গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র শরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু –
জি নিউজ বিডি ডট নেট
জাকারিয়া , রংপুর প্রতিনিধি, জি নিউজ :রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় উন্নয়ন কাজ সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরসহ এলাকাবাসীকে বুঝিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) মেয়র আলহাজ সরফুদ্দিন আহম্মেদ ঝন্টু। সেই সাথে দুর্নীতিপূর্ণ উন্নয়ন কাজে বিগত মেয়রের আমলের দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন। তবে এসব দুর্নীতির বিষয়ে তিনি দুদক চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেছেন বলে জানান। অনেক কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত, বেতন বন্ধসহ তদন্ত করা হচ্ছে বলে রসিক মেয়র সাংবাদিকদের অবগত করেন। সম্মেলনে মেয়রের ১ মাস ১৪ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও পদমর্যাদা সরকারের পক্ষ থেকে প্রদান না করায় কাউন্সিলরবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি গতকাল বুধবার দুপুরে রংপুর সিটি করপোরেশনে বিগত মেয়রের আমলের বিভিন্ন কাজের দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে রসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন খান, নির্বাহী প্রকৌশলী এমদাদ হোসেনসহ কাউন্সিলরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মেয়র বলেন, বিগত সময়ে শ্যামাসুন্দরী ক্যানেল সংস্কার কাজ, শহরের সড়ক বাতি স্থাপন প্রকল্পে দুর্নীতি করা হয়েছে। ২ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে শহরের প্রধান সড়কে সড়ক বাতি লাগিয়েছেন বিগত মেয়র একেএম আব্দুর রউফ মানিক। তিনি নগরবাসীকে সেসময় জানিয়েছিলেন প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কারণে তাড়াহুড়ো করে বাতি লাগানো হচ্ছে। নচেত টাকা ফেরত চলে যাবে। বর্তমান মেয়র বললেন, তিনি টাকাটি বিএমডবিস্নউ এর কাছ থেকে ধার নিয়ে সড়ক বাতি লাগিয়েছেন। সেই সাথে সে সময় সড়ক বিভাগকে সড়কের উন্নয়নের সময় বাতির খুঁটি অপসারণ করা হবে বলে চিঠি দেয়া হয়েছিল। ফলে বর্তমানে চার লেন সড়কের কাজ শুরু হওয়ায় সড়ক বিভাগ খুঁটি অপসারণের তাগিদ দিচ্ছে। বর্তমানে আরও ৩ কোটি টাকার প্রয়োজন। বিগত সময়ের চলমান কাজগুলো সিডিউল অনুযায়ী হচ্ছে না। অথচ ঠিকাদাররা এলজিইডি থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন। তিনি দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে বলেন, আমি কাউন্সিলরদের কাজ বুঝে নিতে বলেছি। কাজে অনিয়ম হলে কাজ বন্ধ করে দেয়া হবে। এরপরও এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী যদি ঠিকাদারদের টাকা বুঝে দেন এবং কাজে অনিয়ম থাকায় কোন ক্ষতি হয় এর দায়দায়িত্ব তার উপর বর্তাবে। শ্যামাসুন্দরীর মডেল অনুযায়ী কোন কাজ হয়নি। এরপরও ১২ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। সিবিওর মিটিংয়ে আপ্যায়নের জন্য ১ বছরে বিগত মেয়রের সচিব ১ম পর্যায়ে ২৯ লাখ ১৬ হাজার টাকা ও ২য় পর্যায়ে ৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। ক্যানেলের সংস্কার কাজের পিলারের রডে ১০ মি.মি. দেয়ার কথা থাকলেও দেয়া হয়েছে ৮ মি.মি.। প্লেটগুলোর কোন টেম্পার নেই। পাইলিং করা হয়েছে সেল মেশিন দিয়ে। প্লেট ৭টি দেয়ার কথা থাকলেও দেয়া হয় ৪টি। এসব অনিয়মের সত্যতা স্বীকার করে রসিক নির্বাহী প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন সে সময়ে তার অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন। বিভিন্ন ভয়ভীতি ও ঠিকাদারদের বিভিন্ন চাপে মাঠ জরিপ করতেও তাকে বাধা দেয়া হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। সিটি মেয়র বলেন, রংপুরের মাটিতে দুর্নীতির স্থান হবে না। আমার সময়ের কাজে কোন অনিয়ম হলে আমাকে জানাবেন। এসব বিষয়ের উপযুক্ত কাগজ তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
জাকারিয়া , রংপুর প্রতিনিধি, জি নিউজ-২৮-০৩-২০১৩