বুরুন্ডিতে গুম হওয়ার আতঙ্কে মানুষ

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ- বুরুন্ডিতে নির্যাতন ও খুন অনেকটা নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় প্রতিদিন মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছে রাস্তায় কিংবা নদীতে।
কেউ জানে না কারা, কেন এই খুনগুলো করছে, কিন্তু তাদের সন্দেহ নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে ঘিরে।
এক ধরণের ভয় চেপে ধরে আছে সেখানকার মানুষকে। যখন-তখন গুম হয়ে যাচ্ছে মানুষ।
স্বাধীন গণমাধ্যম এখানে নীরব। সামাজিক মাধ্যম আর টেক্সট মেজেসের মাধ্যমে এখানে খবর ছড়ায়।
এসওএস মিডিয়া হল এমন একটি ফেসবুক গ্রুপ, এদের ফরাসী ভাষার ওয়েবসাইটে গেলে দেখা যায় হত্যাকাণ্ডের শিকার অনেকের ব্যাপারে তথ্য ও ছবি শেয়ার করেছে।
শুধু ওয়েবসাইট ঘাঁটলেই দেখা যায়, কত বিশাল সংখ্যক মানুষ খুন হয়েছে।
এসওএস মিডিয়ার সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তি জানান, “অনেক মানুষ খুন হয়েছেন। আপনি যদি আপনার প্রিয় মানুষের মৃতদেহ খুঁজে পান, তাহলে আপনি ভাগ্যবান। সম্প্রতি একজনকে হত্যা করে হৃৎপিণ্ড বের করে নেয়া হয়েছে”।
যার হৃৎপিণ্ড বের করে নেয়া হয়েছে বলে জানা যায় তার নাম এনডিমিরা এলওয়া। তার কবরে ফুল দিচ্ছিলেন তাঁর একজন ঘনিষ্ঠ আত্মীয়।
,,
বুরুন্ডিতে গত এপ্রিল মাস থেকে বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে চলছে নির্যাতন ও খুনের ঘটনা।
তিনি জানান, “এলওয়ার বয়স ছিল ৫৩। লাঠি নিয়ে হাঁটতেন। একদিন বাড়ী ফেরার সময় তিনি একদল পুলিশকে দেখেন কাউকে খুন করার হুমকি দিচ্ছে। তিনি বাধা দিলে পুলিশ তাঁর ওপর চড়াও হয়। এরপর পুলিশ তাকে প্রথমে লাঠি দিয়ে পেটায়, পরে গুলি করে মারে। তাঁর মৃতদেহ পরিষ্কার করার সময় দেখি তাঁর হৃৎপিণ্ড বের করে নেয়া হয়েছে”।
কিন্তু এমন ঘটনা কেন ঘটলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা রাজনীতির কারণে ঘটেনি। তিনি রাজনীতি করতেন না, সাম্প্রতিক কোন বিক্ষোভে অংশ নেননি।
এটা গোষ্ঠীগত কারণেও ঘটেনি। যেমনটা ঘটেছিল প্রতিবেশী রোয়ান্ডায় ১৯৯০’এর দশকে টুটসি ও হুতুদের মধ্যে। এটা ঘটেছে সরকারের ভয় দেখিয়ে বশে আনার চেষ্টার কারণে।
রাস্তার বিক্ষোভ শুরু হয় গত এপ্রিল মাসে, যখন প্রেসিডেন্ট পিয়ের এনকুরুনজিজা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে নির্বাচনে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
তখন একটি সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়। কঠোরভাবে দমন করা হয় সব রকমের বিক্ষোভ।
পুলিশ এবং রাষ্ট্রীয় মিলিশিয়াকে বেশীরভাগ হত্যাকাণ্ডের জন্যে অভিযুক্ত করা হয়। আছে অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগও।
বুরুন্ডিতে সংঘাতের ইতিহাস রয়েছে। সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডগুলো আতঙ্ক ছড়ালেও তা অবশ্য এখনো গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বে রূপ নেয়নি। তবে আশঙ্কা রয়েছে, এসব চলতে থাকলে পুরনো এবং গভীর বিভক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে।

Exit mobile version