অনলাইন ডেস্ক, জি নিউজঃ- বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতার এবারের আয়োজক ইন্দোনেশিয়া৷ তা নিয়ে সে দেশ আনন্দে মাতোয়ারা হবে কি, প্রতিবাদের মুখে আয়োজনটাই পড়েছে অনিশ্চয়তায়৷ অন্যদিকে গণমাধ্যমের প্রচারের অনেকটা বাইরে হতে চলেছে ‘ওয়ার্ল্ড মুসলিমা’-র ফাইনাল৷ ওয়ার্ল্ড মুসলিমা হলো মুসলিম পরিবারের সুন্দরীদের নিয়ে নতুন ধরনের এক প্রতিযোগিতা৷ এর শুরু হয়েছিল দু বছর আগে৷ তবে ইন্দোনেশিয়ার এ আয়োজন তৃতীয় বছরে পা রেখেছে অন্যরকম আকর্ষণ নিয়ে৷ এবার আর শুধু ইন্দোনেশিয়ার প্রতিযোগী নিয়ে নয়, বিদেশিনীও থাকছেন মঙ্গলবারের ফাইনালে৷ নাইজেরিয়ার দু জন, আর মালয়েশিয়া, ব্রুনাই, ইরান, যুক্তরাষ্ট্র, এমনকি বাংলাদেশেরও একজন করে প্রতিযোগী আছেন সেখানে৷ বাংলাদেশের হয়ে ‘মিস মুসলিম ওয়ার্ল্ড’ খেতাব জিততে জাকার্তায় গিয়েছেন ২১ বছর বয়সি তরুণী নাজনিন সুলতানা লিজা৷ চট্ট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী লিজা জানিয়েছেন, তিনি ‘চেঞ্জিং বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’-নামের একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করেন৷ সেখানে তিনি সমাজসেবা মূলক কাজ করেন৷ ‘ওয়ার্ল্ড মুসলিমা’-য় অংশ নিতে গেলে এমন অভিজ্ঞতা থাকাও জরুরি৷ প্রতিযোগিতার প্রতিষ্ঠাতা একা শান্তি জানিয়েছেন, এখানে অংশ নিতে হলে প্রতিযোগীকে হিজাব পরতে হবে আর স্মার্ট, ধার্মিক এবং স্টাইলিশ হতে হবে আসন্ন ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ কিংবা সুন্দরী-সেরা নির্বাচনের আরেক প্রতিযোগিতা ‘মিস ইউনিভার্স’-এর চেয়ে ‘ওয়ার্ল্ড মুসলিমা’-র নিয়মকানুন একেবারে আলাদা৷ সেখানে দেহপ্রদর্শনীকে অনেকটা মুখ্য করে তোলার কোনো সুযোগ নেই৷ প্রতিযোগিতার প্রতিষ্ঠাতা একা শান্তি জানিয়েছেন, এখানে অংশ নিতে হলে প্রতিযোগীকে হিজাব পরতে হবে আর স্মার্ট, ধার্মিক এবং স্টাইলিশ হতে হবে৷ এসব গুণের প্রমাণ হিসেবে নিজের সম্পর্কে একটা রচনা লিখে পাঠিয়েছিলেন বিশ্বের নানা দেশের মুসলিম মেয়েরা৷ সঙ্গে ছিল একটা ভিডিও, যাতে প্রতিযোগীরা কোরান তেলাওয়াতের দক্ষতা দেখিয়েছিলেন৷ সেসব দেখেই ১০০ জন আবেদনকারীকে সেমি ফাইনালের জন্য বেছে নেন বিচারকরা৷ ফাইনালে উঠেছেন ২০ জন৷ বিজয়িনীর নাম ঘোষণা করা হবে বুধবার, জাকার্তায় অনুষ্ঠেয় গ্র্যান্ড ফাইনাল শেষে৷ এবারের ‘ওয়ার্ল্ড মুসলিমা’ পুরস্কার হিসেবে পাবেন ২ কোটি ৫০ লক্ষ ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়া, অর্থাৎ মাত্র ২,২০০ ডলার৷ এর বাইরে বিশেষ আকর্ষণ, সৌদি আরবে হজ করা এবং তুরস্ক ও ভারতে আনন্দভ্রমণের সুযোগ৷ প্রতিযোগীদের কোরান তেলাওয়াতের দক্ষতা দেখাতে হয়েছে ভিডিওর মাধ্যমে পুরস্কারে টাকার অঙ্ক বেশি না হলেও নাইজেরিয়ার প্রতিযোগিনী আয়েশা আদেরোঙ্কে আদেসিনা খুব খুশি৷ ভোর তিনটায় উঠে ফজরের নামাজ পড়ে, দুপুরে এতিমদের সঙ্গে আহার, তারপর ইসলাম নির্দেশিত নীতি অনুযায়ী আর্থিক লেন-দেন এবং পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরান পাঠ বিষয়ে ক্লাস করা – এত ধকলের পরও হাসি মুখেই তিনি বললেন, ‘‘এখানে অংশ নিতে পেরে আমি খুব খুশি৷ এটা মিস ওয়ার্ল্ড-এর চেয়ে আলাদা, কারণ, ওখানে বাইরের সৌন্দর্যটা বেশি প্রাধান্য পায় আর এখানে ভেতরের সৌন্দর্যটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷” শেষে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা বলেছেন লাগোস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী আয়েশা৷ তাঁর মতে, ‘‘কোরান আমাদের বলে, ওরা যা করছে করতে দাও, আমরা আমাদের কাজ করি৷ আমি শুধু শরীরের যেসব অংশ (ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী) দেখানো বারণ, সেইগুলোর যথেচ্ছ প্রদর্শনের বিপক্ষে৷” ইন্দোনেশিয়ার কট্টর ইসলামপন্থিরা অবশ্য ‘মিস ইউনিভার্স’ প্রতিযোগিতার ব্যাপারে এতটা সহনশীল নন৷ তাঁদের দাবির মুখে বিকিনিপর্ব বাদ দিয়েই প্রতিযোগিতা আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিল আয়োজকরা৷ তাতেও অনিশ্চয়তার মেঘ কাটেনি৷ আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর জাকার্তাতেই হওয়ার কথা প্রতিযোগিতার ফাইনাল৷ কিন্তু সরকার বলেছে, সেখান থেকে ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতা বালি-তে সরিয়ে নিতে৷, এসিবি/এসবি (ডিপিএ, এএফপি) খবর DW DE এর