জি নিউজ : দফায় দফায় সংঘর্ষের পর রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে পুলিশ। এতে শিক্ষক শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাসহ ৭০ জন আহত হয়েছেন। ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার থেকে ৭ মে পর্যন্ত টানা ধর্মঘট ডেকেছেন আন্দোলনকারীরা। এদিকে এ ঘটনার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। শনিবার বিকেল তিনটায় উপাচার্য আবদুল জলিলের বাসভবনে সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে উপাচার্য জানিয়েছেন। একই সঙ্গে চার শিক্ষক ও দুকর্মকর্তার সাময়িক বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করা হয়েছে বলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান।
পুলিশি হামলার প্রতিবাদে শনিবার থেকে আগামী ৭ মে পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী গণমঞ্চ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উপাচার্যের বাসভবনে সিন্ডিকেট সভা ডাকা হয়। বিস্ফোরণের পর ক্যাম্পাস থেকে ককটেলসহ মার্কেটিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাজিব হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ১০ জানুয়ারি ছাত্রলীগের ব্যানারে শিক্ষকদের ওপর অ্যাসিড হামলা হয়। ওই হামলার ঘটনায় করা মামলার আসামি রাজিব।
বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত তিন দফায় আন্দোলনকারীদের ধাওয়া করে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয় পুলিশ। এরপর ক্যাম্পাসের বাইরে রংপুর ক্যাডেট কলেজের সামনে থেকে পার্কের মোড় পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। দুপুর দেড়টার দিকে সেখান থেকেও আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এ সময়ও আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটা করা হয়। একই সঙ্গে ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনকারী চার শিক্ষক ও দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে দুর্নীতিবিরোধী গণমঞ্চের উদ্যোক্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সব ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। এরপর কয়েক শ’ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করেন। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি চলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কে বা কারা ক্যাম্পাসে তিনটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনার পর উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থানরত আন্দোলনকারীদের ওপর কোনো উসকানি ছাড়াই হামলা চালায় পুলিশ। লাঠিপেটা করে, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে তারা।
এ সময় পাঁচজন শিক্ষক-কর্মকর্তাসহ ৭০ জন আন্দোলনকারী আহত হন। তাদের মধ্যে ৩২ জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।