রাজনগরে বিতর্কিত নেতাকে আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত করায় নেতা-কর্মীদের মনে ক্ষোভ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি, জি নিউজ:রাজনগর উপজেলার ১নং ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি আমলের সেই বিতর্কিত বিএনপি নেতা আব্দুল কাহির চৌধুরী বাবু ওরফে বাবু মেম্বার। সুযোগ খোজে কাপড়ের মত দল-বদলকারী এ নেতা সরকার বদলের ধারাবাহিকতায় আওয়ামীলীগ থেকে বিএনপি,আবার বিএনপি থেকে আওয়ামীলীগে যোগদান করলেও বড়-বড় পদ থেকে যায় রিতিমত তার পকেটে।“নির্বাচনে টাকা উড়ে” এ প্রবাধ বাক্যটিকে সামনে রেখে প্রচুর টাকা খরচ করে চালাক-চতুর এ বিতর্কিত নেতা শুক্রবার ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দলের ত্যাগি ও প্রবীন নেতাকর্মীদের তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।তাও আবার প্রতিদন্ধী প্রবীন একজন আওয়ামীলীগ নেতাকে হারিয়ে দ্ধিগুন ভোটে জয়লাভ করে।জয়লাভ করে কথিত নেতা ভেজায় খুশি হলেও নিরাশ হয়েছেন ইউনিয়নের তৃনমুল নেতাকর্মীরা।তাদের মতে সুযোগ সন্ধানী এ নেতা দলের সুদিনে পাশে থাকলেও দুর্দিনে কতটা থাকবেন এটা নিয়েই তাদের যত ভয়-সংশয়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কয়েকজন প্রবীন ও মামলা-হামলার স্বীকার ত্যাগী নেতা কর্মীদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর চালাক-চতুর বাবু মেম্বার আওয়ামীলীগের হয়ে কাজ করার সুবাধে ঠিকাদারী করে কৌশলে টেন্ডারের কাজ বাগিয়ে নিয়ে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেন।সরকার বদলের সাথে-সাথে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে প্রভাবশালী অর্থমন্ত্রী মরহুম সাইফুর রহমানের পুত্র নাসের রহমান এমপি,র হাত ধরে বিএনপি,তে যোগদান করে বিভিন্ন সভা সমাবেশে আওয়ামীলীগের সমালোচনা করেন।ওয়ান-ইলেভেনের সময় বিভিন্ন মামলায় নাসের রহমান জেলহাজতে যাওয়ার পর সুযোগ-সন্ধানী এ নেতা বিএনপি,র ভরাডুবি,র ইঙ্গিত পেয়ে পুণরায় আওয়ামীলীগের নেতাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা সহ কান্নাকাঠি করে নাসের রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কুৎসা রটনা করে বলেন,তাকে মন্ত্রী পুত্র নাসের রহমান ক্রসফায়ারের হুমকি দেখিয়ে বিএনপি,তে নেন।বিভিন্ন কলা-কৌশল করে তখন তিনি আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের মন জয় করে পুণরায় আওয়ামীলীগে যোগদান করেন।২০১২ সালে ফতেপুর ইউনিয়নের শেখ রাসেল সৃতি সংসদ কতৃক জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে আয়োজিত একটি ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের সাংকৃতিক অনুষ্টানে অনুষ্টান শুরুর আগেই অশ্লীলতার অভিযোগ এনে বিরোধীদলের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের সাথে একান্ততা প্রকাশ করে অনুষ্টান বিরোধী মিছিলের প্রথম সারিতে থেকে অনুষ্টানস্থলে হামলা-ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ করে অনুষ্টান পন্ড করেন।এ নিয়ে মামলা মোকদ্দমা পর্যন্ত হয়েছে। তার আপন ছোট ভাই স্থানীয় যুবলীগ নেতা আব্দুশ শহীদ চৌধুরী আমিন,বাবু মেম্বারের দল-বদলের বিরুদ্ধে কথা বলার কারনে স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে আমিন মেম্বার প্রার্থী হলে বাবু মেম্বার ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিদন্ধি অন্য একজন প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে মাঠে কাজ করেন।বিগতদিনে বিরোধী দলের সাথে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন সংঘর্ষ চলাকালে তিনি বাড়ীতে বসে নিরব দর্শকের ভুমিকা অবলম্বন করেন।২০১২সালে মোকামবাজারে ছাত্রলীগের একটি কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ কর্মীদের উপর স্থানীয় বিএনপি,র হামলা-ভাংচুরের ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সকল নেতা-কর্মী একত্রিত হয়ে পালটা হামলা সহ মামলা-মোকদ্দমায় জড়ালেও বাবু মেম্বার থাকেন পর্দার আড়ালে।সব মিলিয়ে সদ্য নির্বাচিত ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি বাবু মেম্বারের বিভিন্ন কার্যকলাপে এ ইউনিয়নের তৃনমুল আওয়ামীলীগ সমর্থকরা দলের ভবিসৎ নিয়ে শংকিত।তারা বিতর্কিত এ নেতাকে দলের সুদিনে নেতৃত্ব দিয়ে দুর্দিনের হিসাব-নিকাশ মিলাতে পারছেননা। তাই তারা বিতর্কিত নেতাকে দলের সমর্থক রেখে দুর্দিনে যাকে কাছে পাওয়া যায়,তাকে ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব প্রদানের দাবী জানান।একটি সুত্র জানায়,বিতর্কিত নেতাকে নেতৃত্ব থেকে সরাতে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কয়েকজন ত্যাগি নেতা একটি লিখিত আবেদন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বরাবরে দাখিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।দরখাস্তের অনুলিপি জেলা সহ হাইকমান্ডের নেতৃবৃন্ধের কাছে দেয়া হবে বলে সুত্র জানায়।

Exit mobile version