বিএনপির শীর্ষ ১০ নেতাকে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে টানা ৩৬ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে ১৮ দলীয় জোট।

 

 

ঢাকা প্রতিনিধি,জি নিউজ;২ মার্চ ও ৬ মার্চের ঘটনায় দায়ের করা   পৃথক ৭ মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১০ নেতার জামিন নামঞ্জুর করে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এদিকে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কারাবন্দি করার প্রতিবাদে সারা দেশে মঙ্গলবার ও বুধবার টানা ৩৬ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে ১৮ দলীয় জোট। গতকাল কারাগারে পাঠানোর আদেশ ছড়িয়ে পড়লে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে বেশকিছু জেলা। বিএনপি মহাসচিবের নিজ জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য হরতাল আহ্বান করা হয়েছে। ঢাকায় কমপক্ষে সাতটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ব্যারিস্টার মওদুদ ও বরকতউল্লাহ বুলুর এলাকা নোয়াখালী এবং বেগমগঞ্জে গতকাল সন্ধ্যায় সড়ক অবরোধ করে বিএনপি নেতাকর্মীরা। আবদুল্লাহ আল নোমানের মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রামে বিশাল মিছিল বের করা হয়।
ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ শীর্ষ ৮ নেতাকে নতুনভাবে কারাগারে পাঠানোয় বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব নেতা এখন কারান্তরীণ। এর আগে গত ১১ মার্চ বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক, সহ-তথ্য সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, নির্বাহী সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, জামাল শরীফ হিরু, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, মাহবুবুল হক নান্নু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মনির হোসেনসহ ১৫১ জন নেতাকে কারাবন্দি করা হয়। এছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালাম, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুস সালাম আজাদ, সংসদ সদস্য শাম্মী আক্তারসহ বেশ কিছু নেতা পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে চিকিত্সাধীন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ছাড়া সার্বক্ষণিক রাজনীতিতে সোচ্চার নেতাদের মধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, তরিকুল ইসলাম, এম কে আনোয়ার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকাসহ কয়েকজন সিনিয়র নেতা জেলের বাইরে আছেন। যুগ্ম মহাসচিবদের মধ্যে সালাউদ্দিন আহমেদ ও মাহবুব উদ্দিন খোকন মুক্ত রয়েছেন।
এদিকে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদসহ সিনিয়র ৮ নেতা নিম্ন আদালতে হাজির হন। এছাড়া আমানউল্লাহ আমান ও রুহুল কবির রিজভীকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রথমে পল্টন থানার দুটি এবং শাহজাহানপুর থানার একটি দ্রুত বিচার আইনের মামলায় শুনানি গ্রহণ করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার মাহমুদ আদনান। এ মামলাগুলোতে অভিযোগপত্র দাখিল হওয়ায় তা আমলে নেয় এই আদালত। এরপর ম্যাজিস্ট্রেট ব্যারিস্টার সাইফুর রহমান পল্টন থানার দুটি ও আসাদুজ্জান নূর রমনা থানার দুটি মামলায় আত্মসমর্পণপূর্বক জামিনের আবেদন শুনানি গ্র্রহণ করেন। এরপর অন্য আসামিদের পক্ষে ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট আবদুর রেজ্জাক খান, জায়নুল আবেদীন, নিতাই রায়

১০ শীর্ষ নেতার মধ্যে ৮ জন হাইকোর্টের আদেশে জামিনে থেকে রোববারই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। অবশিষ্ট ২ জন অন্য মামলায় কারাগারে থেকেই এসব মামলায় জামিন চেয়েছিলেন।

কারাগারে পাঠানো বিএনপি নেতারা হলেন- ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এমপি, মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান ও বরকত উল্লাহ বুলু, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী এমপি ও যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

আর কারাগারে থেকে আত্মসমর্পণ করেছিলেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান ও রুহুল কবির রিজভী।

রোববার শুনানি শেষে ঢাকার পৃথক তিন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার মাহমুদ আদনান, ব্যারিস্টার সাইফুর রহমান ও আসাদুজ্জামান নূর বিকেলে এ আদেশ দেন। এছাড়া চার্জশিট হওয়া দু’টি মামলা আমলে নেন আদালত। রাজনীতিবিদকে এ আইনে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠাল সরকার। এতে আবারও প্রমাণিত হলো নিম্ন আদালতের স্বাধীনতা নেই। সরকারের নির্দেশে এখানে সবকিছু চলে।

 

 

 

 

 

 

Exit mobile version