ঠিক সেই মূহুর্তে জনগনের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে ঘুরানোর অপকৌশল কিনা রাজনীতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। জাতীয়তাবাদী দলের কঠিন এই মূহুর্তে সরকার যখন সকল ক্ষেত্রে ব্যর্থ তখন বিএনপিকে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করার জন্য নানা কৌশল চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন গনমাধ্যমকেও হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে সরকারি দল। সেখানে নাজমুল হুদার নতুন দল ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। তবে যাই হোক না কেন জাতীয়তাবাদী দলের শীর্ষ পর্যায় নতুন করে আবার কারা কারা মীর জাফরের তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হবে তা এখন দেখার বিষয়। বার বার বির্তকিত নাজমুল হুদা নতুন দল করে জাতীয়তাবাদী দল থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে তার চিরবিদায় ঘোষনা দিলেন। তিনি বলেছেন তাকে বিএনপি ডাকলেও তিনি আর দলে ফিরে যাবে না। প্রশ্ন হচ্ছে বিএপিতে তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার কোন সুযোগ রয়েছে কিনা একথা তিনি একবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেননি। গুডবাই নাজমুল হুদা। এগিয়ে যাবে বিএনপি ও তার দল।

 

Exit mobile version